অধিগ্রহণের পর ক্ষতিপূরণ পেতে ভূমি মালিকের ভোগান্তির কথা সবার জানা। দীর্ঘদিন ধরে চলা এই ভোগান্তি কমাতে উদ্যোগ নিয়েছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন।
এর ফলে ক্ষতিপূরণ পেতে ভূমি মালিকদের আর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে আসতে হবে না। প্রকল্প এলাকায় স্থাপিত বিশেষ ক্যাম্পেই তারা সবধরনের সেবা পাবেন।
ইতিমধ্যে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক উন্নয়ন অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) অধীনে বাস্তবায়নাধীন মিরসরাই ইকোনমিক জোনের জন্য অধিগ্রহণ করা ভূমির ক্ষতিপূরণ দিতে মিরসরাইয়ে একটি বিশেষ ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছে।
এছাড়া ফটিকছড়িতে সড়ক ও জনপথের (সওজ) অধীনে বাস্তবায়িত হতে যাওয়া সড়ক প্রশস্তকরণ প্রকল্পের জন্য অধিগ্রহণ করা ভূমির ক্ষতিপূরণ দিতে সেখানেও একটি বিশেষ ক্যাম্প স্থাপনের প্রক্রিয়া চলছে।
জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকায় সরকারি উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য অধিগ্রহণ করা ভূমির ক্ষতিপূরণ পেতে এতোদিন ভূমি মালিকদের নগরের কোতোয়ালী এলাকায় অবস্থিত জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে আসতে হতো।
আবেদনে ত্রুটি, ভূমি নিয়ে মামলাসহ নানা কারণে একজন ভূমি মালিকের একাধিকবার জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে আসার প্রয়োজন পড়তো। এতে টাকার অপচয়ের সঙ্গে সময় যেমন নষ্ট হতো- তেমনি ভূমি মালিকের ভোগান্তির সুযোগ নিয়ে দালালরাও সক্রিয় থাকতো।
ভূমি মালিকের ভোগান্তি কমাতে এবং জেলা প্রশাসক কার্যালয় ঘিরে গড়ে উঠা দালালচক্র ভেঙে দিতে এখন থেকে প্রকল্প এলাকায় বিশেষ ক্যাম্প স্থাপন করা হবে। ভূমি মালিকের ঘরের কাছেই স্থাপন করা এসব ক্যাম্পে ক্ষতিপূরণের আবেদন গ্রহণ ও যাচাই শেষে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।
জেলা প্রশাসনের ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা মো. কায়সার খসরু জানান, বিশেষ ক্যাম্পে আমরা ভূমি মালিকদের আবেদন গ্রহণ করছি। যাচাই-বাছাই শেষে সব কাগজ ঠিক থাকলে ৭-১০ দিনের মধ্যে ক্ষতিপূরণের চেক হস্তান্তর করছি।
তিনি বলেন, মিরসরাইয়ে স্থাপিত বিশেষ ক্যাম্পে দক্ষিণ মগাদিয়া মৌজা থেকে অধিগ্রহণ করা ৬৩৬ একর ভূমির ক্ষতিপূরণ হিসেবে প্রায় ৪৭৯ কোটি টাকা দেওয়া হবে। ইতিমধ্যে ২ দফায় প্রায় ৭৫ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ হিসেবে ভূমি মালিকদের দেওয়া হয়েছে।
‘এখন ৩য় দফায় ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত আমরা আবেদন জমা নিচ্ছি। যাচাই-বাছাই শেষে পরের সপ্তাহে আমরা এসব আবেদনের ক্ষতিপূরণ ভূমি মালিকদের হাতে তুলে দেবো। ’
চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এলএ) মো. আবু হাসান সিদ্দিক জানান, ভূমি অধিগ্রহণ শাখা নিয়ে মানুষের মধ্যে একটি নেতিবাচক ধারণা আছে। আমরা এটি পরিবর্তন করতে চাই।
তিনি বলেন, ভূমি মালিকদের আমরা বিশ্বাস করাতে চাই- কোনো দালাল কিংবা সহায়তাকারীর দরকার নেই। ক্ষতিপূরণের টাকা নিজে নিজে আবেদন করেই পাওয়া যায়। ভীতি দূর করতে তাদের ঘরের কাছেই ক্যাম্প স্থাপন করে সেবা দিচ্ছি আমরা।
‘আগে একজন ভূমি মালিককে আবেদন জমা দিতে শহরে আসতে হতো। আবেদনের কাগজপত্রে ত্রুটি থাকলে একাধিকবার আসার প্রয়োজন পড়তো। এতে সময় ও টাকা নষ্ট হতো। এর সুযোগ নিতো কিছু ব্যক্তি। এখন আর তা হবে না। ’