এবার হালদায় উদ্ধার হলো সাড়ে ১৯ কেজির মৃত মা কাতাল

শফিউল আলম, রাউজানঃ  প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন কেন্দ্র, বঙ্গবন্ধু মৎস্য হেরিটেজ চট্টগ্রামের হালদা নদী থেকে ফের মৃত কাতলা মাছ উদ্ধার করা হয়েছে। রোববার নদীর আজিমারঘাট থেকে মাছটি উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারকৃত মাছের ওজন ১৯ কেজি ৩শ গ্রাম। দৈর্ঘ্য ১শ ১৮ সেন্টিমিটার। হালদা গবেষক ও চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক কলেজের জীববিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. মো. শফিকুল ইসলাম মাছ উদ্ধারের বিষয়টি গনমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন গত শুক্রবার (২৮ জুন) হালদা নদীর উত্তর মাদার্শার কুমারখালী ঘাটে একটি মৃত কাতলা মা মাছ ও এর কিছুটা সামনে সুলতানা বাপের ঘাটে আরেকটি মৃত কাতলা মা মাছ ভেসে ওঠে। বিগত এক সপ্তাহে হালদা নদী থেকে ৫টি মৃত মা মাছ ও ১ টি মৃত ডলফিন উদ্ধার করা হয়েছে। যা হালদা নদীর জলজ বাস্তুতন্ত্রের জন্য অশনিসংকেত। হালদায় বর্তমানে মনুষ্যসৃষ্ঠ ধ্বংসাত্মক কর্মকা- যেমন: শাখাখালের মাধ্যমে হালদা সরাসরি ফেলা হচ্ছে ট্যানারীর বিষাক্ত বর্জ্য ও অন্যান্য শিল্পকারখানার বিষাক্ত বর্জ্য, পোল্ট্রি বর্জ্য, গৃহস্থালী ও মানববর্জ্য, হালদা ও শাখাখালে অবৈধভাবে জাল, বঁড়শি ও বিষ ব্যবহার করে মাছ নিধন, অবৈধ বালু উত্তোলন ইত্যাদি, বেড়ে চলছে যার সরাসরি নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে হালদা জলজ বাস্তুতন্ত্রে। এমতাবস্থায় হালদা নদীতে মা মাছ, ডলফিন ও অন্যান্য জলজ প্রাণীর নিরাপদ আবাসস্থল করতে জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় প্রশাসনিক পদক্ষেপ গ্রহন করতে হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন। রাউজান উপজেলা নির্বাহী অফিসার অংগজ্যাই মারমা বলেন, হালদা নদীতে একটি কাতলা মাছ মারা গেছে বলে আমাকে পশ্চিম গুজরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ফোন করে জানায়। পরে মৃত কাতলা মাছটি উপজেলায় নিয়ে আসেন। মাছটি হয়তো দুই তিনদিন আগে মারা গেছে, মাছিটি পচাঁ দুগ›দ্ধ বের হচ্ছে । পরে স্থানীয় চেয়ারম্যান মাছটি হালদা পাড়ের মাটির গর্তে পুতে ফেলে। রাউজান উপজেলা মৎস অফিসারকে মৃত কাতলা মাছটির বিষয়ে পরিক্ষা করে রিপোর্ট দিতে বলেছি। রিপোর্ট ফেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এবিষয়ে রাউজান উপজেলা মৎস্য অফিসার আলমগীর হোসেন বলেন, হালদায় ১৯ কেজি ৩০০ গ্রাম, দৈর্ঘ্য প্রায় ১১৮ সেন্টিমিটারের একটি কাতলা মা মাছ মারা গেছে। তবে মাছটি মরেছে ধেরি হয়েছে।তাই কি কারণে মাছটি মৃত্যু হয়েছে নদীর পানির বিভিন্ন ভৌত-রাসায়নিক গুনাগুন পরিক্ষা করে দেখতে হবে। হালদা গবেষক ও চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক কলেজের জীববিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, দূষণ, অবৈধ জাল, বঁড়শি ও বিষ দিয়ে মাছ ধরার কারণে হালদা নদীর স্বাস্থ্য ব্যবস্থা আজ মারাত্মক হুমকির মুখে পড়েছে। বিষাক্ত বর্জ্য দ্বারা হালদার জলজ বাস্তুতন্ত্রের পানির বিভিন্ন ভৌত-রাসায়নিক গুনাবলি পরিবর্তন হয়ে দূষিত করছে হালদার জলজ পরিবেশকে। নদী দূষণ থেকে হালদা জলজ বাস্তুতন্ত্রকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনার জন্য যেসব শাখাখালের মাধ্যমে হালদায় কলকারখানার বর্জ্য ফেলা হচ্ছে সেসব কারখানা চিহ্নিতপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি।