কোমর বেঁধে ডিমওয়ালা মা মাছ শিকার

চলনবিলে বর্ষার পানি আসতে শুরু করেছে। সঙ্গে ভেসে আসছে মা মাছগুলোও। আর এই ডিমওয়ালা মা মাছগুলো ধরতে কোমর বেঁধে নেমেছেন মাছ শিকারীরা। স্থানীয়রা বলছেন, মা মাছের শিকার এখনই বন্ধ হওয়া উচিত। নদীতে অসময়ে ইলিশ শিকার বন্ধের মতো কোনো উদ্যোগ নেওয়া গেলে তবেই রক্ষা করা যাবে হারিয়ে যেতে চলা নানা প্রজাতির দেশি মাছ।

জানা গেছে, পাবনা, নাটোর ও সিরাজগঞ্জ জেলার ৯টি উপজেলা নিয়ে চলনবিলে এখন চলছে নানা উপায়ে মা মাছ শিকার হচ্ছে। আর এক শ্রেণির অসাধু জেলেরা বিলের বিভিন্ন পয়েন্টে বাদাই ও কারেন্ট জালসহ মাছ ধরার বিভিন্ন উপকরণ দিয়ে দিনে ও রাতে মা মাছ শিকার করে হাট-বাজারে প্রকাশ্যে বিক্রি করছেন। একই সঙ্গে হাট-বাজারে প্রকাশ্যে বিনা বাধায় নিষিদ্ধ করেন্ট জাল বিক্রি হচ্ছে।

গত এক সপ্তাহে চলনবিলের চাটমোহর, ভাঙ্গুড়া, গুরুদাসপুর, বড়াইগ্রাম, তাড়াশ ও সিংড়া উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজার ও মাছের আড়তে ডিমে পেট ভরপুর টেংরা, পাতাসী, পুঁটি, মলা, বোয়াল, শোল, মাগুড়সহ বিভিন্ন দেশীয় প্রজাতির ডিমওয়ালা মা মাছ প্রকাশ্যে বিক্রি হতে দেখা গেছে।

স্থানীয় মৎস্য অফিস সূত্র জানায়, সাধারণত জুন-জুলাই মাসে ডিম ছাড়ে মা মাছগুলো। বর্ষা শুরু হলেই চলনবিলের মাছগুলো ডিম ফুটাতে থাকে। কিন্তু এই সময়টাতে মাছ ধরা একেবারেই নিষিদ্ধ। ১৯৫০ সালের মৎস্য আইন অনুযাযী ডিম এবং মা মাছগুলো শিকার আইনগতভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কিন্তু বিলে পানি আসার সাথে সাথে মাছ শিকারে নেমে পড়েন জেলেরা। এতে করে জেলেদের জালে ধরা পড়ে নষ্ট হচ্ছে ডিমগুলো।

চলনবিলের বিভিন্ন মৎস্য আড়তে প্রতি কেজি টেংরা ছয়শ টাকা, পাতাসী আটশ টাকা, মলা চার থেকে পাঁচশ টাকা, বোয়াল আটশ থেকে এক হাজার টাকা, শিং মাছ ছয়শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

গুমানী, চিকনাই,বড়াল, আত্রাই নদী এবং বিলের বিভিন্ন পয়েন্টে বাদাই, কারেন্ট, খরা জালসহ বিভিন্ন উপকরণ দিয়ে ডিমে ভরপুর দেশীয় বিভিন্ন প্রজাতির মা মাছ অবাধে নিধন করা হচ্ছে।

চাটমোহর উপজেলা সিনিয়র মৎস্য অফিসার মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, আমরা প্রথমে মাইকিং করবো। এরপর অভিযান শুরু করা হবে। কারেন্ট জাল বিক্রির বিরুদ্ধেও অভিযান চালানো হবে। চলনবিলে মা মাছ রক্ষার কোনো বিকল্প নেই।