দেড় মাস পর টেকনাফ করিডরে আবারো গবাদি পশু আমদানি

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে প্রায় দেড় মাস ধরে মিয়ানমার থেকে গবাদি পশু আমদানি বন্ধ থাকার পর টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ করিডরে আবারো গবাদি পশু আমদানি শুরু হয়েছে। গতকাল শনিবার ও রবিবার দুদিনে মিয়ানমার থেকে গবাদি পশু বোঝাই আটটি ট্রলার শাহপরীর দ্বীপে এসেছে।

পশু আমদানি কারকরা জানিয়েছেন, সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে এসব পশু বেচাকেনা করা হবে। তবে করিডরে কোনো ধরনের জনসমাগম করতে দেওয়া হবে না।

স্থলবন্দর শুল্ক বিভাগ সূত্রে জানা যায়, শনিবার ও রবিবার দুই দিনে মিয়ানমার থেকে ৭টি গবাদি পশু বোঝাই ট্রলার শাহপরীর দ্বীপ করিডরে এসেছে। এসব ট্রলারে ৩২১টি পশু আমদানি হয়েছে। প্রতিটি পশু ৫০০ টাকা হারে একলক্ষ ষাট হাজার পাঁচ শ টাকা রাজস্ব আদায় করে পশুগুলো বিক্রির জন্য করিডরে প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

আমদানিকারকরা জানিয়েছেন, করোনাভাইরাসের কারণে আগের মতো দেশের বিভিন্ন শহর থেকে ক্রেতারা সরাসরি পশু কিনতে আসবে না। পশুগুলো সম্ভাব্য ক্রেতাদের কাছে ছবি ও ভিডিও পাঠিয়ে দরদাম করে বিক্রি করা হবে। বিক্রি হলেই ক্রেতার ঠিকানা ট্রাকে করে সেগুরো পৌঁছে দেওয়া হবে।

টেকনাফ স্থলবন্দর শুল্ক কর্মকর্তা আবছার উদ্দীন জানান, মিয়ানমার থেকে গবাদি পশুসহ অন্যান্য খাদ্য পণ্য আমদানিতে কোনো ধরনের বাঁধা নেই। মিয়ানমার থেকে যেসব গবাদি পশু আমদানি হয়েছে সেগুলো নিয়ম মেনে রাজস্ব আদায় করা হবে। তবে পশু আমদানির ক্ষেত্রে করিডরে সামাজিক দূরত্ব লঙ্ঘন হয় এমন কোনো পরিস্থিতি সৃষ্টি করা যাবে না। এ ব্যাপারে আমদানিকারকদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

গবাদি পশু আমদানিকারক আব্দুল্লাহ মনির বলেন, মিয়ানমার থেকে গবাদি পশু আসলেও বাইরের কোনো বেপারি এলাকায় ঢুকতে দেওয়া হবে না। দেশের বিভিন্ন শহরের বেপারীদের কাছে মোবাইলে পশুর ছবি ও ভিডিও পাঠিয়ে এসব পশু বিক্রি করা হবে।

গবাদি পশু আমদানিকারক মো. জুবাইর বলেন, করোনাভাইরাসের বিষয়টি সামনে রেখে গবাদি পশুর ট্রলারে আসা মিয়ানমারের কোনো শ্রমিক বা মাঝিমাল্লাকে ট্রলার থেকে নামতে দেওয়া হয় না, পশুগুলো স্থানীয় শ্রমিক দিয়ে খালাস করে ট্রলারটি সঙ্গে সঙ্গে মিয়ানমার ফেরত পাঠানো হয়েছে।

শাহপরীর দ্বীপ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই দীপক বিশ্বাস কালের কণ্ঠকে বলেন, করিডরে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার ক্ষেত্রে কঠোরতা অবলম্বন করা হচ্ছে। সেখানে কোনো ধরনের জনসমাগম করতে দেওয়া হচ্ছে না। এ ছাড়া মিয়ানমার থেকে ট্রলারে আসা শ্রমিক ও মাঝিমাল্লাদের ট্রলার থেকে নামতেও নিষেধ করা হয়েছে। তারা শুধু পশু গুলো খালাস করে ফিরে যাবেন।

এদিকে মিয়ানমার থেকে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর আবারো গবাদি পশু আমদানি শুরু হওয়াতে আমদানিকারকদের পাশাপাশি স্থানীয় শ্রমিকরাও খুশি হয়েছেন। পশু আমদানি শুরু হওয়াতে আবারো তাদের রোজগারের পথ খুলবে বলে তারা জানান।