দ্বিগুণ দামে মাল্টা বিক্রি বন্ধ হয়নি

জরিমানার পরেও চট্টগ্রামে ফলের বৃহত্তম পাইকারি বাজার ফলমণ্ডিতে প্রায় দ্বিগুণ দামে মাল্টা বিক্রি বন্ধ হয়নি। তবে ভ্রাম্যমাণ আদালতের চোখ ফাঁকি দিয়ে ফের জরিমানা এড়াতে অভিনব কারসাজির আশ্রয় নিচ্ছেন আড়তদাররা।

আড়তদাররা খুচরো বিক্রেতাদের মাল্টা বিক্রির সময় ১৫ কেজির এক কার্টন মাল্টার দাম রশিদে (ক্যাশ মেমো) ১ হাজার ৫০০ টাকা লিখলেও এই পরিমাণ মাল্টার বিপরীতে আদায় করছেন ২ হাজার ৪০০ টাকা।

ভ্রাম্যমাণ আদালতের জরিমানা থেকে বাঁচতে ভুয়া ক্যাশ মেমোর মাধ্যমে প্রতিকেজি মাল্টার দাম ১০০ টাকায় বিক্রির তথ্য সংরক্ষণ করা হলেও আসলে তা বিক্রি করা হচ্ছে ১৬০ টাকায়।

মঙ্গলবার (৬ মে) ফলমণ্ডিতে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে মাল্টা ব্যবসায়ীদের এ অভিনব কারসাজি ধরা পড়ে। অভিযানে নেতৃত্ব দেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. তৌহিদুল ইসলাম।

ম্যাজিস্ট্রেট মো. তৌহিদুল ইসলাম জানান, ফলমণ্ডিতে অভিযানের পর মাল্টার দাম খুচরো পর্যায়ে যাচাই করতে রিয়াজুদ্দিন বাজারে অভিযান পরিচালনা করি। সেখানে কয়েকজন বিক্রেতা আমাদের জানান, তারা এখনো ফলমণ্ডি থেকে কেজি প্রতি ১৫০-১৬০ টাকায় মাল্টা কিনছেন।

‘খুচরো বিক্রেতাদের সঙ্গে নিয়ে আমরা ফলমণ্ডিতে ফের অভিযানে যাই। এ সময় ফলমণ্ডিতে মাল্টার আড়তদারদের ভুয়া ক্যাশ মেমোর মাধ্যমে বেশি দামে মাল্টা বিক্রির কারসাজির বিষয়টি ধরা পড়ে।’

ম্যাজিস্ট্রেট বলেন, প্রতি কেজি মাল্টা ৬৫-৭০ টাকায় আমদানি করে ফলমণ্ডিতে তা ৮০-৮৫ টাকায় এবং খুচরো পর্যায়ে ৯০-৯৫ টাকায় বিক্রি হওয়ার কথা। কিন্তু আমদানিকারক এবং ফলমণ্ডির আড়তদাররা মিলে মাল্টার দাম ইচ্ছেমতো নির্ধারণ করছেন।

তিনি বলেন, ফলমণ্ডিতে কয়েক দফা অভিযান চালিয়ে সোয়া লাখ টাকা জরিমানার পর আড়তদাররা কেজি প্রতি মাল্টা ১০০ টাকায় বিক্রি করতে বাধ্য হন। পেপারলেস মার্কেট ছেড়ে তাদের মাল্টা কেনাবেচার ক্যাশ মেমো সংরক্ষণ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়।

‘মূলত ভ্রাম্যমাণ আদালতের চোখ ফাঁকি দিতেই তারা মাল্টা বিক্রির এইসব ভুয়া ক্যাশ মেমো তৈরে করছিলেন।’

অভিযানে ভুয়া ক্যাশ মেমো তৈরি করে দ্বিগুণ দামে মাল্টা বিক্রির দায়ে মাল্টার আড়তদার আল আমিন ট্রেডার্সকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। অভিযানের খবর পেয়ে কয়েকজন আড়তদার পালিয়ে যান।

একাধিকবার সতর্ক করার পরেও এ বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়ায় ফল ব্যবসায়ী সমিতির নেতাদের কাছ থেকে মুচলেকা আদায় করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।

অভিযানে জেলা প্রশাসনের আরেক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট গালিব চৌধুরী এবং সেনাবাহিনী ও পুলিশের সদস্যরা অংশ নেন।