বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, যদি বর্তমান সরকার নিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক এবং গ্রহণযোগ্য থাকে, তবে আগামী নির্বাচন এই সরকারের অধীনে হবে। তিনি আরও যোগ করেন, তারা বিশ্বাস করেন যে, অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু হবে।
বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় রাজধানীর বিজয়নগরের একটি হোটেলে জাতীয় নাগরিক ঐক্য আয়োজিত ‘সংকট থেকে মুক্তি পেতে রাজনৈতিক ঐক্যমত্যের বিকল্প নেই’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার সংবিধানের ৬ অনুচ্ছেদে শপথ নিয়েছে, তবে তার মেয়াদ নির্দিষ্ট নয়। নিরপেক্ষ সরকার না থাকলে, নির্বাচন কমিশন যতই নিরপেক্ষ বলুক, সেটি বিশ্বাসযোগ্য হবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘ফ্যাসিবাদী শাসনের বিরুদ্ধে যারা সংগ্রাম করেছে, তাদের সবাইকে একত্রিত করে জাতীয় ঐক্য গঠন করতে হবে, কাউকে বাদ দেওয়া যাবে না।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আমরা সংবিধান নিয়ে বড় ধরনের বিরোধ দেখছি না। তবে ৭১ সালের ইতিহাস আলাদা, সেটা ২৪ সালের সাথে তুলনা করা ঠিক হবে না। ফ্যাসিবাদবিরোধী জাতীয় ঐক্যটিকে একটি সংস্কৃতি হিসেবে গড়ে তুলতে হবে, কারণ অনেক দেশেই বিপ্লব ব্যর্থ হয়ে গেছে, যদি জাতীয় ঐক্যমত না থাকে।’
সভাপতির বক্তব্যে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘৫ আগস্টের পর দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে অপার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে, তবে সেই সম্ভাবনা সঠিকভাবে কাজে লাগাতে হলে ঐক্য গঠন করতে হবে।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, ‘আমরা দেখেছি, আন্দোলনের পর কখনও মার্শাল ল আসে, যা পাকিস্তান আমল থেকে দেখেছি। তবে এবারের আন্দোলন ভিন্ন, আমরা সবাই নির্যাতিত, এবং ২৪ সালের ছাত্র জনতার আন্দোলন নতুন আলো দেখিয়েছে।’
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি সাইফুল হক বলেন, ‘দেশে সংকট রয়েছে, তবে আমাদের মধ্যে একমত হতে হবে স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব এবং মানুষের অধিকারের বিষয়ে।’
গণসংহতি আন্দোলনের সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘রাষ্ট্রীয় কাঠামো পরিবর্তন করতে হবে, যা একদলীয় বা ফ্যাসিস্ট শাসনে পরিণত হয়েছে।’
গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী বলেন, ‘জাতীয় নেতৃত্ব খুঁজে বের করতে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে। সরকারের উচিত দ্রুত নির্বাচন আয়োজন করা, না হলে ভবিষ্যতে তাদের পালাতে হতে পারে।’
এই সভায় আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দলের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ এবং জাতীয় নাগরিক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব।