রাউজানে অবাধে চলছে মাটি খেকোদের রাজত্ব

শফিউল আলম, রাউজানঃ চট্টগ্রাম জেলার রাউজান উপজেলায় আইন শৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি। নোয়াপাড়ায় ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলম, যুবলীগ কর্মী সিএনজি চালক হাসানকে সন্ত্রাসীরা হত্যা । রাউজানের কদলপুরে যুবদল নেতা আনোয়ার হোসেন বাছুল, সাবেক ছাত্রদল নেতা পেয়ার আহম্মদ চৌধুরী বাবু, নোয়াপাড়ার উভলং এলাকার বাসিন্দ্বা যুবদল নেতা সুজন, ছাত্রদল নেতা জয়নাল আবেদিন ও সাজ্জাদ কে প্রকাশ দিবালোকে সন্ত্রাসীরা হামলা করে আহত করেন ।

গত ৫ আগষ্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর থেকে আওয়ামী লীগ যুবলীগ, ছাত্রলীগ নেতা কর্মী, আওয়ামী লীগের লালিত সন্ত্রাসীরা এলাকা ছেড়ে কেউ মধ্যপ্রাচ্যে কেই ভারতে কেই কেউ দেশের মধ্যে আর্তগোপনে চলে যায় । গত ২০২৪ সালের ১২ সেপ্টেম্বর ভ্রাম্বনবাড়িয়া আখাউড়া সীমান্ত থেকে সাবেক সংসদ সদস্য এবি এম ফজলে করিম চৌধুরীকে গ্রেফতার করা হয় । বর্তমানে সাবেক সংসদ সদস্য এবি এম ফজলে করিম চৌধুরী চট্টগ্রাম জেলা কারাগারে আটক রয়েছে । তার বিরুদ্বে ১০ টির অধিক মামলা হয়েছে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর থেকে । আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর থেকে আইন শৃংখলা রক্ষা বাহিনীর সদস্যদের হাতে গ্রেফতার হয়েছে রাউজানের ডাবুয়া ইউািনয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুর রহমান চৌধুরী, বিনাজুরী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান সুকুমার বড়ুয়া, রাউজান পৌরসভার কাউন্সিলর শওকত হাসান চৌধুরী, যুবলীগ নেতা আনোয়ার হোসেন. ফরহাদ, মনসুর, বিএনপি নেতা জানে আলম, আজিজুল হক, যুবদল নেতা ফোরকান। তাদের মধ্যে বিএনপি নেতা আজিজুল হক, আওয়ামী লীগ নেতা সাবেক চেয়ারম্যান সুকুমার বড়ুয়া, সাবেক পৌর কাউন্সিলর শওকত হাসান চৌধুরী জামিনে মুক্তি পেয়েছেন ।

আওয়ামী লীগ সরকারের শাসন আমলে আর্ত্নগোপনে চলে যাওয়া শীর্ষ সন্ত্রাসী ও তাদের সহযোগীরা আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর পর রাউজানে এসে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর রাউজানে বিএনপির বিবদমান দুটি গ্রুপের মধ্যে সংর্ঘষের একাধিক ঘটনা সংঘঠিত হয়েছে । আওয়ামী লীগের লালিত সন্ত্রাসীদের মধ্যে কয়েকজন সন্ত্রাসী বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের নেতার সাথে দেখা করে তারা বিএনপিতে যোগ দিয়েছে । গত ১ মার্চ শনিবার দিবাগত রাত ১১ টার সময়ে রাউজানের গহিরায় ছাত্রলীগের কর্মী কাজী সাফায়েতকে পুলিশ গ্রেফতার করলে বিএনপির নেতা কাজী সাফায়েতকে পুলিশের কাছ থেকে সাফায়েত বিএনপির কর্মী দাবী করে ছিনিয়ে নেয় । রাউজানের কদলপুর, পাহাড়তলী, রাউজান ইউনিয়ন, রাউজান পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ড, ডাবুয়া ও হলদিয়া ইউনিয়নের পাহাড়ী এলাকার পাহাড় টিলা কাটছে মাটি খোকো সিন্ডিকেটের সদস্যরা। পাহাড় ও টিলা কাটা মাটি ইটের ভাটায় ইট তৈয়ারীর কাজে ও পুকুর জলাশয় ভরাট কাজে প্রতিদিন ড্রাম ট্রাক ভর্তি করে বিক্রয় করছে মাটি খোকো সিন্ডিকেটের সদস্যরা ।

একই ভাবে রাউজানের প্রতিটি এলাকায় কৃষি জমি থেকে গভীর ভাবে মাটি খনন করে মাটি বিক্রয় করছে মাটি খোকো সিন্ডিকেটের সদস্যরা । পাহাড় টিলা ও কৃষি জমি থেকে ব্যাপক হারে মাটি কাটা হলেও তা বন্দ্বে অভিযান চলছে ঢিমেতালে । পাহাড় টিলা ও কৃষি জমি থেকে মাটি কাটা প্রসঙ্গে রাউজান উপজেলা সহকারী কমিশনার ভুমি অংছিং মারমা বলেন, কৃষি জমি থেকে মাটি কাটায় কয়েকটি স্পটে অভিযান চালিয়ে জরিমানা আদায় করা হয়েছে । মাটি কাটার কাজে ব্যবহৃত এসকেভেটার জব্দ করা হয়েছে । গত ২ মার্চ রবিবার বিকালে রাউজানের পশ্চিম ডাবুয়ায় সর্তা খালের বেড়ীবাধ সংগ্লন কৃষি জমি থেকে মাটি কাটার অপরাধে কামাল নামের এক ব্যক্তির কাছ থেকে একত লাখ টাকা জরিমানা আদায় ও মাটি কাটার এসকেভেটার জব্দ করা হয়েছে ।

পাহাড় টিলা ও কৃষি জমি রক্ষায় মাটি খোকো সিন্ডিকেটের বিরুদ্বে অভিযান অব্যাহত রয়েছে । আইন শৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি প্রসঙ্গে রাউজান থানার ওসি বশিরুল ইসলাম ভুইয়া বলেন, আমি আসার পুর্বে নোয়াপাড়ায় ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলমতে সন্ত্রাসীরা হত্যা করে। আমি আসার পর যুবলীগ নেতা সি,এনজি চালক হাসানকে হত্যা করে। নোয়াপাড়ায় ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলম হত্যাকোন্ডের সাথে জড়িত রমজান আলী ও গিয়াস উদ্দিনকে গ্রেফতার করা হয়েছে । নোয়াপাড়া চৌধুরী হাট এলাকা থেকে সন্ত্রাসী লোকমানকে গ্রেফতার করা হয়েছে । আইন শৃংখলা পরিস্থিতির উন্নতি করে স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনতে যৌথবাহিনীর সদস্যরা প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে ।