চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর মধ্যে জাতীয় মৎস্যজীবী সমিতির অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে আর কোনো বাধা নেই মর্মে আদেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ।
রোববার (২ মার্চ) এ বিষয়ে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে করা আবেদনের শুনানি শেষে আদালত এই আদেশ দেন।
আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের চেয়ারম্যান এবং রিটকারী আইনজীবী মনজিল মোরশেদ।
চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদী রক্ষার্থে জনস্বার্থে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ (HRPB) একটি রিট পিটিশন দায়ের করে।
এ রিট পিটিশনে আদালত রায় দিয়ে নদীর ভেতরে থাকা সকল স্থাপনা উচ্ছেদের নির্দেশ দেন। রায়ের প্রেক্ষিতে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক অবৈধ স্থাপনা স্থাপনকারীদের উচ্ছেদের নোটিশ প্রদান করেন। উক্ত নোটিশ পাওয়ার পর জাতীয় মৎস্যজীবী সমিতি হাইকোর্টে একটি রিট দায়ের করে এবং স্থিতি অবস্থার আদেশপ্রাপ্ত হয়।
হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের পক্ষভুক্ত হয়ে রিট খারিজের আবেদন জানান। আদালত শুনানি শেষে রায় দিয়ে বলেন যে, হাইকোর্ট কর্তৃক প্রদানকৃত কর্ণফুলী নদী রক্ষার রায়ের নির্দেশনা পালনে কোনো বাধা নেই। উক্ত রায়ের বিরুদ্ধে জাতীয় মৎস্যজীবী সমিতি আপিল বিভাগে একটি আপিল দায়ের করেন।
শুনানি শেষে আজ আপিল বিভাগের বিচারপতি মোহাম্মদ আশফাকুল ইসলামের আপিল বিভাগের বেঞ্চ মৎস্যজীবী সমিতির আপিল খারিজ করে দেন। রায়ের পরে কর্ণফুলী নদীর ভেতরে থাকা জাতীয় মৎস্যজীবী সমিতির অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে আর কোনো বাধা নেই।
শুনানিতে HRPB এর পক্ষের কৌঁসুলি সিনিয়র অ্যাডভোকেট মনজিল মোরশেদ বলেন, কর্ণফুলী নদী রক্ষার্থে আদালতের রায় হয়ে যাওয়ার পরেও চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ কর্তৃক অবৈধভাবে নদী সীমানায় জাতীয় মৎস্যজীবী সমিতিকে লিজ প্রদান করে ব্যবহারের অনুমতি প্রদান করেছে।
তিনি আরও বলেন, আপিল বিভাগের এক রায়ে নদীর জায়গা লিজ না দেওয়ার নির্দেশনা থাকলেও এবং হাইকোর্টের রায়ে নদীর অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ মৎস্যজীবী সমিতিকে লিজ প্রদান করেছে। বন্দর কর্তৃপক্ষের কাজ হলো কর্ণফুলী নদীকে বহমান রাখা যাতে জাহাজ চলাচলে কোনো বাধা সৃষ্টি না হয়। কিন্তু তারা অবৈধ উপার্জনের জন্য কর্ণফুলী নদীর জায়গা জাতীয় মৎস্যজীবী সমিতিকে লিজ প্রদান করেছে যা সম্পূর্ণ বেআইনি।
আপিলকারী পক্ষের আইনজীবী মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, জমির মালিকানা নির্ধারিত না হওয়া পর্যন্ত আপিলকারীকে উচ্ছেদ করা যায় না এবং তিনি আরও বলেন যে জাতীয় মৎস্যজীবী সমিতি কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে বৈধ উপায়ে এই জায়গা লিজ গ্রহণ করেছে।
HRPB এর পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র অ্যাডভোকেট মনজিল মোরশেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অনিক আর হক এবং জাতীয় মৎস্যজীবী সমিতির পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মাহবুব উদ্দীন খোকন।