এবার প্রেসিডেন্ট বাইডেনকে আক্রমণ করে ঢাকাস্থ রুশ দূতাবাসের ব্যঙ্গচিত্র

বিদায়ী বছরের একেবারে শেষের দিকে বাংলাদেশকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারে প্রকাশ্য বিরোধে লিপ্ত হয়েছিল ঢাকাস্থ যুক্তরাষ্ট্র এবং রাশিয়ার দূতাবাস। বাংলাদেশকে নিয়ে বিশ্বের দুই শীর্ষ প্রভাবশালী দেশের দূতাবাসের মধ্যে এরকম পাল্টাপাল্টি আক্রমণের ঘটনা অতীতে আর কখনোই ঘটে নি বলে সে সময় নড়েচড়ে বসেছিলেন সচেতন মহল।

গত ২০শে ডিসেম্বর সন্ধ্যায় ঢাকাস্থ রাশিয়ান দূতাবাসের স্বপ্রণোদিত এক বিবৃতিতে বলা হয়েছিল, মস্কো বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ কোনো বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার নীতি গ্রহণ করেছে। বিবৃতিতে কারও নাম উল্লেখ না করে বলা হয়েছিল, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ রক্ষার অজুহাতে যারা নিজেদেরকে ‘বিশ্বের শাসক’ বলে মনে করে তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার কাজ চলছে যা স্পষ্টতই বিশ্বব্যবস্থার স্থায়িত্বকে হ্রাস করে, বিশৃঙ্খলা ও বিপর্যয় ডেকে আনে। ওই বিবৃতিতে কারও নাম উল্লেখ না করলেও সেটি যে এর আগে (১৪ই ডিসেম্বর) গুমের শিকার স্বজনদের সংগঠন ‘মায়ের ডাক’ সদস্যদের সঙ্গে দেখা করতে ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের রাজধানীর শাহীনবাগের একটি বাড়িতে যাওয়ার দিকে ইঙ্গিত করেই প্রচার করা হয়েছিল তা বলাবাহুল্য।

রুশ দূতাবাসের ওই বিবৃতির ২৪ ঘণ্টা না যেতেই (২১শে ডিসেম্বর) এর প্রতিক্রিয়া দেখিয়ে ঢাকাস্থ যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস এক টুইটে প্রশ্ন করেছিল, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে রাশিয়া, এটা (এই নীতি) কি ইউক্রেনের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য? তারপর, ওইদিন রাতেই রুশ দূতাবাস পাখির ছবি দিয়ে পশ্চিমা বিশ্বকে কটাক্ষ করে একটি ব্যঙ্গচিত্র প্রকাশ করে। ইউক্রেন যুদ্ধ ঘিরে যুক্তরাষ্ট্র যে পশ্চিমা বলয়ের নেতৃত্বে রয়েছে, এমনটিই তুলে ধরা হয়েছিল টুইটারে প্রচারিত ওই ব্যঙ্গচিত্রে।

ঢাকাস্থ দুটি দূতাবাসের মধ্যেকার কূটনৈতিক বচসা সেখানেই শেষ বলে মনে করেছিলেন অনেকেই। কিন্তু, না! নতুন করে সেটি আবার শুরু করেছে রুশ দূতাবাস। এবার সরাসরি আক্রমণ করা হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে। আজ (সোমবার) রুশ দূতাবাসের পোস্ট করা নতুন ব্যঙ্গচিত্রে দেখা যাচ্ছে, ইরাক, লিবিয়া, সিরিয়া, ভিয়েতনাম, আফগানিস্তানের নাগরিকদের লাশের উপর দাঁড়িয়ে রয়েছেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন, যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন এবং মুখে কালো মুখোশ পরিহিত অন্য একজন ব্যক্তি। তিনজনেরই হাত লাল রক্তে রঞ্জিত। আর, বাইডেন বাকি দুজনকে ইশারা দিয়ে বলছেন, রাশিয়ার মানুষ খারাপ। রুশ দূতাবাসের এমন পোস্টের জবাবে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস কোনো পাল্টা প্রতিক্রিয়া জানায় কিনা সেটি দেখার অপেক্ষায় এখন অনেকেই।