পাকিস্তানের সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ রশিদ গ্রেপ্তার

ইসলামাবাদ পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে পাকিস্তানের আওয়ামী মুসলিম লিগের (এএমএল) নেতা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ রশিদ আহমেদকে। ‘পাকিস্তান তেহরিকে ইনসাফের (পিটিআই) প্রধান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে নিশ্চিহ্ন করতে হত্যা ষড়যন্ত্র’ যুক্ত থাকার জন্য সাবেক প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জারদারিকে অভিযুক্ত করেছেন ইমরান খান। একই রকম অভিযোগ করেছেন তিনিও। এ জন্য তাকে গ্রেপ্তার করে নিরাপত্তা হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ। গ্রেপ্তারের বিষয়টি জিও নিউজকে নিশ্চিত করেছেন তার ভাতিজা শেখ রশিদ শফিক। তিনি বলেছেন, ইসলামাবাদের একটি বেসরকারি হাউজিং সোসাইটি থেকে এএমএল প্রধানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পরে বৃহস্পতিবার তাকে হাজির করা হয় ইসলামাবাদে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে। ম্যাজিস্ট্রেট ওমর শাব্বিরের আদালতে তার আট দিনের রিমান্ড দাবি করে পুলিশ। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত জানা যায়নি রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়েছে কিনা। ইমরান খানের পিটিআইয়ের সঙ্গে জোট করে তার সঙ্গে রয়েছেন শেখ রশিদ আহমেদ।

এ খবর দিয়েছে অনলাইন ডন।
তার বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ দিয়েছেন পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) রাওয়ালপিন্ডি ডিভিশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট রাজা ইনায়েতুর রেহমান। এতে তিনি অভিযোগ করেছেন, এএমএলের প্রধান শেখ রশিদ আহমেদ ২৭শে জানুয়ারি টেলিভিশনে একটি সাক্ষাৎকার দিয়েছেন। সেখানে তিনি অভিযোগ করেছেন, ইমরান খানকে হত্যা করতে কিছু সন্ত্রাসীর সহযোগিতা পেয়েছেন পিপিপির সহসভাপতি আসিফ আলি জারদারি। একই দিন টেলিভিশনে দেয়া বক্তব্যে পিটিআই প্রধান ইমরান খানও বলেন, একটি সরাসরি হত্যা ষড়যন্ত্রের নেপথ্যে আছেন জারদারি। এটি হলো একটি ‘প্ল্যান সি’। এ উদ্দেশে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে একটি সন্ত্রাসী গ্রুপকে। তবে এই অভিযোগের পিছনে কোনো তথ্যপ্রমাণ দেননি তারা।
এ কারণে প্রথম একটি এফআইআর করা হয় ইসলামাবাদের আবপাড়া পুলিশ স্টেশনে। এতে দণ্ডবিধির বিভিন্ন ধারার অধীনে অভিযোগ গঠন করা হয়। ওদিকে গ্রেপ্তারের আগে বিবিসি উর্দুকে শেখ রশিদ আহমেদ বলেছেন, ৩০০ থেকে ৪০০ পুলিশ সদস্য তার বাড়ি ঘিরে ফেলেছে। স্টাফদের মারধর করেছে এবং তাকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে গেছে। তিনি আরও অভিযোগ করেন, কেউ কেউ মই বেয়ে তার বাড়িতে প্রবেশ করেন। ইসলামাবাদ হাইকোর্ট থেকে তিনি স্বস্তি পাওয়া সত্ত্বেও তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে দাবি করেন। গ্রেপ্তারের বিরুদ্ধে আদালতে চ্যালেঞ্জ জানানোর প্রত্যয় ঘোষণা করেন তিনি।
এর কয়েক ঘন্টা আগে তিনি টুইটারে একটি ছবি পোস্ট করেন। তাতে তাকে আবপাড়া পুলিশ স্টেশনে বলে মনে হয়। নিজস্ব টুইটারে পিটিআইয়ের একটি ভিডিও ম্যাসেজ শেয়ার করেছেন তিনি। সাংবাদিকদের বলেছেন, পুলিশ তার বাড়ি তছনছ করেছে। কাজের লোকদের প্রহার করেছে। আরও দাবি করেন তার আইনজীবী মিয়া তাহির জামিন নিশ্চিত করেছেন। তা সত্ত্বেও তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর নেপথ্যে আছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রানা সানাউল্লাহ। তিনি আরও বলেন, আগামী ৬ই ফেব্রুয়ারিতে তলব করা হয়েছে আইজি’কে। তার দাবি, ন্যায়বিচারের জয় হবে। আমরা ইমরান খানের সঙ্গে আছি।
ওদিকে গ্রেপ্তারের কড়া নিন্দা জানিয়েছেন পিটিআই চেয়ারম্যান ইমরান খান। তিনি টুইটে বলেছেন, পুরোপুরি অসম্মানিত নির্বাচন কমিশনের নিয়োগ করা পক্ষপাতী এবং প্রতিশোধমুলক তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমাদের ইতিহাসে কখনোই ছিল না। প্রশ্ন হলোÑ ‘আমদানি’ করা সরকার যখন দেশকে ঋণখেলাপি করেছে তখন আমরা কি রাজপথের আন্দোলন সামনে এগিয়ে নিতে সক্ষম হবো?
এএমএল নেতার বিরুদ্ধে এফআইআরে বলা হয়েছে, তার মন্তব্য সাবেক প্রেসিডেন্টের মানহানি করেছে। তার পরিবারের বিরুদ্ধে স্থায়ী একটি হুমকি সৃষ্টি করেছে। শেখ রশিদ আহমেদ চাইছেন পিপিপি এবং পিটিআইয়ের মধ্যে সংঘাত ও শত্রুতা সৃষ্টি করতে। এক্ষেত্রে বানোয়াট এবং ভিত্তিহীন অভিযোগ দিয়ে ষড়যন্ত্র করছেন তিনি। যাতে দেশের শান্তি বিনষ্ট হয়।