চট্টগ্রাম টেস্টে ৯০ ওভার ব্যাট করে ৯ উইকেটে ২২৭ রান করে প্রথম দিনের খেলা শেষ করেছিল জিম্বাবুয়ে।
মঙ্গলবার(২৯ এপ্রিল) দ্বিতীয় দিনে শেষ উইকেটে আরও কিছু রান যোগ করার আশায় ব্যাট করতে নামে সফরকারীরা।
তবে ক্রেইগ আরবিনের দলকে নতুন দিনে কোনো রান করতে দেয়নি বাংলাদেশ। দিনের প্রথম বলেই ব্লেসিং মুজারানিকে আউট করে দিয়েছেন তাইজুল ইসলাম। জিম্বাবুয়ে ব্যাটারকে উইকেটরক্ষক জাকের আলীর ক্যাচ বানান বাঁহাতি স্পিনার। প্রথম আউট দিতে না চাইলেও বাংলাদেশী ফিল্ডারদের কড়া আবেদনের প্রেক্ষিতে সিদ্ধান্ত বদল করেন আম্পায়ার। অর্থাৎ প্রথম ইনিংসে ২২৭ রানেই অলআউট হলো জিম্বাবুয়ে। ৬০ রানে ৬ উইকেট নিয়ে ইনিংসটিকে স্মরণীয় করে রাখলেন তাইজুল।
এর আগে সোমবার(২৮ এপ্রিল) চট্টগ্রামের বীরশ্রেষ্ঠ ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে টস জিতে আগে ব্যাট করতে নামে জিম্বাবুয়ে। প্রত্যাশা ছিল, শুরুর দিকেই জিম্বাবুয়েকে চেপে ধরবে বাংলাদেশ। তবে সেটি পারেনি স্বাগতিকরা। আবার উইকেট পেতে ১০ ওভারের বেশিও অপেক্ষা করতে হয়নি বাংলাদেশের ভক্ত-সমর্থকদের।
ইনিংসের ১১ তম ওভারের তৃতীয় বলে বাংলাদেশকে ব্রেকথ্রু এনে দিয়েছেন সদ্য অভিষেক হওয়া পেসার তানজিম হাসান সাকিব। অফসাইডে এক্সট্রা বাউন্স দিয়ে জিম্বাবুয়ে ওপেনার ব্রায়ান বেনেটকে (৩৩ বলে ২১) উইকেটরক্ষক জাকের আলী অনিকের ক্যাচ বানান তানজিম। ৪১ রানে প্রথম উইকেট হারায় জিম্বাবুয়ে।
চট্টগ্রামে বোলিংয়ে এসেই শিকার ধরেন তাইজুল। ইনিংসের ১৯তম ওভারে দুর্দান্ত এক ডেলিবারিতে উইকেটে সেট হওয়া জিম্বাবুয়ে ওপেনার বেন কারেনকে বোল্ড করেন বাঁহাতি স্পিনার। ৫০ বলে ২১ রান করে সাজঘরে ফেরত যান কারেন। দলীয় ৭২ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারায় জিম্বাবুয়ে।
তৃতীয় উইকেটে ১০৫ রানের জুটি করে জিম্বাবুয়েকে অনেক দূর এগিয়ে দেন উইলিয়ামস ও নিকোলাস ওয়েলচ। অবশেষে সফরকারীদের জুটি ভেঙেছে নিকোলাস ওয়েলচ রিটায়ার্ড হার্ট হওয়ার ফলে। ১৩১ বলে ৫৪ রান করে মাঠ ছাড়েন তিনি। জিম্বাবুয়ের দলীয় রান তখন ১৬২।
এরপর নতুন ব্যাটার ক্রেইগ আরভিনকে আউট করেন স্পিনার নাঈম হাসান। ৩১ বলে ৫ রান করে সাজঘরে ফেরত যান জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক। আরভিনকে উইকেটরক্ষক জাকের আলীর ক্যাচ বানান নাঈম।
জিম্বাবুয়ের স্কোরকার্ডে ১ রান যোগ হতেই আবারও আঘাত হানেন নাঈম। ডানহাতি স্পিনার এবার আউট করেন আঠার মতো উইকেটে লেগে থাকা শন উইলিয়ামসকে। ১৬৬ বলে ৬৭ রান করে সাজঘরে ফেরেন জিম্বাবুয়ের অভিজ্ঞ ব্যাটার। ১৭৮ রানে ৪ উইকেট হারায় জিম্বাবুয়ে।
ওয়েসলে মাদভেরে সেট হওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। ৩২ বলে ১৫ রান করে তাইজুলের শিকার হন তিনি। বল গ্লাভসে নিতে গিয়ে বেগ পেতে হলেও বুকে চেপে ধরে আটকে রাখেন উইকেটরক্ষক জাকের আলী। এক ওভার পর তাইজুলের আরেক উইকেট।
ওয়েলিংটন মাসাকাদজা ছক্কা হাঁকিয়েছিলেন তাইজুলকে। সেটাই যেন বিপদ ডেকে আনে জিম্বাবুয়ের। পরের বলেই এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে পড়েন লোয়ার অর্ডার এই ব্যাটার (৬), রিভিউ নিয়েও কাজ হয়নি। ওই ওভারে (দলীয় ৮১তম) ঠিক পরের বলে বোল্ড রিচার্ড এনগারাভা (০)।
তাফাজওয়া টিসিগার সঙ্গে দুই রান নিতে গিয়ে মিরাজের থ্রোতে ননস্ট্রাইক এন্ডে রানআউট হন ভিনসেন্ট মাসেকেসা (৮)। অষ্টম উইকেট পতনের পর মাঠে আসেন এর আগে রিটায়ার্ড হার্ট হওয়া নিক ওয়েলচ। কিন্তু এবার আর টিকতে পারেননি তিনি। তাইজুলের ঘূর্ণিতে বোল্ড হয়ে ফেরেন ওয়েলচ (৫৪)।
বাংলাদেশের হয়ে ৬০ রানে ৬ উইকেট শিকার করেছেন তাইজুল। এটি বাঁহাতি স্পিনারের ১৬তম ফাইফার। এছাড়া নাঈম হাসান ২ ও তানজিম সাকিব নেন ১ উইকেট।