মহাসচিব নির্বাচনে বিএনপির সার্চ কমিটি গঠন?

নিউজ ডেস্ক: ১১ ফেব্রুয়ারি বিএনপির নতুন মহাসচিব খোঁজার জন্য একটি সার্চ কমিটি গঠন করেছেন লন্ডনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া। বিএনপির দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে, তারেক জিয়া কমিটির প্রত্যেকের সঙ্গে কথা বলেছেন। এবং প্রত্যেককে মহাসচিব পদের তিন থেকে পাঁচজনের নাম দেওয়ার অনুরোধ করেছেন। একই সঙ্গে জানা গেছে যে, সার্চ কমিটি যে নামগুলো প্রস্তাব করবে সেই নাম নিয়ে তারেক জিয়া তৃনমূলের মতামত নিবেন। একজন বিএনপি নেতা বলেছেন, আসলে তৃনমূলের ভোট হবে। এই ভোট পরিচালনা করবেন তারেক জিয়া। এই ভোটে যার নাম আসবে তিনি মহাসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। নির্বাচনের পর থেকেই বিএনপিতে মহাসচিব পরিবর্তনের আওয়াজ উঠেছে। বিএনপির শীর্ষস্থান থেকে তৃনমূল পর্যন্ত বলছে, বর্তমান নেতৃত্ব যেহেতু ব্যার্থ হয়েছে। সেহেতু নতুন নেতৃত্বের মাধ্যমে নতুন মহাসচিব দিয়ে দল পরিচালনা করতে হবে।

তারেক জিয়া প্রথমে নেতৃত্ব পরিবর্তনের বিরুদ্ধে ছিলেন। কিন্তু পরবর্তীতে তার কাছে এমন কিছু তথ্য গেছে যেখানে দেখা গেছে যে, যদি মহাসচিব পরিবর্তন না করা হয়, তাহলে দলের মধ্যে হতাশা বাড়বে। দলের মনোবল থাকবে না। দলের মধ্যে কোন্দল আরও বেড়ে যাবে। এমন পরিস্থিতিতেই দলকে পুনর্গঠন এবং চাঙ্গা করার জন্যই নতুন মহাসচিব নিয়োগের ব্যাপারে কথাবার্তা চলছে। প্রাপ্ত তথ্যে দেখা গেছে যে, এ পর্যন্ত তারেক জিয়া লন্ডনে থেকে ৫ জনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। মহাসচিব কে হতে পারেন এ ব্যাপারে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। এরা হলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সাবেক উপাচার্য ড. এমাজউদ্দীন আহমেদ, আমার দেশের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমান, যায় যায় দিনের সম্পাদক শফিক রেহমান, দৈনিক দিনকালের সম্পাদক ড. রেজওয়ান সিদ্দীকি এবং সুপ্রীম কোর্ট আইনজীবি সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদিন। বিএনপির সূত্রগুলো বলছে, এদের প্রত্যেককেই নামের তালিকা দিতে বলেছেন। তাঁরা যে নামের সংক্ষিপ্ত তালিকা দিবেন, সেই সংক্ষিপ্ত তালিকার ভিত্তিতে তারেক জিয়া তৃনমূলের নেতাদের সঙ্গে কথা বলবেন। তৃনমূলের মতামত নিবেন।

বিএনপির একজন নেতা বলছেন, সাধারনত দলের মহাসচিব হয় দলের চেয়ারপারসনের ইচ্ছে অনিচ্ছার উপর নির্ভর করে। তিনি যাকে পছন্দ করেন তাকে মহাসচিব করা হয়। তবে এবার তারেক জিয়া মহাসচিব মনোনয়নের ক্ষেত্রে তৃনমূলকে গুরুত্ব দেওয়ার চেষ্টা করছেন। তিনি একটি দীর্ঘমেয়াদি আন্দোলনের পরিকল্পনা থেকে দলকে ঢেলে সাজানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছেন। সেই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে প্রথমে মহাসচিব পরিবর্তন করা হবে। মহাসচিবের পরিবর্তনের পরে দলের স্থায়ী কমিটির পরিবর্তন এবং দলের জাতীয় নির্বাহী কমিটি পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। কাউন্সিল অধিবেশন নিয়ে বিএনপির মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে। দলের সিংহভাগ নেতাকর্মীরা মনে করেন, বেগম খালেদা জিয়া জেলে থাকা অবস্থায় কাউন্সিল অধিবেশন করাটা অযৌক্তিক এবং অশালীনও বটে। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে দলের সাংগঠনিক অবস্থা নাজুক হয়ে পরেছে। বেগম খালেদা জিয়ার জেলে থাকার পরও বিরুপ পরিস্থিতিতে দলের কাউন্সিল অধিবেশনের জন্য তারেক জিয়া আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। কারণ তিনি মনে করছেন যে, নতুন নেতৃত্ব যদি না আসে দল যদি পুনর্গঠিত না হয় তাহলে আন্দোলন করা যাবে না। বিএনপির একাধিক শীর্ষস্থানীয় নেতা বলছেন, বিএনপির মধ্যে এখন আন্দোলনের চিন্তাটাই মুখ্য হয়ে উঠেছে। সাংগঠনিক শক্তি বৃদ্ধি করে আন্দোলনের জন্যই বিএনপি প্রস্তুতি নিবে সেটা সময় সাপেক্ষ হলে এটাই বিএনপির একমাত্র পথ স্থির করেছে।

গত কয়েকদিনে তারেক জিয়া তৃনমূলের সঙ্গে যোগাযোগ বৃদ্ধি করেছেন। তাদের সঙ্গে আন্দোলন, সংগ্রাম এবং সাংগঠনিক বিষয় নিয়ে নানা রকম মতামত নিচ্ছেন। ধারণা করা হচ্ছে যে, আগামী এক থেকে দেড় মাসের মধ্যেই বিএনপিতে নতুন মহাসচিব দায়িত্ব নিবেন এবং কে মহাসচিবের দায়িত্ব নেন। তিনি দলের এই বিরোধ এবং কোন্দল কতটুকু সামলান সেটাই দেখার বিষয়।