চবিতে হলুদ দলের সভা, ৩০ শিক্ষকের বয়কটের ঘোষণা

চার বছর ধরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের নীতিনির্ধারণী পর্ষদ হলুদ দলের নির্বাচন না হওয়ায় মেয়াদোত্তীর্ণ স্ট্যান্ডিং কমিটির ডাকা সভা বয়কটের ঘোষণা দিয়েছেন দলের সমর্থক ৩০ জন শিক্ষক ।

সোমবার (২৩ জানুয়ারি) দুপুরে হলুদ দলের সমর্থক বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের ৩০ জন শিক্ষকের দেওয়া এক বিবৃতিতে বিষয়টি জানানো হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, বাঙালি জাতীয়তাবাদ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজ’ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতিনির্ধারণী সংগঠন হলুদ দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী বর্তমান পরিচালনা কমিটির মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ায় এবং কতিপয় সদস্যের দলের গঠনতন্ত্রের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন না করে দীর্ঘদিন যাবত পরিচালনা কমিটির দায়িত্বকে ধরে রেখে ব্যক্তিস্বার্থ চরিতার্থ করা এবং ব্যক্তি এজেন্ডা বাস্তবায়ন করার জন্য দল পরিচালনা করায় হলুদ দলের অস্তিত্ব আজ সংকটের মুখে এবং দলের গণতান্ত্রিক ও উদারনৈতিক ঐতিহ্য আজ ভূলুণ্ঠিত।

স্ট্যান্ডিং কমিটির কতিপয় সদস্য দলীয় গঠনতন্ত্রের কোনও ধরনের তোয়াক্কা না করে ২০১৯ সালের ৬ এপ্রিল থেকে দলকে জবরদখল করে কাজ করছে।

স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্য সংখ্যা ১৫ জন হওয়ার কথা থাকলেও অবসর ও ছুটির কারণে বর্তমানে ৫ জন সদস্য নেই। এছাড়া সম্প্রতি আরও দুইজন শিক্ষক স্ট্যান্ডিং কমিটি থেকে পদত্যাগ করেছেন। এমনকি কমিটিতে প্রভাষক, সহকারী অধ্যাপক এবং সহযোগী অধ্যাপক ক্যাটেগরীতে কোনও প্রতিনিধি নেই। ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদ, ব্যবসায় প্রশাসন ও বিজ্ঞান অনুষদের প্রতিনিধি নেই। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ উদযাপন উপলক্ষে কোনও অনুষ্ঠানের আয়োজন নেই। কমিটি বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার, দেশের সার্বিক শিক্ষাব্যবস্থা ও সমাজ সংস্কারে দিকনির্দেশনা সম্পর্কে উপেক্ষা করে যাচ্ছেন।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, হলুদ দলের বর্তমানে কোনও আহ্বায়ক নেই। যিনি নিজেকে আহ্বায়ক বলে দাবি করছেন, তিনি দ্রুততম সময়ে দলের স্ট্যান্ডিং কমিটির নির্বাচন দেওয়ার জন্য সাময়িকভাবে দায়িত্বপ্রাপ্ত ছিলেন। এছাড়া দলকে এরকম অবৈধ জবরদখল থেকে মুক্ত করার জন্য এবং অনৈতিক অনুশীলন থেকে বের করে আনার জন্য মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী এবং হলুদ দলের আদর্শে বিশ্বাসী দুই শতাধিক শিক্ষক লিখিতভাবে স্ট্যান্ডিং কমিটির নির্বাচন দেওয়ার অনুরোধ করলেও তথাকথিত স্ট্যান্ডিং কমিটির অবৈধ সদস্য ও অবৈধ স্বঘোষিত আহ্বায়ক তাতে কোনও ধরনের কর্ণপাত করেননি।

জানতে চাইলে হলুদ দলের স্ট্যান্ডিং কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সেকান্দর চৌধুরী বলেন, অভিযোগগুলো ভিত্তিহীন। হলুদ দলের নির্বাচনের দাবি ওনারা জানিয়েছেন। নির্বাচনের প্রক্রিয়া চলছে। দলের স্ট্যান্ডিং কমিটির মতামতের ভিত্তিতেই নির্বাচন হবে। তাছাড়া বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী কিংবা বিভিন্ন জাতীয় দিবসে হলুদ দল সক্রিয় ছিল না- এটাও ভিত্তিহীন অভিযোগ। প্রতিটি জাতীয় প্রোগ্রামে দলের ব্যানারে না হলেও আমাদের সরব উপস্থিতি ছিল।

এর আগে, গত ৯ নভেম্বর হলুদ দলের ‘স্ট্যান্ডিং কমিটি’র নির্বাচন চেয়ে আহ্বায়ক বরাবর চিঠি দিয়েছেন হলুদ দল সমর্থিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১ জন শিক্ষক।