অন্যরকম প্রথম রোজা, খোলেনি ইফতারির দোকান

করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ‘লকডাউন’ চলার মধ্যেই মুসলিমদের জন্য ‘পবিত্র রমজান মাস’ শুরু হয়েছে। রমজান রহমত, বরকত, মাগফিরাত ও নাজাতের মাস। হিংসা-বিদ্বেষ, হানাহানি, অহংবোধ ভুলে গিয়ে সুখী, সুন্দর ও সমৃদ্ধিশালী সমাজ প্রতিষ্ঠার মাস হচ্ছে এটি। রমজান মাস হচ্ছে অনাবিল আনন্দের। কিন্তু বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের এ মহাদুর্যোগেই দেশে রমজানের প্রথম রোজা অতিবাহিত হচ্ছে। ভাইরাস সংক্রমণের বিস্তার রোধে সাধারণ ছুটি বলবৎ থাকায় অনেক গৃহবন্দি হয়ে কর্মহীন অবস্থায় দূর্বিষহসহ জীবন অতিবাহিত করছে।

প্রতিবছর রমজানে অনেক উৎসবমুখর পরিবেশে রোজার আগমনের সাথে সাথে বিভিন্ন ইফতার সামগ্রীসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস খরিদ করতে দেখা যেতো, সজিতো নানা পণ্যের পসরা কিন্তু এবার পরিস্থিতি ভিন্ন।

১ম রামজানে (২৫ এপ্রিল) নগরের জিইসি মোড়, কাজীর দেউড়ি, চকবাজার, এনায়েতবাজার ও নিউমার্কেট ঘুরে দেখা গেছে হোটেল জামান, ওয়েল ফুড, হাইওয়ে, মিঠাই, মেজবান বাড়ি, হান্ডি, ফ্ল্যাভার, ব্রিজ, নিউ মালঞ্চের মতো অভিজাত দোকানগুলো বন্ধ রয়েছে।

ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, করোনা ভাইরাসের প্রভাবে অঘোষিত লকডাউনের কারণে তারা দোকান খুলেননি। এছাড়া প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো নির্দেশনা না আসায় দোকান বন্ধ রেখেছেন তারা।

অল্প কয়েকটি দোকান খোলা আছে সেখানে জরুরী প্রয়োজনে যারা বের হয়েছেন তারা ভীর করছেন। এমন একটি রয়েল বাংলা এনায়েত বাজার মোড়ের বোম্বেওয়ালার দোকান হিসেবে পরিচিত রয়েল বাংলা সুইট হাউসে ইফতার কিনতে মানুষের উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে। তবে ভিড়ের কারণে সামাজিক দূরত্ব, শারীরিক দূরত্বের বালাই ছিল না। ছিল না লাইনও।

বিক্রয়কর্মীরা জানান, প্রতিকেজি মাটন হালিম ৬০০ টাকা, জিলাপি ২৪০ টাকা, কাবাব ও সমুচা প্রতিটি ২০ টাকা, মালাইকারি মিষ্টি ৬০০ টাকা, হালুয়া ৪০০-৬০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।

তারা জানান, প্রতিদিন ১০টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত ইফতার বিক্রি হবে। ইফতার কিনতে আসা আলিম উদ্দিন জানান, জরুরি কাজে বের হয়েছিলেন। প্রথম রমজান তাই হালিম ও জিলাপি কিনছেন। দোকান খোলা না থাকলে কিনতেন না।

পাশেই ক্যাফে জুবিলি হোটেলের সামনের টেবিলে ইফতারির পসরা সাজিয়েছেন তারা। জানালেন, জিলাপির কেজি ২০০ টাকা, ছোলা ভাজা ১২০ টাকা, পেঁয়াজু, বেগুনি, মরিচা ৩ টাকা, কাবাব ও রোল ২০ টাকা, সমুচা ১০ টাকা বিক্রি করছেন।

কিছু ভ্যানগাড়িতে বিক্রি হচ্ছে খেজুর, শসা, লেবু, পুদিনাপাতা, কাঁচা আম, কাঁচামরিচ, ধনেপাতা, মুড়ি ইত্যাদি।

প্রতি জোড়া লেবু আকার ভেদে ১৫-৩০ টাকা, পুদিনার আঁটি ১০ টাকা, কাঁচা আম কেজি ৪০ টাকা, ধনেপাতা কেজি ৮০ টাকা, খেজুর ১৫০ থেকে ৩০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।