রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আরসা’বাহিনীর চাঁদা উত্তোলন

কায়সার হামিদ মানিক,উখিয়া।
কক্সবাজারের উখিয়ার বিভিন্ন ক্যাম্প থেকে রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা) কর্তৃক প্রতিনিয়ত চাঁদা উত্তোলন করা হচ্ছে। রোহিঙ্গাদের সন্ত্রাসী সংগঠনের ব্যানারে সংঘবদ্ধ একটি চক্র ক্যাম্পের অভ্যান্তরে অবস্থিত দোকান-পাট, তরি-তরকারি বাজার থেকে এই টাকা উত্তোলন শুরু করছে। যা নিয়ে স্থানীয় লোকজনের মাঝে দেখা দিয়েছে ক্ষোভ ও উত্তেজনা। এ ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা উখিয়া থানায় বারবার অভিযোগ করে কোন কাজে আসছেনা বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
স্থানীয় লোকজনের সাথে কথা বলে জানা গেছে, গত ৩ বছর পূর্বে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মানবিকতায় রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়া হয়। কিন্তু রোহিঙ্গারা সেই মানবতার সুযোগকে দুর্বলতার হিসেবে ব্যবহার করে স্থানীয় লোকজনের উপর ঝাপিয়ে পড়ছে। বিশেষ করে বালুখালী ১১ ও ১২ নাম্বার ক্যাম্পে স্থানীয়দের সামাজিক বনায়নের জমিতে দোকান-পাট নির্মাণ পূর্বক ভাড়া টাকা উত্তোলন করে সংসার চালিয়ে আসছিল ৪০জন স্থানীয় লোক। কিন্তু গত কয়েকদিন ধরে ‘আরসা’ গ্রুপের সদস্যরা উক্ত দোকান গুলো থেকে হুমকি-ধমকি প্রদর্শন করে ১০০টি দোকান হতে লাখ টাকা চাঁদা আদায় করেছে। এমনকি প্রকাশ্যে হুমকি দিয়ে চাঁদা উত্তোলন করলেও ভয়ে তাদের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে সাহস পাননি। এরপরেও উল্টো তারা ব্যবসায়ীদের হুমকি দিয়ে বলেন, এখন থেকে এসব দোকানের মাসিক ভাড়া নাকি তারাই উত্তোলন করবে। আর কাউকে টাকা দিলে রাতের অন্ধকারে ধরে লাশ গুম করার কথা বলে চলে যান।
বিশ্বস্ত সুত্রে আরো জানা গেছে, বালুখালী ১১ ও ১২ নাম্বার ক্যাম্পের ‘আরসা’র শীর্ষ নেতা মৌলভী আব্দুর রহমান (৫৫), একই ক্যাম্পের জুস মোহাম্মদ (৪০), জাকের হোসেন (৪২), মোহাম্মদ ইউনুছ (৩৫), মোঃ আলম (৩৭)নুর কামালসহ ৩০/৩৫ জন সংঘবদ্ধ গ্রুপ প্রতি নিয়ত ক্যাম্পে দোকান পাট হতে চাঁদাবাজী করে যাচ্ছে।
বালুখালী এলাকার স্থানীয় নুরুল হক, হাজী মোহাম্মদ মিয়া, মোঃ জকরিয়া, আবু তাহের, মোঃ রফিক ও মোঃ আলমগীর বলেন, সম্প্রতি বালুখালী ১১ ও ১২ নাম্বার ক্যাম্পে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। তারা আরো জানায়, ক্যাম্পের অভ্যান্তরে অবস্থিত স্থানীয় লোকজনের যে সমস্ত বাণিজ্যিক প্রতিষ্টান দোকন-পাট রয়েছে এর থেকে ভাড়ার টাকা উত্তোলন করতে বাধা প্রধান করছে। এমনকি সোমবার প্রায় শতাধিক দোকান থেকে লক্ষাধিক টাকা উত্তোলন করেছে আরসা’র সদস্যরা। এ নিয়ে আমরা বাদী হয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়সহ সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি।
শুধু তাই নয়, দিন দিন তারা শক্তিশালী হয়ে উঠার কারনে সাধারণ রোহিঙ্গারা তাদের হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছে। তাদের এসব অপকর্মে অতিষ্ঠ হয়ে স্থানীয় ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামবাসি উখিয়া থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছে।
বালুখালী ১১নং ক্যাম্পের এপিবিএন’র ইন্সপেক্টর জাকের হোসেন বলেন ক্যাম্প থেকে আরসা’র নামে টোকেন বা রিসিভ দিয়ে টাকা উত্তোলনের বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবগত নয়। তবে এখন থেকে এ বিষয়ে খবরা-খবর নেওয়া হবে।
এ ব্যাপারে উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ আহমেদ সঞ্জুর মোরশেদ বলেন, পূ্র্বে কোন অভিযোগ দায়ের করে থাকলে অবশ্যই তা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে নতুন কোন অভিযোগ আমার হাতে আসে নাই।