মিরসরাইয়ে নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় আহত ৬

মিরসরাই (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি :: মিরসরাই উপজেলা পরিষদ নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় ৬জন আহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (৯ মে) সকালে উপজেলার ১২নং খইয়াছরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহফুজুল হক জুনুর হামলায় ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি মো. শাখাওয়াত হোসেন (৩৫) আহত হয়েছেন। উপজেলার খৈয়াছরা ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ের ভিতরে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আহত ছাত্রলীগ নেতা শাখাওয়াত হোসেন মিরসরাই থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। শাখাওয়াত খৈয়াছরা ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের পূর্ব পোলমোগরা এলাকার আব্দুর রফ মুন্সীর বাড়ির মো. ওমর ফারুকের ছেলে। জানা গেছে, ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে বুধবার মিরসরাই উপজেলা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এতে চেয়ারম্যান পদে বিজয় লাভ করেন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক এনায়েত হোসেন নয়ন (কাপ পিরিচ)। নির্বাচনী ফলাফল শেষে প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ আতাউর রহমান (ঘোড়া) প্রতীকের সমর্থকরা পরাজিত হয়ে কাপ-পিরিচ সমর্থকদের উপর হামলা করেন। এদিকে বুধবার (৮ মে) রাত ১০টায় বাবলু এবং আফাজের নেতৃত্বে খৈয়াছরা ইউনিয়নের বড়তাকিয়া বাজারে মন্নান সওদাগরের দোকানে ভাংচুর এবং হামলা চালায় উপজেলা চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্ধিতাকারী শেখ আতাউর রহমান (ঘোড়া) প্রতীকের সমর্থকরা। হামলায় উপজেলা চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত এনায়েত হোসেন নয়নের (কাপপিরিচ) এজেন্ট আমজাদ হোসেন (৩৫), সোহরাব হোসেন সোহেল (৩০), ওয়াসিম উদ্দিন সুমন (৩৫) ও সাইফুল ইসলাম (৩০) আহত হয়। আহতদের উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ চমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আমজাদ হোসেন চমেক হাসপাতালে চিকিসাধীন রয়েছেন। বাকীরা চিকিৎসা নিয়ে বাড়িতে ফিরে এসেছেন। আহত আমজাদ হোসেন বলেন, বুধবার রাত ১০ টায় বাবলু এবং আফাজের নেতৃত্বে ২০/২৫ জনের একটি গ্রুপ এসে বড়তাকিয়া বাজার আমার দোকান মান্নান ষ্টোরে এসে অতর্কিত হামলা চালায় এবং আমার দোকানে থাকা রড় দিয়ে আমাকে এবং আমার সাথে আরও ৩জনের উপর তারা হামলা করে। তিনি আরও বলেন, আমি কেন এনায়েত হোসেন নয়নের কাপপিরিচের জন্য কাজ করেছি। আমরা কেন শেখ আতাউর রহমানের ঘোড়া সমর্থনে কাজ করি নাই এজন্য তারা আমাদের উপর হামলা করেছে। আহত খৈয়াছরা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি মো. শাখাওয়াত হোসেন বলেন, আমার জেঠাতো ভাই মো. জাহেদ (৫০) উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে এনায়েত হোসেন নয়নের কাপ পিরিচ মার্কার সমর্থনে নির্বাচনী প্রচার প্রচারণা করায় প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী শেখ আতাউর রহমানের (ঘোড়া) সমর্থক আফাজ এবং বাবলু সকালে বড়তাকিয়া বাজারে মারধর করে। আমার জেঠাতো ভাইকে মারধরের বিয়ষটি স্থানীয় চেয়ারম্যান মাহফুজুল হক জুনুকে মৌখিকভাবে জানাতে গেলে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে কিল ঘুষি, চড়-থাপ্পর ও লাথি মেরে এবং হাতে থাকা কলম দিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে। পরবর্তীতে আমার চিৎকার শুনে আশেপাশের লোকজন আমাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। শাখাওয়াত আরও বলেন, আমি যদি এ ঘটনায় মামলা করি তাহলে আমাকে পুনরায় মারধর করবে বলে হুমকি ধমকি প্রদান করছে। আমি এ হামলার বিচার চাই। এই বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে খৈয়াছরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহফুজুল হক জুনু বলেন, শাখাওয়াত নামে একজন এসে আমাকে থ্রেট মূলক কথাবার্তা বলতেছে, তখন আমি রাগান্বিত হয়ে শাখাওয়াতের গালে দুটি থাপ্পর দিয়েছি। এখানে তখন অনেক লোকজন উপস্থিত ছিলেন। মিরসরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দায়িত্বরত চিকিৎসক দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা. মো. এরশাদ উল্লাহ বলেন, বৃহস্পতিবার সকালে শাখাওয়াত হোসেন একজন হাসপাতালে এসে চিকিৎসা নিয়ে বাড়িতে চলে গেছেন। মিরসরাই থানার উিউটি অফিসার এসআই আমির হোসেন বলেন, শাখাওয়াতের উপর হামলার বিষয়ে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সহকারি রির্টানিং অফিসার ও উপজেলা নির্বাচনী কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাকির হোসেন বলেন, খইয়াছড়া ইউনিয়নে নির্বাচনী পরবর্তী সহিংসতার বিষয়ে কেউ লিখিত বা মৌখিক অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ বিষয়ে জানতে মিরসরাই উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা জাকির হোসেনের মোবাইলে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।