ঈশ্বরের ভাবনা

আলী আজগর:
ঠিক দুপুরে বউয়ের সাথে ঝগড়া করে বাড়ি থেকে বের হয়ে গেলাম। শ্মশানখোলার মাঝখানের সরু রাস্তা দিয়ে হেঁটে চলছি অজানা গন্তব্যে। মন ভাল নেই।
দু’পাশের বৃষ্টিভেজা গুল্মতলা পরনের লুঙ্গিটাকে ভিজিয়ে দিচ্ছে। ধীরে চলছি আর ভাবছি, শ্মশানের আত্মাগুলো কতই না শান্তিতে আছে!! নেই কোন বউ, নেই কোন সংসার। ঈশ্বর দুনিয়ার মানুষগুলারে শ্মশানের প্রেতাত্মা বানিয়ে দিতে পারেন না?
ভাবছি আরো কিছু বিচ্ছিন্ন ভাবনা- গতকাল শহর থেকে আসার সময় দেখলাম, গাড়ি তল্লাসী করছে ছাত্র পরিচয়ে কিছু ছোকরা। যাত্রির ব্যাগ, সিটের তলা সবকিছু। জেরা-জিজ্ঞাসা করছে যাত্রিদের। ভাবছি এমন ক্ষমতা কে দিয়েছে তাদের? একজন আদর্শ ছাত্র তো এভাবে যাত্রি হয়রানি করতে পারে না। তবে কি গণভবনে যারা লুটতরাজে জড়িত ছিল তারা এবং এরা একই মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ ??
এমন সময় লিলুয়া বাতাসের কোমল ঝাপটার সাথে পাশের শেঁওড়া গাছ থেকে লাফ দিয়ে নেমে এল স্বয়ং ঈশ্বর। আমি চিনলাম। আগে দু’বার দেখেছি তাকে।
বললাম,
“হে মহান ঈশ্বর, তোমার জগতে বউরা এত সাংঘাতিক হয় কেন? ছাত্ররাই বা এত বাচাল কেন?”
ঈশ্বর বিরক্ত হয়ে বললেন-
“আমার জগতে আমি কখনো বউ বানাই না। আমার বানানো মেয়েদেরকে বউ বানাস তোরা। বউ নিয়ে সব সমস্যা সৃষ্টি করিস তোরা। অপরদিকে আমি ছাত্র বানাই ঠিকাছে। কিন্তু ছাত্রদের বাচাল বানাস তোরা। সমাধানও তোরাই করবি। আমাকে এর মধ্যে জড়াবি না। ভাগ যা বেকুব বান্দা।”
আমি বুঝতে পারলাম-
স্বয়ং ঈশ্বরও বউ আর ছাত্রদের পক্ষে।