করোনার টিকা নিয়ে আত্মবিশ্বাসী সানোফি

করোনা ভাইরাসের (কোভিড-১৯) বিরুদ্ধে কার্যকরী টিকা আবিষ্কারের চেষ্টা চলছে পুরো বিশ্বজুড়ে। দেড় শতাধিক সম্ভাব্য টিকা নিয়ে কাজ করছেন বিজ্ঞানীরা। এর মধ্যে রয়েছে ওষুধ নিয়ে কাজ করা বিশ্বখ্যাত প্রতিষ্ঠানগুলোও। এর মধ্যে রয়েছে ফরাসি ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান সানোফি। করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে দু’টি সম্ভাব্য টিকা নিয়ে কাজ করছে তারা। এর মধ্যে একটি টিকার ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শুরু হতে যাচ্ছে আগামী মাসে। ইতিমধ্যেই ৩০টি পরীক্ষামূলক ডোজ দিয়ে মানবদেহে পরীক্ষা চলছে। প্রতিষ্ঠানটি সম্প্রতি জানিয়েছে, তারা তাদের টিকাগুলো নিয়ে আত্মবিশ্বাসী।
এ খবর দিয়েছে সিএনবিসি।
খবরে বলা হয়, সানোফির দুই টিকার একটি তৈরি করছে বৃটেনের গ্ল্যাক্সোস্মিথক্লাইন (জিএসকে) এর সঙ্গে মিলে। অপরটি তৈরি করছে মার্কিন কোম্পানি ট্রান্সলেট বায়োর সঙ্গে মিলে। সানোফির প্রধান প্রধান নির্বাহী কর্মী (সিইও) পল হাডসন শুক্রবার এক সাক্ষাৎকারে জিএসকে’র সঙ্গে তৈরি করা টিকাটি নিয়ে বলেন, প্রাথমিক উপাত্ত বলছে, আমরা সঠিক পথে আছি। আমাদের কাছে একটি টিকা রয়েছে। আগামী মাস থেকে পুরোদমে টিকাটির ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শুরু হতে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে টিকাটির ৩০টি ডোজ নিয়ে মানবদেহে পরীক্ষা চালানো হচ্ছে।
হাডসন গত জুলাইয়ে বলেছিলেন, প্রতিদ্বন্দ্বী অন্যান্য টিকা তৈরিকারকদের চেয়ে সানোফির কার্যকরী করোনা টিকা আবিষ্কারের সম্ভাবনা ৭০ শতাংশ বেশি। এর কারণ হিসেবে, টিকা তৈরিতে নিজেদের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন তিনি।
শুক্রবার সানোফির সিইও বলেন, আমাদের আত্মবিশ্বাস বেড়েছে। বড় আয়তনে টিকা তৈরির জন্য আমাদের অন্যান্য উৎপাদনকারীদের মতোই কাজ করতে হবে। কিন্তু আগামী বছর একটি, হয়তো দু’টি টিকা আনতে পারবো আমরা।
প্রসঙ্গত, সানোফির একটি টিকা ইতিমধ্যে বিদ্যমান একটি প্ল্যাটফর্মের ওপর নির্ভর করে তৈরি করা হচ্ছে। জিএসকে ফ্লু’র টিকা নিয়ে কাজ করার জন্য পরিচিত। তাদের তৈরি একটি সহায়ক উপাদান ব্যবহার করে তৈরি হচ্ছে করোনার টিকা। অন্যদিকে ট্রান্সবায়োর সঙ্গে সানোফির যৌথভাবে সম্ভাব্য টিকাটি তৈরিতে ব্যবহৃত হচ্ছে এমআরএনএ প্রযুক্তি।
ট্রান্সলেট বায়ো মঙ্গলবার জানিয়েছে, টিকাটি প্রাণীদের মধ্যে প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরিতে সক্ষম হয়েছে। আগামী নভেম্বরে টিকাটির মানবদেহে পরীক্ষা শুরু হতে পারে।
সানোফি ইতিমধ্যে তাদের সম্ভাব্য টিকাগুলো নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও বৃটেনের সঙ্গে চুক্তি করেছে। এছাড়া ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের (ইইউ) সঙ্গেও চুক্তির আলোচনা চলছে। তবে ইইউ সম্ভাব্য টিকাগুলো পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়ার ক্ষেত্রে আইনি ঝুঁকি থেকে প্রস্তুতকারকদের কেবল আংশিক দিচ্ছে। এ বিষয়ে হাডসন বলেন, আমি মনে করি, এখন আমাদের টিকাগুলোর সুরক্ষা যে পর্যায়ে আছে তা সম্মতি পাওয়ার মতো। এজন্যই আমরা চুক্তি স্বাক্ষর করেছি। কিন্তু টিকার সুরক্ষা নিয়ে বিভিন্ন পক্ষের অবস্থান নিয়েও আমি সচেতন।