উচ্চ রক্তচাপ, ইউরিক অ্যাসিড, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে কার্যকরী এ ভেষজ

দীর্ঘমেয়াদি অসুখ উচ্চ রক্তচাপ, ইউরিক অ্যাসিড, ডায়াবেটিসের মতো জটিল রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখতে অত্যন্ত কার্যকরী হয়ে উঠতে পারে একটি ভেষজ উপাদান। আর এটির নাম মেথি।

নিয়মিত মেথি ভেজানো পানি অথবা চা সেবনে ডায়াবেটিসের পাশাপাশি বদহজম, দুশ্চিন্তা, কোষ্ঠকাঠিন্যর মতো রোগকেও নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

বর্তমানে বাংলাদেশের প্রায় প্রতিটি ঘরেই উচ্চ রক্তচাপ, ইউরিক অ্যাসিড, ডায়াবেটিসের রোগী রয়েছে। সাধারণত এই রোগের শিকার হলে রোগীকে সারা জীবন এ অসুখ বয়ে বেড়াতে হয়। রোগীকে এই রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখতে অনেক কঠোর নিয়ম মেনে চলতে হয়। পাশাপাশি সেবন করতে হয় ওষুধও।

কিন্তু ওষুধের মাত্রা কমিয়ে লাইফস্টাইলে পরিবর্তন এনে আর ডায়েটে ভেষজ উপাদান মেথিকে যুক্ত করে সহজেই এ সমস্যা থেকে কার্যকরী সমাধান খুঁজে পেতে পারেন আপনি।

মেথি সাধারণত রান্নায় পাঁচফোড়ন হিসেবে ব্যবহৃত হয়। তবে আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে এর উল্লেখ রয়েছে নানা ভেষজ গুণ সম্পর্কে।

মেথিতে রয়েছে প্রয়োজনীয় ভিটামিন এবং খনিজ। এছাড়াও রয়েছে অ্যান্টি অক্সিডেন্টস এবং অ্যান্টি ইনফ্ল্যামেটরির মতো উপাদান।

ভেষজ ওষুধ হিসেবে পিরিয়ড ক্র্যাম্প, স্ট্রোক, বর্ধিত প্রোস্টেট এবং মুটিয়ে যাওয়ার মতো সমস্যায় চিকিৎসাশাস্ত্রে ব্যবহৃত হয়। বর্ষজীবী এই উদ্ভিদের রয়েছে রোগ প্রতিরোধ বৃদ্ধি করার মতো প্রাকৃতিক ক্ষমতাও।

যাদের কৃমির সমস্যা রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে এবং সদ্য মা হয়েছেন এমন নারীর ক্ষেত্রে মেথি ভালো কাজে আসে। তবে গবেষণায় দেখা গেছে, ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি কার্যকরী ফলাফল পাওয়া যায় মেথি সেবনে।

ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল ফর ভিটামিন অ্যান্ড নিউট্রিশন রিসার্চ-এ প্রকাশ হওয়া প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, নিয়মিত পথ্য হিসেবে মেথি সেবনে ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে থাকে। রক্তে চিনি, কোলেস্টেরল আর চর্বির মাত্রা কমতে শুরু করে।

মেথিতে থাকা অ্যামিনো অ্যাসিড অগ্ন্যাশয়ে ইনসুলিন তৈরিতে সাহায্য করে। সমীক্ষায় দেখা গেছে, নিয়মিত ১০ গ্রাম মেথি গরম পানিতে ভিজিয়ে রেখে সে পানি পান করলে টাইপ টু ডায়াবেটিসের ঝুঁকি অনেকটাই কমে আসে।

এই সমীক্ষায় ৩০টি দেশের ২৫ হাজার পুরুষ অংশগ্রহণ করে। যারা সবাই দিনে ২ বার মেথির পানীয় সেবন করেছিল। ফলাফল হিসেবে গবেষকরা যে বিষয়টি লক্ষ্য করেছিল সেটি হলো মেথির রসে সাপোনিস বা ডাইওসজেনিন নামে এক ধরনের যৌগ পদার্থ আছে, যা মানবদেহের হরমোন স্তরকে বাড়িয়ে তোলে।

এ ছাড়া চুল পড়া, চুল রুক্ষ হয়ে যাওয়া, ত্বকের বিভিন্ন ক্ষত, কালো দাগ, মুখের ব্রণ, ফুসকুড়ির মতো নানা ধরনের সমস্যাতেও মেথির উপকারিতা রয়েছে।

মেথির এসব উপকারিতা পেতে ১০ গ্রাম মেথি ১ গ্লাস গরম পানিতে আধ ঘণ্টা ভিজিয়ে তা ঠান্ডা করে সেবন করতে পারেন। কিংবা আদা, দারুচিনি দিয়ে মেথির চা তৈরি করেও নিয়মিত তা পান করে ৩ মাসের মধ্যেই এর জাদুকরী ক্ষমতা উপভোগ করুন।