কর্ণফুলীর সিডিএ সড়কে তীব্র্র যানজট, ভোগান্তিতে জনগণ

জে.জাহেদ :

কর্ণফুলীর মইজ্জ্যারটক টু পুরাতন ব্রিজঘাট সাড়ে প্রায় ৩ কিঃ মিঃ সিডিএ সড়ক। মাঝখানে খোয়াজনগর আজিমপাড়া এলাকায় বেলামী টেক্সটাইল লিমিটেড ও গোল্ডেন সন লিমিটেড (জিএসএল) নামে দুটি গার্মেন্টস শিল্পজাত প্রতিষ্ঠান অধিকাংশই সিডিএ সড়কের জায়গা দখল করে রেখেছে বলে অভিযোগ ওঠেছে।

সেই সাথে দু’গার্মেন্টস এর হাজার হাজার শ্রমিক যাতায়াতের জন্য প্রধান সড়ককে বানিয়েছে অবৈধ বাসস্ট্যান্ড। ফলে দুপুরে ও রাতে তীব্র্র যানজট দেখা দিয়েছে।

উপজেলার ব্রিজঘাট, খোয়জনগর কাঁচাবাজার, চরলক্ষ্যার বোর্ড বাজার, কর্ণফুলী থানা ও ফেরীঘাট এলাকাসহ স্কুল কলেজে যাতায়াত করা শত শত ছাত্রছাত্রী ও সাধারণ মানুষেরা দিন দিন এ যানজটে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে।

বর্তমানে খানাখন্দ হয়ে পড়েছে মইজ্জ্যারটেক হতে ব্রিজঘাট সিডিএ সড়ক। তার উপর মিল ফ্যাক্টরীতে কর্মরত শ্রমিক পরিবহনের বাসগুলো রাস্তার মাঝখানে বাসস্ট্যান্ড এর মতো জটলা থাকায় ১০মিনিটের পথ অতিক্রম করতে এক ঘন্টারও বেশি সময় লাগছে বলে ভোক্তভোগীরা অভিযোগ করেছেন।

এ সড়কে যাতায়াতকারী যাত্রীরা জানান, ‘স্থানীয় একটি প্রভাবশালী চক্রের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় চরপাথরঘাটা খোয়াজনগর সৈন্যেরটেক এলাকায় অবস্থিত দু প্রতিষ্ঠান স্বেচ্ছাচারিতা আর অবহেলায় সড়কে তৈরী হয়েছে এক অঘোষিত বাসস্ট্যান্ড। যেখানে দুপুর বেলা ও রাতে যাত্রী ওঠা-নামা করছে।

ফলে এই সড়কে প্রায় এখন যানজট লেগেই রয়েছে। এতে জনদূর্ভোগও বেড়ে চলেছে প্রতিনিয়ত। এ বিষয়ে স্থানীয় কিছু সচেতন মানুষ সড়কের উপর এমন অবৈধ বাসস্ট্যান্ড ও সড়কের ভূমি দখল সরিয়ে নিতে তাগিদ দিলেও আমলে নিচ্ছেনা কতৃপক্ষরা এমনটি অভিযোগ রয়েছে।

দীর্ঘদিন যাবৎ স্থানীয় জনগণ জনপ্রতিনিধিদের এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে দাবি জানিয়ে আসলেও জনপ্রতিনিধি কিংবা প্রশাসনের কোন সাড়া মিলছে না বলে জানা যায়।

এসব প্রতিষ্ঠানের সামনের দোকানদারেরা জানান, ‘এ সড়ক পাকিস্থান আমল হতে চালু। অতি সহজে কর্ণফুলী দক্ষিণ পাড় হতে চট্টগ্রাম শহরের সাথে যোগাযোগ সুবিধা বাড়ায় এই সড়ক দিয়ে যানবাহন চলাচল কয়েকগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু সড়কের জায়গা দখল ও গার্মেন্টস এর শ্রমিক যাতায়াতে অবৈধ বাসস্ট্যান্ড থাকায় যানজটও বেড়ে গেছে।’

সরেজমিন দেখা যায়, সড়কের অধিকাংশ জায়গা দখল করে নারকেল গাছের চারা রোপণ করায় সংর্কীণ হয়ে পড়েছে মূল সড়ক। লোহার ব্যারিকেট দিয়ে সড়কের উপর পর্যন্ত সীমানা টেনে রেখেছে। ফলে বিশাল একটি সড়কের জায়গা তাদের দখলে রেখেছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

স্থানীয়রা বলেন, গত কয়েক বছর আগেও যে সড়ক ছিলো মহাসড়কের ন্যায় তা আজ জবর দখলে সরু হয়ে গিয়েছে। মূল সড়কের উপর দাঁড়িয়ে থাকে একাধিক বাস। পথ চলতে গিয়ে যানবাহনের জটলা লেগে যায় সবসময়। যা রূপ নিচ্ছে ভয়াবহ যানজটে।

স্থানীয় ব্যবসায়ী নাছির উদ্দীন নাহিদ বলেন, ‘সড়কের ওপর গাড়ি থামিয়ে যাত্রী নামানো-ওঠানো, খালি বাস পার্কিং করে রাখা, সড়কের ওপর গাড়ি থামিয়ে মালামাল তোলা-নামা এখানকার প্রতিদিনের চিত্র। ফলে প্রায় সারাদিনই এ সড়কে লেগেই থাকছে যানজট। এতে চরম দুর্ভোগে পড়ছেন স্কুলগামী শিক্ষার্থী, রোগীবাহি এ্যাম্বুলেন্স, মিল-কারখানার পরিবহন, পথচারী ও দূর গন্তব্যের যাত্রীরা।’

নাম প্রকাশ না করা শর্তে স্থানীয় এক শিক্ষক বলেন, স্থানীয় প্রভাবশালীদের সাথে এসব প্রতিষ্ঠানের গোপন আতাত থাকায় দিন দিন সড়কের ভূমি দখল করছে এবং অবৈধ এ বাসস্ট্যান্ড গড়ে তোলছে। তাই মূল সড়কে বীরদর্পে দীর্ঘক্ষণ বাস দাঁড় করিয়ে রেখে গার্মেন্টস যাত্রী উঠা-নামা করেন সংশ্লিষ্টরা। যানজট নিরসনে সড়কের জায়গা অবমুক্তের মাধ্যমে যাত্রী সাধারণের দুর্ভোগ লাঘবে অবৈধ বাস স্ট্যান্ড বন্ধে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।

অভিযোগের বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে বেলামী টেক্সটাইল লিমিটেড এর ম্যানেজমেন্ট অফিসার নুরল হক বলেন, ‘আমাদের পর্যাপ্ত জায়গা রয়েছে এ বিষয়ে আমি আলোচনা করে একটা ব্যবস্থা নেবো।’

অপরদিকে গোল্ডেন সন লিমিটেড এর লিগ্যাল এন.এসেট অফিসার মোহাম্মদ হায়দার বলেন, ‘আমাদের কোন বড় গাড়ি নেই যারা কাজ করে তারা স্থানীয়। বরং আমরাও ভোক্তভোগী এসব যানজটে। আমাদের কোম্পানীতে সকাল ৮টায় ডিউটি ও বিকাল ৫টায় শেষ।’

কর্ণফুলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সৈয়দ সামশুল তাবরীজ বলেন, ‘যথাযথ তদন্তপূর্বক জনভোগান্তি লাঘবে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’