গরম চায়ে চুমুক না দিয়ে দিন শুরু হয় এমন বাঙালি বোধহয় খুব কমই আছে। তবে চা নিয়ে অনেকেরই একটা ভ্রান্ত ধারণা আছে যে, চা খেলে ঠোঁট এবং গায়ের রঙ কালো হয়ে যায়।
ছোটবেলায় মা,দাদুমারা বারণ করতেন চা খেতে। তবে এই চা-ই অনেকক্ষেত্রে আপনার শরীরের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। চা খেলে যদি কেউ কালো হয়ে যেত তাহলে ইংরেজ ও আইরিশদের গায়ের রং আগেই পাল্টে যেত। তাইনা?
চা-কে চিনুন কাছে থেকে:
আসলে কে কালো হবে, কে ফর্সা তা অনেকাংশেই নির্ভর করে ত্বকের অন্দরে থাকা মেলানিন নামে একটি উপাদানের ওপর। আর এমন কিছু প্রমাণিত হয়নি যে চা খেলে মেলানিনের পরিমাণ বেড়ে যায়। তাই চা খেলে কালো হয়ে যাব—এ ধারণাটাকে কতটা গুরুত্ব দেওয়া যেতে পারে, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়।
প্রসঙ্গত, জিনগত কারণ এবং রোদে কতটা সময় কাটাচ্ছেন এ দুটি বিষয়ের ওপর গায়ের রং অনেকাংশেই নির্ভর করে থাকে। তবে আমাদের শরীরকে ভালো রাখতে লিকার চা এবং গ্রিন টি বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কাও কমে, একাধিক গবেষণায় এ কথা প্রমাণিত হয়েছে যে প্রতিদিন দু-তিন কাপ গ্রিন টি খেলে হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কা প্রায় ২০ শতাংশ এবং স্ট্রোকের আশঙ্কা প্রায় ৩৫ শতাংশ হ্রাস পায়। সেই সঙ্গে কমে হাই কোলেস্টেরলের মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও।
চায়ে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। একাধিক রোগে বিশেষ ভূমিকা পালন করে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। সেইসঙ্গে ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতেও অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের কোনো বিকল্প হয় না বললেই চলে। প্রসঙ্গত, পরিবেশ দূষণের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে ত্বক এবং শরীরকে বাঁচাতেও এই উপাদান বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটায় হারবাল চা খাওয়ার অভ্যাস করলে। ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোম বা বদহজম সহ একাধিক পেটের রোগ হ্রাস পায়। তাই যারা এমন কোনও রোগে ভুগছেন, তাঁরা আজ থেকেই হারবাল টি খাওয়া শুরু করুন। দেখবেন দারুণ উপকার পাবেন।
দাঁত সুন্দর হয়ে ওঠে: জাপানে হওয়া এক গবেষণায় এ কথা প্রমাণিত হয়েছে যে লিকার চা পান করলে মুখগহ্বরে পিএইচ লেভেল বেড়ে যায়। ফলে ক্যাভিটি হওয়ার আশঙ্কা কমে। শুধু তাই নয়, আরও বেশ কিছু মুখগহ্বরের রোগ সারাতেও লিকার চা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
হাড়ের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে: একাধিক কেস স্টাডি করে দেখা গেছে, প্রতিদিন গ্রিন টি খেলে হাড় মজবুত হয়। সেইসঙ্গে এই সম্পর্কিত নানাবিধ রোগের প্রকোপও কমে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উন্নতি ঘটায়: একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, লিকার চা পান করলে আমাদের শরীরে ইমিউন সেলের কর্মক্ষমতা বেড়ে যায়। ফলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এতটাই বেড়ে যায় যে নানাবিধ সংক্রমণের আশঙ্কা বহুলাংশে হ্রাস পায়।