বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে করা নাইকো দুর্নীতি মামলায় পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণ ১০ অক্টোবর দিন ধার্য করেছেন আদালত।
মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৯ এর বিচারক মুহম্মদ আলী আহসান এ আদেশ দেন।
এদিন আদালতে বাপেক্সের এমডি আব্দুল বাকী সাক্ষ্য দেন। এদিন তার সাক্ষ্য শেষ হওয়ায় আদালত পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য ১০ অক্টোবর দিন ধার্য করেন। এ মামলায় ৬৮ জন সাক্ষীর মধ্যে ৫ জনের সাক্ষ্য শেষ হলো।
৮ সেপ্টেম্বর খালেদা জিয়াসহ আট জনের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া এ মামলায় তদন্ত কর্মকর্তাসহ রাষ্ট্রপক্ষের সব সাক্ষীকে ১২ সেপ্টেম্বরের মধ্যে হাজির করতে দুদককে নির্দেশ দেন আদালত।
ওইদিন খালেদা জিয়ার অন্যতম আইনজীবী মো. জাকির হোসেন ভূঁইয়া মামলার সাক্ষীদের জবানবন্দি বন্ধের আবেদন করলে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৯-এর বিচারক শেখ হাফিজুর রহমান এ আদেশ দেন।
ওই সময় জাকির আদালতকে বলেন, গত তিনটি শুনানিতে প্রসিকিউশন কোনো সাক্ষীকে হাজির করতে ব্যর্থ হয়েছে, তাই সাক্ষীদের জবানবন্দি রেকর্ড বন্ধ হওয়া প্রয়োজন। ৩ সেপ্টেম্বর এ মামলায় সাক্ষী না আসায় পরবর্তী শুনানি ৮ সেপ্টেম্বর ধার্য করেন আদালত।
১৪ মে কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে অবস্থিত ঢাকার নয় নম্বর (অস্থায়ী) বিশেষ জজ আদালতে এ মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ আটজনের বিরুদ্ধে বাপেক্সের সাবেক এমডি মো. আব্দুল বাকী আদালতে সাক্ষ্য দেন। তবে তার সাক্ষ্য শেষ না হওয়ায় বাকি সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য ১১ জুন দিন ধার্যও করা হয়।
এর আগে গত বছরের ১৯ মার্চ একই আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন।
২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বর দুদকের তৎকালীন সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ মাহবুবুল আলম তেজগাঁও থানায় খালেদা জিয়াসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। কানাডিয়ান প্রতিষ্ঠান নাইকোর সঙ্গে অস্বচ্ছ চুক্তির মাধ্যমে রাষ্ট্রের আর্থিক ক্ষতিসাধন ও দুর্নীতির অভিযোগে এ মামলা করা হয়।
২০০৮ সালের ৫ মে খালেদা জিয়াসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে দুদক। এতে তাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রের প্রায় ১৩ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকা আর্থিক ক্ষতিসাধনের অভিযোগ আনা হয়।
খালেদা জিয়া ছাড়াও মামলার অন্য সাত আসামি হলেন-তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব খন্দকার শহীদুল ইসলাম, সাবেক সিনিয়র সহকারী সচিব সি এম ইউছুফ হোসাইন, বাপেক্সের সাবেক মহাব্যবস্থাপক মীর ময়নুল হক, ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুন, ইন্টারন্যাশনাল ট্রাভেল করপোরেশনের চেয়ারম্যান সেলিম ভূঁইয়া ও নাইকোর দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট কাশেম শরীফ।
এছাড়া বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ হোসেন ও বাপেক্সের সাবেক সচিব মো. শফিউর রহমান মারা যাওয়ায় মামলার দায় থেকে তাদের অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।
দুদকের অভিযোগপত্রে বলা হয়, ২০০১ থেকে ২০০৬ সালে ক্ষমতায় থাকাকালে খালেদা জিয়াসহ বেশ কয়েকজন ব্যক্তি ক্ষমতার অপব্যবহার করে কানাডার কোম্পানিটিকে অবৈধভাবে গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলনের সুবিধা পাইয়ে দেন। অভিযোগপত্রে আসামিদের বিরুদ্ধে প্রায় ১৩ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকার রাষ্ট্রীয় আর্থিক ক্ষতির অভিযোগ আনা হয়।