জেমস ওয়েব এর ‘বেয়াড়া জগৎ’

জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা জেমস ওয়েব মহাকাশ টেলিস্কোপ ব্যবহার করে কোনো তারকাকেই প্রদক্ষিণ করে না—এমন ছয়টি ‘বেয়াড়া বিশ্ব’ আবিষ্কার করেছেন। মহাজাগতিক এই কাঠামোগুলো আমাদের সৌরজগতের বৃহস্পতি গ্রহের চেয়ে খানিকটা বড়। জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা এগুলোকে পর্যবেক্ষণ করে মহাবিশ্বে কিভাবে গ্রহ ও নক্ষত্র গঠিত হয়, সে ব্যাপারে নতুন তথ্য পাচ্ছেন।

শক্তিশালী টেলিস্কোপ জেমস ওয়েব ৯৬০ আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত এনজিসি ১৩৩৩ নামের একটি নেবুলার ভেতরে নজর দিয়েছে।

নেবুলা হচ্ছে গ্যাস ও ধুলার মতো উপকরণের সুবিশাল মেঘ, যার ভেতরে নক্ষত্রের জন্ম হয়। এনজিসি ১৩৩৩ নামের নেবুলাটি আবার পার্সিউস আণবিক মেঘ নামে আরো বড় এক নেবুলার মধ্যে অবস্থিত। নেবুলার ভেতরে ওলটপালটের কারণে সৃষ্টি হওয়া জট মহাকর্ষের প্রভাবে ধসে পড়ে। এভাবেই জন্ম হয় তারার।

মহাকাশে অবস্থানরত জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ মহাজাগতিক মেঘটির এক নাটকীয় ও জ্বলজ্বলে চিত্র পাঠিয়েছে। আগের হাবল মহাকাশ টেলিস্কোপ এই নেবুলার ছবি তুললেও ধুলার কারণে তখন সেখানে তারা গঠনের প্রক্রিয়া ভালোভাবে বোঝা যায়নি। তবে অনেক উন্নতমানের লেন্সসম্পন্ন ওয়েব টেলিস্কোপ ধুলার ভেতর দিয়েই ছবি তুলতে পেরেছে। এই টেলিস্কোপটি মহাবিশ্বকে অতিবেগুনি রশ্মির মধ্য দিয়ে দেখতে সক্ষম।

ওয়েবের তোলা ছবিতে নেবুলাটির ভেতরে নতুন জন্ম নেওয়া নক্ষত্র, ব্রাউন ডোয়ার্ফ (গ্রহ ও নক্ষত্রের মাঝামাঝি কাঠামো) এবং গ্রহের মতো ভরের বস্তু দেখা গেছে। এগুলোর সবই বৃহস্পতি গ্রহের চেয়ে ৫ থেকে ১০ গুণ বড়। এই গবেষণাটির ফলাফল দ্য অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল জার্নালে প্রকাশিত হবে। এর জ্যেষ্ঠ লেখক রে জয়বর্ধনা বলেন, ‘আমরা একটি নবীন তারাগুচ্ছের সবচেয়ে ছোট ও ক্ষীণ সদস্যটিকেও দেখতে জেমস ওয়েবের সক্ষমতাকে কাজে লাগিয়েছি। এর লক্ষ্য ছিল জ্যোতির্বিজ্ঞানের একটি মৌলিক প্রশ্নের জবাব পাওয়া।

সেটি হচ্ছে, কত হালকা বস্তুর পক্ষে নক্ষত্রে পরিণত হওয়া সম্ভব। দেখা গেছে, নক্ষত্রে রূপ নিচ্ছে এমন সবচেয়ে ছোট মুক্তভাবে চলা বস্তুগুলোর ভর সেখানে থাকা গ্রহগুলোর গড় ভরের প্রায় সমান।’

সূত্র : সিএনএন