শফিউল আলম, রাউজানঃ চট্টগ্রামের রাউজান- রাঙামাটি মহাসড়কে মাসিক টোকেন’ দিয়ে বিভিন্ন যানবাহন থেকে চাঁদা আদায় করার অভিযোগ পাওয়া গেছে হাইওয়ে পুলিশের বিরুদ্ধে। হাইওয়ে পুলিশের এই টোকেন বাণিজ্যর সাথে আরো জড়িত রয়েছে দালাল চক্র একজন রাশেদ ড্রাইভার ও জলিল নগর টেক্সী চালক সমিতির লাইনম্যান রায়হান। তার দু”জন হাইওয়ে পুলিশের নামে ফিটনেস বিহীন যানবাহন, লাইসেন্স বিহীন সিএনজি অটোরিকশা থেকে মাসিক হারে ৫০০ টাকার টোকেন দিয়ে নেন চাঁদা। অভিযোগ রয়েছে রাঙামাটি মহাসড়কে চলাচলকারী সিএনজি অটোরিকশা, চাঁদের গাড়ি, টমটম, ট্রাক, পিকআপ থেকে চাঁদা আদায়ে মাসিক টোকেন বাণিজ্য করা হয়।
পুলিশ চাঁদার জন্য চলাচলরত যানবাহন আটক করে গাড়ি চালকের ড্রাইভিং লাইসেন্স ও গাড়ি কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করা হয়। কারো গাড়ির কগজপত্র ঠিক থাকলেও ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই, এসব গাড়ি ছাড়েন টাকা নিয়ে। আবার চাঁদা আদায়ে ব্যর্থ হলে দেওয়া হয় মামলা। তবে চাঁদার হিসাব-নিকাশ ঠিকঠাক থাকলে ‘সাতখুন’ মাফ-এমনটি জানালেন ভুক্তভোগি চালকরা।
প্রতিদিন এ মহাসড়কে পার্বত্য জেলার রাঙ্গামাটি ও খাগড়াছড়ি জেলা হতে কাঠ, বাঁশ, মাটি ও ইট বোঝায় তিন শতাধিক ট্রাক চলাচল করে থাকে। একই ভাবে চট্টগ্রাম নগরী থেকে খাদ্য সামগ্রী নিয়ে দুই শতাধিক ট্রাক চলাচল করে থাকে এ সড়ক দিয়ে। হাইওয়ে পুলিশ এসব গাড়ি থামিয়ে টাকা নিয়ে ছেড়ে দিতে দেখা যায়।স্থানীয়রা জানান, রাউজান রাবার বাগান ঢালারমুখ, পশ্চিম গহিরা, কুন্ডেশ্বরী এলাকায় হাইওয়ে পুলিশ প্রতিদিন সড়কে চলাচলকারী যানবাহন থামিয়ে চাঁদা আদায় করে। ফিটনেস বিহীন যানবাহন, লাইসেন্স বিহীন যানবাহন, টমটম, সিএনজি অটোরিক্সা থেকে মাসোহারা নিয়ে অবৈধভাবে যানবাহন চলাচলে সহায়তা করে হাইওয়ে থানার পুলিশ। চট্টগ্রাম রাঙামাটি মহাসড়ক চলাচলকারী প্রতি সিএনজি অটোরিকশা থেকে প্রতি মাসে মাসোহারা নেন ৪০০-৫০০টাকা করে।প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা এবং সন্ধ্যা থেকে রাত অব্দি সড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে দাঁড়িয়ে মালবাহী ও অন্যান্য গাড়ি থেকে চাঁদা উত্তোলন করেন এ হাইওয়ে থানা পুলিশের কর্তারা। গত ১৯ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার সকালে রাউজান রাবার বাগান এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষার নামে যানবাহন থামিয়ে টোকেন বাণিজ্য, চাঁদা আদায় করতে দেখা গেছে। নাঈম উদ্দিন নামে এক সিএনজি চালক অভিযোগ করেন, অনেক দুঃখ কষ্ট করে সিএনজি চালিয়ে, যে টাকা আয় হয় তাহা দিয়ে সংসার চলে। বৃহস্পতিবার রাবার বাগান এলাকায় হাইওয়ে পুলিশ গাড়ি আটক করে আমার থেকে ৪০০ টাকা নিয়ে সাদা কাগজে গাড়ি নং ১৩.৯৮২৫ তারিখ ১৯/১২/২৪- ১৯/০১/২৫ লিখে একটি টোকেন দেয়। ৪০০টাকা ইনকাম করতে অনেক কষ্ট হয়েছে বলেও জানান তিনি। টোকেন বাণিজ্য কয়েকজন দালাল, দালাল চক্রের সদস্যরা রাউজান জলিল নগর বাস ষ্টেশন, মুন্সির ঘাটা, গহিরা চৌমুহনী এলাকায় ঘুরে সিএনজি অটোরিক্সা চালকদের কাছে হাইওয়ে পুলিশের টোকেন বিক্রয় করেন। যে সব সিএনজি অটোরিক্সা চালক হাইওয়ে পুলিশের টোকেন নেয়না, তাদের আটক করে চাদাঁ আদায় করেন। ফিটনেস বিহীন সিএনজি অটোরিক্সা, ড্রাইভিং লাইসেন্স বিহিন চালক হাইওয়ে পুলিশের টোকেন নিয়ে সড়কে অবাধে সিএনজি অটোরিক্সা চালালে ও তাদের আটক করেন হাইওয়ে পুলিশ।শ্রমিক নেতা ওসমান বলেন, রাঙামাটি মহাসড়কের পথে পথে চাঁদা গুনতে হচ্ছে গাড়িচালকদের। পথে পথে গাড়ি চালকদের থেকে চাঁদা ও টোকেন বাণিজ্য বন্ধ করতে হবে। আমরা শুধু সমিতিতে চালকদের কল্যাণে চাঁদা দিবো, এর বাহিরে কাউকে চাঁদা দিবো না। রাঙামাটি মহাসড়কে চাঁদাবাজি বন্ধ না করলেই আন্দোলন করবো। এবিষয়ে টহলে থাকা হাইওয়ে থানার এসআই তছলিম উদ্দিন বলেন, আমি না থাকার ফাঁকে আমাদের সহকর্মী কেউ এই কাজ করেছে। তবে হাইওয়ে পুলিশ কোনো চাঁদাবাজি, টোকেন বাণিজ্য করে না।রাউজান হাইওয়ে থানার (ওসি) আসাদুজ্জামান হাওলাদার বলেন, হাইওয়ে পুলিশ টোকেন বাণিজ্য করে না। যারা আমাদের নামে চাঁদা আদায় করে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।