বিএনপির মনোনয়ন বাণিজ্যের টাকা বিদেশে পাচার হয়েছে: নানক

নিউজডেস্ক: ‘বিএনপির মনোনয়ন বাণিজ্যের টাকা বিদেশে পাচার হয়েছে। তারেক রহমান এই টাকা আগামী নির্বাচনে ব্যবহার করে একটি অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে’ বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনকে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

আজ সোমবার দুপুরে ধানমন্ডির আওয়ামী লীগ সভাপতি রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান তিনি জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, ‘আগামী ১২ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঢাকা থেকে টুঙ্গিপাড়ার উদ্দেশ্যে সড়ক পথে যাত্রা শুরু করবেন। প্রথমে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মাজার জিয়ারত করবেন। এরপর টুঙ্গিপাড়ায় একটি জনসভায় বক্তৃতা করবেন। এই বক্তৃতা শেষ করে আবার দুপুরেই কোটালীপাড়ায় এক বিশাল জনসভায় বক্তৃতা দেওয়ার মধ্যে দিয়েই নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করবেন।’

এর আগে সংবাদ সম্মেলনে দলের পক্ষ থেকে লিখিত বক্তব্যে নানক বলেন, ‘আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জনগণ বিএনপি জামায়াত অপশক্তির ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলে ব্যালটের মাধ্যমে আগুন সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে, মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধীদের বিরুদ্ধে রায় দেবে, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের মদদদাতা বিএনপি-জামায়াতের বিরুদ্ধে রায় দেবে। দুর্নীতিতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন, অর্থ পাচারকারী, এতিমের টাকা আত্মসাৎকারী, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলাকারী, আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদের পৃষ্ঠপোষক তারেক রহমানের দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে জনগণ রায় দেবে।’

বিএনপির মনোনয়ন বাণিজ্যের আড়ালে বিএনপি কত টাকা বিদেশে পাচার করেছে প্রশ্ন তুলে নানক বলেন, ‘এরইমধ্যে আপনারা দেখেছেন বিএনপির নেতাকর্মীরা মনোনয়ন বাণিজ্যের প্রতিবাদে তাদের চেয়ারপারসনের কার্যালয় ও কেন্দ্রীয় কার্যালয় ঘিরে রেখেছে। এমনকি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সহ সিনিয়র নেতাদের অপদস্থ করা হয়েছে এবং দলীয় কার্যালয় ভাঙচুর করতে দেখা গেছে। এ থেকেই প্রমাণিত হয়, বিএনপির মনোনয়ন প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ নিয়মবহির্ভুত ও অগণতান্ত্রিক পন্থায় পরিচালিত হয়েছে এবং ব্যাপক মনোনয়ন বাণিজ্য সংঘটিত হয়েছে। তাদের নেতাকর্মীদের অভিযোগ অনুযায়ী পলাতক তারেক রহমান, এই মনোনয়ন বাণিজ্য চালিয়েছে।’

‘তাহলে দেশবাসীর প্রশ্ন বিএনপির মনোনয়ন বাণিজ্যে দেশ থেকে কতো টাকা পাচার হয়েছে? আর এই টাকা আগামী নির্বাচনে ব্যবহার হলে একটি অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনকে পদক্ষেপ গ্রহণের অনুরোধ জানাচ্ছি’ বলেন জাহাঙ্গীর কবির নানক।

তিনি বলেন, ‘দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সন্ত্রাসী সংগঠন শিবিরের কয়েকজন নেতা আগ্নেয়াস্ত্র ও বোমাসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে ধরা পড়েছে। যা থেকে বোঝা যায় বিএনপি এবং জামায়াত নাশকতা সৃষ্টির পায়তারা করছে। জনগণের কাছে ভোট চাওয়ার মতো কোনও অর্জন তাদের নেই। তারা ক্ষমতা থাকতেও দেশের কল্যাণ, অগ্রগতিতে কোনও ভূমিকা রাখেনি। বরং দেশকে পিছিয়ে দিয়েছিল এবং বিরোধীদলে থেকে নাশকতা ও অগ্নিসন্ত্রাস করে দেশের শত শত নিরীহ নাগরিককে হত্যা করেছে। জনগণের কাছে ভোট চাওয়ার মতো তাদের কোন নৈতিক ও যৌক্তিক ভিত্তি নেই। তাই নিজেদের নিশ্চিত পরাজয় জেনে তারা ষড়যন্ত্রের পথে, চক্রান্তের মাধ্যমে, নাশকতা ও সন্ত্রাসের পথ ধরে নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হচ্ছে।’

তথাকথিত ঐক্যফ্রন্টের ত্রাণকর্তা হিসেবে আবির্ভুত হয়েছেন ড. কামাল হোসেন সাহেবরা উল্লেখ করে নানক বলেন, ‘এইসব ব্যক্তিরা স্বাধীনতাবিরোধী, যুদ্ধাপরাধীদের সংগঠন, আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সন্ত্রাসী সংগঠন, দুর্নীতিবাজ সংগঠন , আগুন সন্ত্রাস, এতিমের টাকা আত্মসাতকারী, বঙ্গবন্ধুকে হত্যাকারী ও চার নেতার খুনিদের পক্ষ অবলম্বন করছে। ধানের শীষ মার্কায় নির্বাচনের মধ্যে দিয়ে তাদের ভাওতাবাজির মুখোশ উন্মোচিত হয়েছে। আগামী নির্বাচনে বর্ণচোরা রি রাজনীতিবিদরা জনগণের রায়ে প্রত্যাখ্যাত হবে।’

নির্বাচনী ইশতেহার প্রসঙ্গে নানক বলেন, ‘আওয়ামী লীগের নির্বাচনি ইশতেহার ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসের পর প্রকাশ করা হবে।’

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বিএম মোজাম্মেল হক, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আফজাল হোসেন, ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী , উপ-দপ্তর সম্পাদক ব্যরিস্টার বিপ্লব বড়ুয়াসহ অনেকে।