চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে একটি বসতবাড়ি থেকে ১২ ফুট লম্বা একটি অজগর উদ্ধার করা হয়েছে।
গতকাল সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) উপজেলার হিঙ্গুলী ইউনিয়নের ধুমঘাট হাজী চাঁন মিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের পাশ থেকে অজগরটি উদ্ধার করা হয়। বিশালদেহী অজগরটির ওজন ২৩ কেজি।
ফরেস্ট অফিস সূত্রে জানা গেছে, সোমবার বিকেলে ধুমঘাট হাজী চাঁন মিয়া স্কুলের পাশের একটা বাড়িতে হাসঁ খাওয়ার সময় স্থানীয়রা জাল ফেলে অজগরটি ধরে ফরেস্ট অফিসে খবর দেয়। খবর পেয়ে সন্ধ্যায় ধুমঘাট ফরেস্ট অফিসের কর্মকর্তারা গিয়ে সাপটি উদ্ধার করে।
চট্টগ্রাম উত্তর বন বিভাগের ধুমঘাট চেক স্টেশনের ফরেস্টার মো. গাজী বাহার উদ্দিন বলেন, ধুমঘাট এলাকায় উদ্ধার হওয়া অজগরটি চট্টগ্রাম উত্তর বননিভাগের বিভাগীয় (ডিএফও) এসএম কায়সারের নির্দেশে সোমবার রাত সাড়ে ৮টায় মহামায়া ইকোপার্কের বনে অবমুক্ত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ধারণা করা হচ্ছে সাপটি বানের পানিতে লোকালয়ে চলে আসছে।
বাংলাদেশ অধিদপ্তরের বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা এবং তরুণ বন্যপ্রাণী গবেষক জোহরা মিলা জানান, অজগর নির্বিষ সাপ। এটি নিশাচর ও খুবই অলস প্রকৃতির, প্রয়োজন ছাড়া নড়াচড়াও করে না। এই প্রজাতিটি গাছে একাকী বাস করলেও শুধু প্রজননকালে জোড়া বাধে। সাধারণত মার্চ থেকে জুনের মধ্যে এদের প্রজননকাল। দেশের ম্যানগ্রোভ বন, ঘাসযুক্ত জমি, চট্টগ্রাম ও সিলেটের চিরসবুজ পাহাড়ি বনে এদের দেখা পাওয়া যায়। সাপটি সাধারণত মানুষের ক্ষতি করে না। খাদ্য হিসেবে এরা ইঁদুর, কচ্ছপের ডিম, সাপ, বন মুরগি, পাখি, ছোট বন্যপ্রাণী ইত্যাদি খায়। সাপটি নিজের আকারের চেয়েও অনেক বড় প্রাণী খুব সহজেই গিলে খেতে পারে।
জোহরা মিলা বলেন, চামড়ার জন্য সাপটি পাচারকারীদের লক্ষবস্তুতে পরিণত হয়েছে। ফলে আমাদের বনাঞ্চল থেকে এটি দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে। বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন-২০১২ এর তফসিল-২ অনুযায়ী এ বন্যপ্রাণীটি সংরক্ষিত, তাই এটি হত্যা বা এর যে কোনো ক্ষতি করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ।