বর্ষায় যেসব খাবার রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াবে

বর্ষা যেমন স্বস্তির তেমনি নিয়ে আসে বিভিন্ন রকমের সংক্রমণ। এ সময় অসুস্থ হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে। তাই বর্ষা মৌসুমে আমাদের খাবারের প্রতি নজর দেয়া উচিত। রোগ প্রতিরোধ করে এমন খাবার বেশি করে খাওয়া উচিত।

রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বৃদ্ধির কার্যকর উপায় হলো আমাদের ডায়েটে ক্ষারীয় খাবার অন্তর্ভুক্ত করা। ক্ষারীয় খাবার শরীরের পিএইচ স্তরের ভারসাম্য ঠিক রাখে এবং সামগ্রিক সুস্থতা নিশ্চিত করতে সাহায্য করে।

ক্ষারীয় খাদ্য কী?
সব খাবারকে অম্লীয়, নিউট্রাল বা ক্ষারীয়তে ভাগ করা যায়। আমরা যা খাই তা আমাদের শরীরের পিএইচ মানকে (অম্লতা বা ক্ষারত্বের পরিমাপ) প্রভাবিত করে। যখন খাবার হজম হয়, তখন তা অম্লীয়, ক্ষারীয় বা নিউট্রাল অবশিষ্টাংশ রেখে যেতে পারে। অ্যাসিডিক অবশিষ্টাংশ স্বাস্থ্যের ক্ষতি করতে পারে, তবে ক্ষারীয় অবশিষ্টাংশ অনেক উপায়ে উপকার করে, যার মাধ্যমে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা তৈরি হয়।

ক্লিনিক্যাল অনকোলজি জার্নাল অনুসারে, ‌‘আমরা সাধারণত লেবুকে অ্যাসিডিক বিবেচনা করি। কারণ, এর স্বাদ টক এবং আমাদের দাঁতের এনামেল ক্ষয় করার ক্ষমতা রয়েছে। তবে একবার এটি বিপাক হয়ে গেলে, ক্ষারীয় হিসেবে বিবেচিত হয়।’

বর্ষাকালে বিভিন্ন রোগ থেকে নিজেকে রক্ষা করার জন্য আপনার খাবারের তালিকায় ক্ষারীয় খাবার যোগ করুন। চলুন জেনে নিই কোন খাবারগুলো ক্ষারীয়–

সবুজ শাকসবজি
সবুজ শাক যেমন: পালং শাক, মেথি পাতা এবং বাঁধাকপি অত্যন্ত ক্ষারীয়। এ সবুজ শাকগুলো ভিটামিন এ, সি এবং কে আয়রন এবং ক্যালসিয়ামের মতো খনিজে সমৃদ্ধ। আপনার খাদ্যতালিকায় সবুজ শাকসবজি যোগ করুন। এটি রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে, হজমশক্তি উন্নত করতে এবং অন্যান্য অনেক স্বাস্থ্য সুবিধা প্রদান করতে সাহায্য করে।

পেঁয়াজ ও টমেটো
পেঁয়াজ ও টমেটো দুটি খাবারই বেশির ভাগ খাবারের সহযোগী হিসেবে ব্যবহার করা হয়। এগুলো আমাদের খাবারের স্বাদও বৃদ্ধি করে। অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ পেঁয়াজ এবং টমেটো আমাদের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।

রসুন
রসুন বিভিন্ন রোগের প্রাকৃতিক ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এতে অ্যালিসিন নামক একটি যৌগ রয়েছে, যার অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল এবং রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বৃদ্ধিকারী বৈশিষ্ট্য রয়েছে। খাবারে রসুন যোগ করলে তা শুধু স্বাদই বাড়ায় না; বরং রোগ প্রতিরোধক্ষমতাও বৃদ্ধি করে।

সাইট্রাস ফল
লেবু, কমলা ও আঙুরের মতো সাইট্রাস ফলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি। এগুলো শক্তিশালী অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট হিসেবে পরিচিত। এটি রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। এ ধরনের ফল শ্বেত রক্তকণিকা উৎপাদনকে উদ্দীপিত করে, যা সংক্রমণ ও রোগ প্রতিরোধ করে। সাইট্রাস ফলের ক্ষারীয় বৈশিষ্ট্য শরীরে একটি স্বাস্থ্যকর পিএইচ ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে।

বেরি
স্ট্রবেরি, ব্লুবেরি, রাস্পবেরি কেবল সুস্বাদুই নয়, একই সঙ্গে এগুলো অ্যান্টি-অক্সিডেন্টে ভরপুর। এটি রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বৃদ্ধি করে। এ ধরনের ফলে চিনির পরিমাণ কম এবং ফাইবার বেশি, যা বর্ষাকালে স্বাস্থ্যকর পিএইচ ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য উপযুক্ত।

নাগালের মধ্যে বেরি ফল, স্বাস্থ্য হাতের মুঠোয় ! বেরি হল এক জাতীয় রসালো ফল বিশেষ। এদের রকমারি রঙের সাথে রয়েছে বিশেষ কিছু স্বাস্থকর ঊপাদান …
বিভিন্ন রকমের বেরি।

গ্রিন টি
শরীর থেকে বিষাক্ত জৈব রাসায়নিক নির্মূলে গ্রিন-টির কোনো বিকল্প নেই। তরল এই খাবার আমাদের শরীরের বিভিন্ন অংশের কর্মক্ষমতা বাড়াতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। এটি শুধু চা নয়, একে ওজন কমানোর ওষুধও বলা চলে। এতে রয়েছে উচ্চমাত্রার অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট।