কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই পাকিস্তান ফিরবেন নওয়াজ শরীফ

কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই দেশে ফিরবেন পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফ। ফিরেই তিনি আইনের মুখোমুখি হবেন। এ কথা জানিয়েছেন তারই ছোটভাই ও প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ। জিও নিউজের ‘জিরগা’ প্রোগ্রামে শেহবাজ শরীফ বলেন, ২০১৯ সাল থেকে স্বেচ্ছা নির্বাসনে লন্ডনে অবস্থান করছেন তিন বারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পাকিস্তান মুসলিম লিগ-ওয়াজের (পিএমএলএন) সুপ্রিমো নওয়াজ শরীফ। ওদিকে ১২ই আগস্ট রাত ১২টায় শেষ হচ্ছে বর্তমান জাতীয় পরিষদের মেয়াদ। এ বিষয়ে পার্লামেন্ট ভেঙে দেয়া সংক্রান্ত একটি সামারি রিপোর্ট পাঠানো হবে প্রেসিডেন্টের কাছে। তারপর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে চলে যাবে ক্ষমতা। নির্বাচন হবে। সেই নির্বাচনে মিত্র দলগুলোর সঙ্গে আসন ভাগাভাগি করবে পিএমএলএন। যেসব আসনে একমত হতে পারবেন না তারা, সেসব আসনে তারাই প্রার্থী দেবেন।

পানামা পেপারস কেলেঙ্কারির জের হিসেবে ক্ষমতাচ্যুত হন নওয়াজ শরীফ।

পরে তাকে সরকারি পদে অযোগ্য ঘোষণা করে পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট। যেতে হয় জেলে। সেখান থেকে জামিনে মুক্তি পেয়ে চিকিৎসার কথা বলে উড়াল দেন লন্ডনে। সেই থেকে তিনি লন্ডনেই আছেন। কিন্তু তার দলের নেতৃত্বে বর্তমান ক্ষমতায় পাকিস্তান ডেমোক্রেটিক মুভমেন্ট (পিডিএম) জোট। তারা সম্প্রতি একজন পার্লামেন্টারিয়ানকে অযোগ্য ঘোষণার মেয়াদ সর্বোচ্চ ৫ বছর করে পার্লামেন্টে আইন পাস করেছে। প্রেসিডেন্ট ড. আরিফ আলভি হজে যাওয়ার পর তড়িঘড়ি করে ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্টকে দিয়ে তাতে স্বাক্ষর নিয়ে আইনে পরিণত করেছে। ফলে এই আইনের অধীনে সরকারি কোনো পদে নওয়াজ শরীফকে অযোগ্য ঘোষণার সুযোগ নেই। তবে তার বিরুদ্ধে যেসব মামলা আছে, তা চলতে পারে। এসব বিষয়েই ইঙ্গিত করেছেন শেহবাজ শরীফ।
জিও নিউজের ওই অনুষ্ঠানে গত ৯ই মে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের পাকিস্তান তেহরিকে ইনসাফ (পিটিআই) পার্টির দাঙ্গা প্রসঙ্গে শেহবাজ শরীফ বলেছেন, পাকিস্তানে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ আছে ইমরান খানের বিরুদ্ধে। এ সময় তিনি ওই দাঙ্গার মূল হোতা হিসেবে ইমরান খানের নাম উল্লেখ করেন। বলেন, তার নির্দেশে সামরিক নেতৃত্বকে ক্ষমতাচ্যুত করার চেষ্টা হয়েছিল এবং দেশে একটি গৃহযুদ্ধ বাধানোর চেষ্টা ছিল। প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ দাবি করেন, তিনি যথেষ্ট তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে এ কথা বলছেন।

গত বছর এপ্রিলে অনাস্থা ভোটে ক্ষমতাচ্যুত হন ইমরান খান। ঘুষ গ্রহণ, সহিংস প্রতিবাদ উস্কে দেয়া সহ বিভিন্ন মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। শেহবাজ আরও বলেন, পিটিআইকর্মী ছাড়াও রাজনীতিকদের একটি গ্রুপ, সেনাবাহিনীর কিছু সদস্য এবং তাদের পরিবার ৯ই মের দাঙ্গার সঙ্গে যুক্ত। এ দিনটিকে সেনাবাহিনী কালো দিবস হিসেবে ঘোষণা করেছে। তিনি বলেন, ৯ই মের ওই ঘটনার সঙ্গে যুক্তরা সেনাপ্রধানকে উৎখাত করতে চেয়েছিল। তারা দেশজুড়ে নৈরাজ্য ও গৃহযুদ্ধ বাধানোর পরিকল্পনা নিয়েছিল। এ হামলার জবাবে একজন লেফটেন্যান্ট জেনারেলসহ সিনিয়র তিনজন কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করেছে সেনাবাহিনী। সেনা মুখপাত্র মেজর জেনারেল আহমেদ শরীফ চৌধুরী বলেছেন, দুটি বিভাগীয় তদন্ত করা হয়েছে। এর প্রধান ছিলেন মেজর জেনারেলরা। তাদের সুপারিশ অনুযায়ী শাস্তি দেয়া হয়েছে।