কাপ্তাইয়ে তঞ্চঙ্গ্যা ভাষা-বর্ণমালা সংরক্ষণ-প্রসারে দুটি পুস্তকের মোড়ক উন্মোচন

মোঃ নজরুল ইসলাম লাভলু, কাপ্তাই (রাঙামাটি): তঞ্চঙ্গ্যা ভাষা, বর্ণমালা ও সাহিত্য সংরক্ষণ, প্রচার ও প্রসারের লক্ষ্যে দুটি পুস্তকের মোড়ক উন্মোচন করা হয়েছে। কাপ্তাই উপজেলা সদর বড়ইছড়ি তঞ্চঙ্গ্যা ছাত্রাবাসে “বাংলাদেশ তঞ্চঙ্গ্যা কল্যাণ সংস্থার” কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই দুটি পুস্তকের মোড়ক উন্মোচন করা হয় গত বৃহস্পতিবার (১0 অক্টোবর) বিকেলে। পুস্তক দুটির মধ্যে একটি তঞ্চঙ্গ্যা বর্ণমালা শিক্ষা বিষয়ক পুস্তক হলো “আধুনিক তঞ্চঙ্গ্যা বর্ণমালা শিক্ষা” এবং অপরটি তঞ্চঙ্গ্যা ভাষায় রচিত প্রথম কাহিনীকাব্য “পেয়ংখুলা’ব ছ”। গ্রন্থ দুটি রচনা করেন তঞ্চঙ্গ্যা সম্প্রদায়ের অন্যতম জনপ্রিয় সাহিত্যিক ও ভাষাকর্মী শ্রী চন্দ্রসেন তঞ্চঙ্গ্যা। গ্রন্থ দুটি প্রকাশ করেন অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংকার শ্রী অমল বিকাশ তঞ্চঙ্গ্যা।

মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ তঞ্চঙ্গ্যা কল্যাণ সংস্থা কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি দীপ্তিময় তালুকদার, সম্মানিত অতিথি ছিলেন ১০০ নং ওয়াগ্গা মৌজার হেডম্যান অরুন তালুকদার, বিশেষ অতিথি ছিলেন কাপ্তাই অঞ্চলের সভাপতি অজিত কুমার তঞ্চঙ্গ্যা, দেবতাছড়ি-রৈস্যাবিলি অঞ্চলের সাধারণ সম্পাদক অপূর্ব কুমার তঞ্চঙ্গ্যা, সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. জয়ধন তঞ্চঙ্গ্যা।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ওয়াগ্গা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুবিমল তঞ্চঙ্গ্যা, রাঙামাটি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউটের নৃত্য প্রশিক্ষক সুফলা তঞ্চঙ্গ্যা, সুজন তঞ্চঙ্গ্যা সহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ। উপস্থিত অতিথিবৃন্দ এমন একটি কল্যাণকর অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য প্রকাশক, আয়োজক অমল বিকাশ তঞ্চঙ্গ্যাকে সাধুবাদ এবং ভবিষ্যতেও এই ধারা অব্যাহত রাখার আহবান জানান।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে অমল বাবু জানান, লেখকের সাথে পূর্বে পরিচয় ছিল না। লেখকের প্রকাশিত “পাত্তুরু তুরু” কাব্যগ্রন্থ পাঠ করে তিনি তার পরিচয় জানতে কৌতুহল বোধ করি। অতপর ২০২৩ সালে লেখকের সম্পাদিত তঞ্চঙ্গ্যা গানের সংকলন “চিত্রাংফুল” প্রকাশ করেন। সেই ভালোবাসা থেকে এবছর লেখকের এই দুটি গ্রন্থ প্রকাশ করেন।
শিক্ষক সুবিমল তঞ্চঙ্গ্যা তার বক্তব্যে বলেন, সাহিত্য রচনা এত সহজ নয়। চাইলে যে কেউ সাহিত্য রচনা করতে পারে না। সাহিত্য রচনার জন্য প্রয়োজন প্রচুর ধৈর্য, পরিশ্রম ও মেধা।
ডা. জয়ধন তঞ্চঙ্গ্যা ও অপূর্ব কুমার তঞ্চঙ্গ্যা নিজ এলাকার সাহিত্যিক হিসেবে চন্দ্রসেন তঞ্চঙ্গ্যাকে নিয়ে গর্ববোধ করেন। ডা. জয়ধন বাংলাদেশ তঞ্চঙ্গ্যা কল্যাণ সংস্থার কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্যোগে লেখককে সম্মাননা প্রদানের আহ্বান জানান।
সংগীত শিল্পী সুমনা তঞ্চঙ্গ্যা বলেন, লেখকের আরও দুটি গ্রন্থ আর্থিক দৈন্যতায় প্রকাশ করা সম্ভব হচ্ছে না। তিনি সামর্থ্যবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানালে প্রধান অতিথি দীপ্তিময় তালুকদার একটি পুস্তক নিজ খরচে ছাপানোর আগ্রহ প্রকাশ করেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে দীপ্তিময় তালুকদার বলেন, তঞ্চঙ্গ্যা জাতির ভাষা, বর্ণমালা ও সাহিত্যকে টিকিয়ে রাখতে হলে সামর্থ্যবান সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। যারা সাহিত্য, সাংস্কৃতি, সংগীত নিয়ে কাজ করে তাদেরকে উৎসাহিত করার আহ্বান জানান তিনি।