লক্ষ্মীপুরে বেতন-ভাতার দাবিতে শ্রমিকদের বিক্ষোভ, সড়ক অবরোধ, পুলিশের লাঠিচার্জ

লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে বেঙ্গল সু ইন্ড্রাস্ট্রিজ লিমিটেডের শ্রমিকরা বিক্ষোভ ও প্রায় ৩ ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করেছে। বেতন ও ঈদ উৎসব ভাতার দাবিতে তারা শনিবার সকাল সাড়ে ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত এ কর্মসূচি পালন করে। ওই সময় বিক্ষুব্ধরা উপজেলার রাখালিয়ায় অবস্থিত কারখানার প্রধান ফটক ও রায়পুর-লক্ষ্মীপুর আঞ্চলিক মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে। ওই সময় সড়কের দুই পাশে শতাধিক গাড়ি আটকে পড়ে যাত্রীদের চরম ভোগান্তি পড়তে হয়। এক পযায়ে পুলিশ শ্রমিকদের ওপর লাঠিচার্জ করে। পরে রাস্তা থেকে শ্রমিকরা সরে গেলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। এ সময় কমপক্ষে দশ শ্রমিক আহত হন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ইমরান খান, সহকারী পুলিশ সুপার (সার্কেল) মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল শেখ সাদী, ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইয়াসিন ফারুক মজুমদার ও ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান এড. ইউসুফ জালাল কিসমত। তাদের উপস্থিতিতে বৈঠক শেষে কর্তৃপক্ষ রোববার দুপুরের মধ্যে বেতন-ভাতা পরিশোধের আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি শান্ত হয়। এর আগে কোনো পূর্ব-ঘোষণা ও বেতন-ভাতা না দিয়েই কর্তৃপক্ষ শুক্রবার থেকে আগামী ১৫ই এপ্রিল পর্যন্ত কারখানা ছুটির ঘোষণা দিলে এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় বলে শ্রমিকরা জানিয়েছেন।

এছাড়াও কারখানার স্থায়ী কর্মকর্তা ও কর্মচারীদেরও ৬-৭ মাসের বেতন-ভাতা বকেয়া রয়েছে বলে জানা যায়। আন্দোলনরত শ্রমিক শিল্পী বেগম জানান, কারখানাটিতে ১৯শ’ ৫০ জন শ্রমিক কর্মরত। তাদের ২-৬ মাসের বেতন বাকি রয়েছে। বেতন ও ঈদ বোনাস পরিশোধ না করেই ঈদ ছুটি ঘোষণা করেন কর্তৃপক্ষ। এমন অবস্থায় ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে শ্রমিকরা। জেনারেল ম্যানেজার তাদের কোনো সদুত্তর দিতে না পারায় তারা রায়পুর-লক্ষ্মীপুর আঞ্চলিক সড়ক অবরোধ করে রাখে। বেঙ্গল সু ইন্ডাস্ট্র্রিজ লি: এর জেনারেল ম্যানেজার বিপ্লব পাল বলেন, ‘ব্যাংকিং সমস্যার কারণে রপ্তানি বিল উত্তোলন করা যায়নি। এ কারণে শ্রমিকদের সকল পাওনাদি পরিশোধ করা সম্ভব হয়নি। রোববার বিকালের মধ্যে তাদের পাওনার ১৫% পরিশোধ করা হবে। ঈদের পর মালিকপক্ষ আসলে এবং ব্যাংকিং চালু হলে সকলের দাবি-দাওয়া পূরণ করে দেয়া হবে।’ রায়পুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইয়াসিন ফারুক মজুমদার বলেন, ‘ঘটনাস্থলে গিয়ে শ্রমিক ও কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলাপ করে সড়ক থেকে অবরোধ প্রত্যাহার করানো হয়েছে। রোববার ১২টার মধ্যে শ্রমিকদের প্রাপ্যের একটি অংশ পরিশোধের বিষয়ে মালিকপক্ষ আশ্বাস দিয়েছেন। শ্রমিকদের আন্দোলন শান্তিপূর্ণ হওয়ায় সেখানে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।