সুদানের রাষ্ট্রপতি ভবনের সম্পূর্ণ দখল নিয়েছে দেশটির সেনাবাহিনী। প্রায় দুই বছর পর শুক্রবার (২১ মার্চ) আধাসামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) কাছ থেকে রাষ্ট্রপতি ভবনের নিয়ন্ত্রণ নিতে সক্ষম হয় সেনারা।
সুদানের সরকারি গণমাধ্যম এবং সামরিক বাহিনী সূত্রের বরাতে এ খবর জানিয়েছে এএফপি। তবে রাষ্ট্রপতি ভবন হাতছাড়া হলেও খার্তুমের কিছু এলাকা, সংলগ্ন ওমদুরমান প্রদেশ এবং দক্ষিণ সুদান আধাসামরিক বাহিনীর হাতেই রয়েছে।
২০১৯ সালে সাবেক রাষ্ট্রনায়ক ওমর আল-বশির ক্ষমতাচ্যুত হন। ২০২১ সাল থেকে সুদানের সামরিক বাহিনীর প্রধান জেনারেল আবদেল-ফাত্তাহ বুরহানই কার্যত সুদানের শাসক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছেন। তার ডেপুটির দায়িত্বে রয়েছেন এরএসএফ-এর প্রধান জেনারেল মুহাম্মদ হামদান দাগালো।
এরপর থেকে সামরিক ও আধাসামরিক দুই বাহিনী মিলে সুদানের শাসনভার সামলাচ্ছিল। তবে এক পর্যায়ে আধাসামরিক বাহিনী আরএসএফকে মূল সামরিক বাহিনীতে অন্তর্ভূক্তি করে নেয়ার প্রস্তাব দেন জেনারেল আবদেল-ফাত্তাহ বুরহান।
এতে দাগালোর সঙ্গে বুরহানের সম্পর্কের ক্রমশ অবনতি হতে থাকে। ক্রমশ দানা বাঁধতে শুরু করে দ্বন্দ্ব। ২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে দুই বাহিনীর মধ্যে তীব্র লড়াই শুরু হয়।
যা গত দুই বছর ধরে চলছে। এই সংঘাতে প্রায় ১০ হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অসংখ্য। এক কোটি ২০ লাখেরও বেশি মানুষ হয়েছে বাস্তুচ্যুত। শুধুমাত্র খার্তুম অঞ্চল থেকেই ৩৫ লাখের বেশি নিজেদের ঘরবাড়ি ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছে।
২০২৩ সালের এপ্রিলেই রাষ্ট্রপতি ভবনসহ রাজধানী খার্তুমের বেশিরভাগ এলাকা দখল করে আধাসামরিক বাহিনী আরএসএফ। তবে সম্প্রতি আবারও নীল নদের তীরে অবস্থিত রাষ্ট্রপতি ভবন উদ্ধারে অগ্রসর হতে থাকে সেনাবাহিনী।
খবরে বলা হয়েছে, দক্ষিণ দিক থেকে অগ্রসর থেকে অগ্রসর হওয়া একদল সেনা গত সোমবার (১৭ মার্চ) খার্তুম শহরের কেন্দ্রস্থলে থাকা আরেকদল বাহিনীর সঙ্গে মিলিত হয়।
মিলিত বাহিনী আধাসামরিক বাহিনীর ওপর আরও চাপ তৈরি করে। এরপর দুই পক্ষের মধ্যে তীব্র সংঘর্ষ শুরু হয়। এ সময় শহরজুড়ে বিস্ফোরণ ও গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়।
অবশেষ শুক্রবার রাষ্ট্রপতি ভবনের নিয়ন্ত্রণ নিতে সক্ষম হলো সেনাবাহিনী। চলমান গৃহযুদ্ধে রাষ্ট্রপতি ভবনের দখলকে তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।