কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উপস্থিতি শতভাগ নিশ্চিত করতে বায়োমেট্রিক হাজিরা পদ্ধতি চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ।
আজ মঙ্গলবার (৫ মার্চ) স্বল্প পরিসরে এ পদ্ধতি চালু করা হবে। ইতোমধ্যে হাসপাতালে তিনটি মেশিন স্থাপন করা হয়েছে।
সর্বমোট ২০টি মেশিন স্থাপন করা হবে বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. আখতারুল ইসলাম। তিনি বলেন, সেবার মান ও উপস্থিতি নিশ্চিত করতে এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।
চমেক হাসপাতালে দায়িত্বরত কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছেন এক হাজার ৭৮১ জন। এরমধ্যে প্রথম শ্রেণি তিনশ, দ্বিতীয় শ্রেণি এক হাজার ৩৩৯, তৃতীয় শ্রেণি ৮০ ও চতুর্থ শ্রেণির ৩৬২ জন কর্মচারী কর্মরত আছেন। কর্মস্থলে প্রতিদিন আট ঘণ্টা দায়িত্ব পালন করতে হয় তাদের।
সম্প্রতি দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) প্রতিনিধি দল দেশের বিভিন্ন সরকারি চিকিৎসা কেন্দ্র পরির্দশনে গিয়ে অনেক চিকিৎসকসহ সংশ্লিষ্টদের কর্মস্থলে অনুপস্থিত পায়। দুদক জানায়, চিকিৎসা কেন্দ্রের কিছু চিকিৎসক ইচ্ছেমতো কর্মস্থলে আসা-যাওয়া করেন। অনেকে নির্ধারিত সময় দায়িত্বে থাকেন না।
এরপর কর্মস্থলে উপস্থিতি নিশ্চিত করতে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে সারাদেশের সরকারি চিকিৎসা কেন্দ্রেগুলোতে চিঠি পাঠানো হয়। যুগ্ম-সচিব একেএম ফজলুল হক স্বাক্ষরিত চিঠিতে একাধিক নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এর মধ্যে যে সকল প্রতিষ্ঠানে এখনও বায়োমেট্রিক হাজিরা পদ্ধতি চালু করা হয়নি, সে সকল প্রতিষ্ঠান প্রধানকে জরুরি ভিত্তিতে এ পদ্ধতি চালুর মাধ্যমে শতভাগ উপস্থিতি নিশ্চিত করতে বলা হয়।
চমেক হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. আখতারুল ইসলাম বলেন, মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার পর বায়োমেট্রিক পদ্ধতি চালু করা হচ্ছে। এর মাধ্যমে উপস্থিতি ও কর্মস্থল ত্যাগের সময় রেকর্ড করা হবে।’
তিনি আরো বলেন, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ঠিকমতো দায়িত্ব পালন করছেন কিনা সেটি মনিটরিং করা হবে। পাশাপাশি প্রতিমাসে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন মন্ত্রণালয়ে পাঠাতে বলা হয়েছে।’
এখনও বৃহত্তর চট্টগ্রামবাসীর চিকিৎসার শেষ আশ্রয়স্থল এ হাসপাতাল। প্রতিদিন গড়ে আড়াই থেকে তিন হাজার রোগী এ হাসপাতালে ভর্তি থাকেন। জরুরি চিকিৎসা নিতে আসেন আট থেকে নয়শ রোগী। বহির্বিভাগে চিকিৎসা নেন দেড় থেকে দুই হাজার রোগী।
কিন্তু পাঁচশ শয্যার জনবল দিয়ে চলছে এক হাজার ৩১৩ শয্যার এ হাসপাতাল। তাই জনবল সংকটে সেবা দিতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন কর্মরতরা। এর মধ্যেও কিছু অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী ঠিকমতো দায়িত্ব পালন করছেন না। ফলে অন্যদের ওপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি হচ্ছে।
উপ-পরিচালক ডা. আখতারুল ইসলাম বলেন, এখন থেকে কেউ যদি ঠিকমতো দায়িত্ব পালন না করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’