৭০০ পরিবার নিরাপদ আশ্রয়ে

ভারি বর্ষণে ভূমিধসের শঙ্কায় পাহাড়ের পাদদেশে মৃত্যুঝুঁকি নিয়ে বসবাসরত ৭০০ পরিবারকে আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নিয়েছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। সোমবার (৮ জুলাই) রাত ৯ পর্যন্ত এসব পরিবারের প্রায় ২ হাজার মানুষকে জেলা প্রশাসনের তত্বাবধানে পরিচালিত বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসা হয়।
আবহাওয়া অধিদফতর ভারি বর্ষণের কারণে চট্টগ্রামে ভূমিধসের সতর্কতা জারির পর শনিবার ৮টি আশ্রয়কেন্দ্রে চালু করে জেলা প্রশাসন। পাশাপাশি নগরের সরকারি ও বেসরকারি মালিকানাধীন ১৭টি ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ের পাদদেশে মৃত্যুঝুঁকি নিয়ে বসবাসরত কয়েক হাজার লোকজনকে সরাতে মাইকিং, উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হয়।
শনিবার সন্ধ্যা থেকেই জেলা প্রশাসনের তত্বাবধানে পরিচালিত আশ্রয়কেন্দ্রে আসতে শুরু করেন পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসরত লোকজন। সোমবার রাত ৯টা পর্যন্ত ৭০৯টি পরিবারের প্রায় ২ হাজার মানুষ এসব আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন।

এর মধ্যে চান্দগাঁও সার্কেলের আওতাধীন রৌফাবাদ আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় আশ্রয়কেন্দ্রে ৬৭টি পরিবার এবং আল হেরা ইসলামিয়া মাদ্রাসা আশ্রয়কেন্দ্রে ২০০টি পরিবার আশ্রয় নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন চান্দগাঁও সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফোরকান এলাহি অনুপম।
অন্যদিকে বাকলিয়া সার্কেলের আওতাধীন লালখান বাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আশ্রয়কেন্দ্রে ১২০টি পরিবার এবং আগ্রাবাদ সার্কেলের আওতাধীন ছৈয়দাবাদ স্কুল আশ্রয়কেন্দ্রে ২০টি পরিবার আশ্রয় নিয়েছেন বলে জানান বাকলিয়া সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাবরিনা আফরিন মোস্তফা এবং আগ্রাবাদ সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) শারমিন আখতার।

এছাড়াও কাট্টলী সার্কেলের আওতাধীন কোয়াড পি-ব্লক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আশ্রয়কেন্দ্রে ৯৮টি পরিবার, ফিরোজ শাহ ই-ব্লক স্কুল আশ্রয়কেন্দ্রে ৭৯টি পরিবার, চট্টগ্রাম মডেল হাই স্কুল আশ্রয়কেন্দ্রে ৮০টি পরিবার এবং কৈবল্যধাম বায়তুল আমান মাদ্রাসা আশ্রয়কেন্দ্রে ৪৫টি পরিবার আশ্রয় নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন কাট্টলী সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. তৌহিদুল ইসলাম।
আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নেওয়া এসব পরিবারকে ৫ কেজি চাল, ১ কেজি ডাল, ১ কেজি চিনি, ১ কেজি চিড়া, ১ প্যাকেট দিয়াশলাই ও ১ প্যাকেট মোমবাতির ১ ত্রাণ প্যাকেট এবং তিন বেলা রান্না করা খিচুড়ি দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. কামাল হোসেন।

তিনি জানান, ভারি বর্ষণের কারণে ভূমিধস হলে কোনো প্রাণহানী যাতে না হয়- এ জন্য পাহাড়ের পাদদেশে থাকা লোকজনকে আমরা সরিয়ে দিচ্ছি। যাদের শহরে আত্মীয়-স্বজন আছে তারা সেখানে চলে যাচ্ছেন। অন্যদের আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসা হচ্ছে। তাদের থাকা খাওয়ায় যাতে কোনো অসুবিধা না হয় তা নিশ্চিত করা হচ্ছে।
একপ্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, পাহাড়ের পাদদেশে মৃত্যুঝুঁকি নিয়ে কাউকে আমরা বসবাস করতে দেবো না। এ জন্য স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলরসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংস্থার সহযোগিতায় আমাদের কর্মকর্তারা পাহাড়ে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করছেন। সোমবারও অভিযান চালিয়ে লোকজনকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে। নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে আসা হয়েছে।