রাউজান উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার উপর হামলাকারী যুবদল নেতা আটক

শফিউল আলম, রাউজান: চট্টগ্রামের রাউজানে নারী উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তা (পিআইও) আয়েশা সিদ্দিকাকে (৩৮) চেয়ার ছুড়ে মারা সেই যুবদল নেতা মুহাম্মদ শহীদুল ইসলামকে (৪৩) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

গত ১১ মার্চ (মঙ্গলবার) দিবাগত রাত ১২টার দিকে পৌরসভার ফকিরহাট ডিউবিজি শপিং সেন্টারের দোতলার একটি দোকান থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।রাউজান উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসার আয়েশা সিদিকাকে তার অফিসে হত্যার চেষ্টা ও অফিসের আসবাব পত্র ভাংচুর করার ঘটনায় থানায় মামলা করেন উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তা আয়েশা সিদ্দিকা।

মামলায় তিনি যুবদল নেতা শহীদের বিরুদ্ধে অস্ত্র দেখিয়ে হুমকি ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগ আনেন।মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, তিন মাস ধরে রোজ কয়েকবার করে পিআইও কার্যালয়ে এসে যুবদলের ত্যাগী নেতা পরিচয়ে শহীদ কাজ তাঁকে দেওয়ার দাবি জানিয়ে আসছেন। এক মাসে আগে অস্ত্র নিয়ে কার্যালয়ে গেলে প্রকল্প বাসত্মবায়ন অফিসার আয়েশা সিদ্দিকা তাঁকে বের করে দেন। এ সময় আয়েশা সিদ্দিকাকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন শহীদ।

গতকাল ১১ মার্চ মঙ্গলবার বিকেলে আবারও যুবদল নেতা শহীদ প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয়ে এসে কাজের দাবিতে বিরক্ত করছিলেন শহীদ। ঐ সময়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসার আয়েশা সিদিকা তাঁর চেয়ারে বসা ছিলেন। শহীদকে প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসার আয়েশা সিদিকা বলেন, কার্যালয়ে এসে বিরক্ত করে কোনো লাভ হবে না, জনপ্রতিনিধির মাধ্যমে ঠিকাদারদের কাজ ও প্রকল্প দেওয়া হয়। এই কথা শুনে উত্তেজিত হয়ে শহীদ চেয়ার হাতে নিয়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসার আয়েশা সিদিকার দিকে ছুড়ে মারেন। সেটি গিয়ে টেবিলের ওপর পড়ে। এতে গ্লাস ও টেবিল ভেঙে যায়। উপজেলা প্রশাসনের লোকজন ভাংচুরের শব্দ শুনে দৌড়ে এলে পালিয়ে যান শহীদ।
পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেপ্তার শহীদের বিরুদ্ধে গত বছরের ডিসেম্বর মাসে বিজয় মেলাকে কেন্দ্র করে বিএনপির অপর পক্ষের লোকজনের ওপর হামলা এবং মারামারির অভিযোগেও মামলা রয়েছে।

দলীয় সূত্র জানায়, হামলাকারী শহীদ পৌরসভা যুবদলের সাবেক প্রচার সম্পাদক। পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের শাহ নগর শরীফ বাড়ীর বাসিন্দা মৃত মাদুল হাসেন ড্রাইভারের পুত্র । হামলকারী শহীদ এর ব্যাপারে জানতে চাইলে রাউজান পৌরসভা যুবদলের সভাপতি শাহাজাহান শাহিল বলেন, বর্তমানে বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের কোনো পদ-পদবিতে নেই শহীদুল। তিনি দলের নাম ভাঙিয়ে অপকর্ম করছিলেন। তাঁর সঙ্গে পৌরসভা যুবদলের কোনো সম্পর্ক নেই।
হামলার শিকার উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আয়েশা সিদ্দিকা বলেন, এ ঘটনার পর তিনি আতঙ্কিত ছিলেন। তবে পুলিশ হামলাকারীকে গ্রেপ্তার করায় এখন কিছুটা স্বস্তিতে রয়েছেন।
রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, গ্রেপ্তার শহিদকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাকে আদালতে সোপর্দ করা হবে। তাঁর বিরুদ্ধে গত ডিসেম্বরেও বিএনপি অপর পক্ষের ওপর হামলার ঘটনায় মামলা রয়েছে।