রাউজান মডেল মসজিদের জায়গা দখলে মালিক, অধিগ্রহণের টাকা কোথায়!

শফিউল আরম, রাউজানঃ চট্টগ্রামের রাউজানে ভূমি অধিগ্রহণ ছাড়াই মডেল মসজিদ নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। মসজিদটির সামনের অংশে টিনের বেড়া দিয়ে দখলে নিয়েছে জায়গার মালিক পক্ষের এক অংশীজন। ৪৮ শতক জমি অধিগ্রহণের টাকা প্রদান করার কথা জানিয়েছেন চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এল এ) এ. কে.এম গোলাম মোর্শেদ খান। তবে গত রবিবার পর্যন্ত মডেল মসজিদের অধিগ্রহণের টাকা পাননি বলে জানিয়েছেন জমির অংশীজন মো. রুবেল। মালিক পক্ষ অধিগ্রহণের টাকা না পেলে টাকা গেল কার পকেটে। এমন প্রশ্ন এখন সবার মুখে মুখে। এদিকে নির্মাণ কাজের প্রায় ৯০ শতাংশের বেশি কাজ শেষ হলেও আদৌ ভূমি অধিগ্রহণ হয়েছে কি না তা জানা নেই ইসলামিক ফাউন্ডেশন ও গণপূর্ত বিভাগ কর্তৃপক্ষের।

সূত্র মতে, গত ২০২০ সালে ১২ কোটি ৭৬ লাখ টাকা ব্যয়ে গণপূর্ত বিভাগের আওতায় রাউজান পৌরসভার জলিল নগরে তিন তলা বিশিষ্ট রাউজান উপজেলা মডেল মসজিদ ও ইসলামি সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণকাজ শুরু হয়েছিল। সরেজমিন পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায়, প্রায় ৯০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। বর্তমানে কিছু রংয়ের কাজ, ইলেকট্রিক শো ফিটিং এবং বাথরুমের শো ফিটিংসহ অন্যন্য কাজ বাকী আছে। তবে হাসিনা সরকার পতনের পর কাজ বন্ধ রয়েছে। ঠিকাদার লাপাত্তা বলে জানা গেছে। খবর নিয়ে জানা যায়, রাউজান মডেল মসজিদটি নির্মাণ করা হয়েছে স্থানীয় জায়গার মালিক মঈন উদ্দিন রুমি এবং মো. আলীর ওয়ারিশগণ। যাদের জায়গার উপর মডেল মসজিদ নির্মাণ করা হচ্ছে তারা ভূমির মূল্যবাবদ টাকা এবং ক্ষতিপূরণ পেতে লাখ টাকা খরচ করেও পাননি বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী মো. আলীর ছেলে রুবেল। তিনি বলেন, ‘আমাদের ৩৭ শতাংশ জায়গা ছিল। ১৯ শতক জায়গায় মসজিদ নির্মাণ করা হয়েছে। সামনে ১৮ শতাংশ খতিয়ানভুক্ত জায়গা খালি আছে। সরকার পতন হওয়ার পর মসজিদের সামনের অংশ দখল করেছি। বর্তমানে টিনের বেড়া দিয়ে রেখেছি।

ভবিষ্যতে বহুতল ভবন করার পরিকল্পনা আছে। অন্যদিকে মঈন উদ্দিন রুমির পরিবারও টাকা পায়নি বলে দাবি করেছেন তার আপন ভাই সৌমি। গণপূর্ত অধিদপ্তর চট্টগ্রাম’র নির্বাহী প্রকৌশলী জহির রায়হান বলেন, ‘ভূমি অধিগ্রহণ প্রজেক্ট নির্মাণ সম্ভব না। ভূমির বিষয়টি ইসলামিক ফাউন্ডেশন দেখে। ইসলামিক ফাউন্ডেশন চট্টগ্রাম’র পরিচালক বোরহান উদ্দিন বলেন, ‘মসজিদ নির্মাণ হওয়ার পরেই আমাদের বুঝিয়ে দেয়া হয়। ভূমি অধিগ্রহণের বিষয়টি চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের ভূমি অধিগ্রহণ (এল.এ) ডিসি অফিসের বিষয়। এই প্রসঙ্গে জানতে চাইলে চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এল এ) এ. কে.এম গোলাম মোর্শেদ খান বলেন, ‘রাউজান মডেল মসজিদের জন্য ৪৮ শতাংশ জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছিল। যাদের কাছ থেকে অধিগ্রহণ করা হয়েছিল তাদের টাকা প্রদান করা হয়েছে। যদি কেউ দাবি করে থাকে আমাদের অফিসে যোগাযোগ করতে বলবেন। মসজিদের সামনের অংশে সরকারি খাস জমি থাকতে পারে। হয়তো খাস জমি কেউ দখলদার হিসেবে দখল করেছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।