একাত্তরের গণহত্যাকারীদের বিচারের কারণে শেখ হাসিনা চিরস্মরণীয়

জন্মদিনে ‘যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এবং মৌলবাদ-সা¤প্রদায়িকতা নির্মূলে সরকারের সাফল্য ও চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক ওয়েবিনার

যুদ্ধাপরাধ বিরোধী আন্দোলনের পুরোগামী নেতা লেখক-সাংবাদিক ও চলচ্চিত্র নির্মাতা শাহরিয়ার কবির বলেছেন, জননেত্রী শেখ হাসিনার অজস্র সাফল্যের মধ্যে শুধুমাত্র একাত্তরের গণহত্যাকারীদের বিচারের কারণে সারাবিশে^ তিনি চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কার্য শুরু করলেও ঘাতকের হাতে নির্মমভাবে নিহত হওয়ার কারণে সম্পন্ন করতে পারেন নি। তারই সুযোগ্য কন্যা ৯৬ সালে প্রথমবার ক্ষমতায় এসে জাতির পিতার হত্যাকারীদের বিচার শুরু করেছিলেন। পরবর্তীতে ক্ষমতায় এসে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কাজ শুরু করে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাব্যুনাল করেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে এবারে জন্মদিনে প্রত্যাশা করছি অবিলম্বে সংগঠন হিসেবে জামাতের বিচার কার্যক্রমে শুরু করুন। এতে অন্তত স্বজন হারা ও শহীদ পরিবারগুলি এবং বিচার প্রার্থীরা যেনো সে বিচার কাজ দেখে যেতে পারে।
তিনি আরো বলেন, ধর্মের নামে রাজনীতি নিষিদ্ধ করে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িকতা ও মৌলবাদের স্থান যেনো না থাকে সে উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলেন। পরবর্তীতে জিয়া, এরশাদ, খালেদা জিয়া সর্বক্ষেত্রে মৌলবাদী ও সাম্প্রদায়িকতাকরণ চূড়ান্ত করেন। ফলশ্রæতিতে এখানো প্রশাসনের রন্ধ্রে রন্ধ্রে পাকিস্তানি প্রেতাত্মারা।
জামাতিরা আত্মরক্ষার জন্য আওয়ামী লীগে ঢুকছে বলে উল্লেখ করে শাহরিয়ার কবির আরো বলেন, জেলা-উপজেলা পর্যায়ে আওয়ামী নেতৃবৃন্দকে সতর্ক থাকতে হবে। আওয়ামী লীগের মধ্যে জামাতিরা ঘাপটি মেরে ঢুকছে।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ কন্যা, প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার ৭৪তম জন্মদিন উপলক্ষ্যে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি চট্টগ্রাম জেলার উদ্যোগে গত ২৮ সেপ্টেম্বর, সোমবার, সন্ধ্যা ৬টায় অনলাইন জুম’এ ‘যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এবং মৌলবাদ-সা¤প্রদায়িকতা নির্মূলে সরকারের সাফল্য ও চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক ওয়েবিনারে প্রধান আলোচকের বক্তৃতায় সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি শাহরিয়ার কবির এসব কথা বলেন।
সংগঠনের কেন্দ্রীয় ১ম যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও চট্টগ্রাম বিভাগীয় সমন্বয়ক লেখক-সাংবাদিক শওকত বাঙালির সভাপতিত্বে ও সঞ্চালনায় অন্যদের মধ্যে আলোচনায় অংশ নেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, ৬৯’র গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম সহযোগী, সমাজসেবক ও সংস্কৃতিকর্মী শিক্ষাবিদ হাছিনা জাকারিয়া বেলা ইসলাম, সংগঠনের কেন্দ্রীয় অর্থ সম্পাদক প্রফেসর ডা. মামুন আল মাহাতাব স্বপ্নিল, কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক সাইফ উদ্দিন রুবেল, কেন্দ্রীয় নেতা সিমন বাস্কে, সর্ব ইউরোপিয়ান নির্মূল কমিটির সভাপতি তরুণ কান্তি চৌধুরী, সুইজারল্যান্ড নির্মূল কমিটির সভাপতি খলিলুর রহমান, সহ-সভাপতি অরুণ বড়–য়া, ফ্রান্স নির্মূল কমিটির সাধারণ সম্পাদক আমিন খান হাজারী, কুমিল্লা জেলা আহŸায়ক দিলীপ মজুমদার, চট্টগ্রাম জেলা কার্যকরী সাধারণ সম্পাদক মো. অলিদ চৌধুরী, প্রচার ও গণমাধ্যম সম্পাদক সনেট চক্রবর্তী, সহ-প্রচার ও গণমাধ্যম সম্পাদক রুবেল চৌধুরী, তরুণ সংগঠক ও মানবাধিকার কর্মী কানিজ ফাতিমা লিমা প্রমুখ।
প্রধানমন্ত্রীকে নিবেদিত কবিতা আবৃত্তি করেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন আবৃত্তিশিল্পী ও গবেষক ডালিয়া বসু সাহা (ভারত)।
বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বলেছেন, শেখ হাসিনা ৭৪ বছরে বিশ্বের সফল নেত্রী হিসেবে জায়গা করে নিয়েছেন। উনি যে বঙ্গবন্ধুর কন্যা তা অক্ষরে অক্ষরে বুঝিয়ে দিয়েছেন। বিশ্বের শক্তিশালী পত্রিকাগুলো তাকে মানবতার মা হিসেবে আখ্যায়িত করেছে।
হাসিনা জাকারিয়া বেলা ইসলাম বলেন, একের পর এক ষড়যন্ত্র অতিক্রম করে তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে রোল মডেল, দারিদ্র বিমোচনে যুগান্তকারী পদক্ষেপ গ্রহণকারী, নারীর ক্ষমতায়নে বিশ^স্ততা অর্জনকারী এবং সুশাসন প্রতিষ্ঠায় বিশাল সাফল্যের অধিকারী হিসেবে জনগণমননন্দিত হয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কারণেই করোনা সংকটেও বাংলাদেশের একজন মানুষ না খেয়ে মারা যায়নি। এই সংকটেও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়েছে। আর এটা সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর দিন-রাত পরিশ্রমের কারণেই।
তরুণ কান্তি চৌধুরী বলেন, যে দেশটি আগে দুর্ভিক্ষের দেশ হিসেবে পরিচিত ছিলো, তা আজ বিশ্বের দরবারে রোল মডেল। আর এটা সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কারণেই।
অরুণ বড়–য়া বলেন, ওয়াজের নামে, টকশোর নামে, মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু, শেখ হাসিনার নামে অসভ্য ভাষায় আক্রমণ করছে জামাতীরা। অনতিবিলম্বে এসবের বিরুদ্ধে সরকারকে কঠোর হতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে শওকত বাঙালি বলেন, আইনের শাসনের প্রতি শেখ হাসিনা অনেক শ্রদ্ধাশীল। এদেশে জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়া যে বিচারহীনতার সংস্কৃতি তৈরি করেছিলেন, সেটা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দূর করেছেন। দুর্নীতি করার কারণে নিজ দলের নেতাকর্মীদেরও বিচারের আওতায় এনেছেন।
তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে একটাই প্রত্যাশা, দেশ চলুক ৭২’র সংবিধানের ধারায়। ৭২-এর সংবিধান পুনঃপ্রবর্তনের প্রত্যাশা করেন বক্তারা।