৩৬ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতি ঘোষণা রাশিয়ার, ইউক্রেন বলছে ‘ফাঁদ’

অর্থডক্স ক্রিসমাস উপলক্ষে ৩৬ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেছে রাশিয়া। শুক্রবার দুপুর থেকে শনিবার রাত পর্যন্ত এই যুদ্ধবিরতি বজায় থাকবে রাশিয়ার পক্ষ থেকে। এই সময়ে ইউক্রেনে কোনো হামলা চালানো হবে না এবং ফ্রন্টলাইনেও অগ্রসর হবে না রুশ বাহিনী। প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন নিজেই এই ঘোষণা দিয়েছেন।

অর্থডক্স ক্রিসমাসের পবিত্র দিনে কোনো সহিংসতা চায়না রাশিয়া। দেশটি আশা করছে, ইউক্রেনও এই ধর্মীয় বিশ্বাসের প্রতি শ্রদ্ধা দেখাবে। রাশিয়ার তরফ থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে, তাদের সেনারা কোনোরকম আক্রমণ চালাবে না এবং গোলাগুলি বন্ধ থাকবে। অর্থডক্স খ্রিস্টানদের শীর্ষ ধর্মীয় নেতা প্যাট্রিয়ার্ক কিরিল অনুরোধ করলে পুতিন যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেন। পুতিন জানিয়েছেন, কিরিল বলার পরেই এই সিদ্ধান্ত তিনি নিয়েছেন। গত বছর ফেব্রুয়ারি মাসে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর সার্বিকভাবে এই প্রথম কোনোপক্ষ যুদ্ধবরিতি ঘোষণা করল।

তবে রাশিয়া যুদ্ধ না করলেও ইউক্রেন যুদ্ধ চালিয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি। তার দাবি, এটা রাশিয়ার নতুন কৌশল।

যুদ্ধবিরতির কথা বললেও কার্যত তারা এই সুযোগে আরও বহু এলাকা দখল করে নেয়ার পায়তারা করছে। গত ১০ মাসের যুদ্ধে ইউক্রেনের বিশাল এলাকা দখলে নিয়েছে রাশিয়া। ইউক্রেনের আশঙ্কা, যুদ্ধবিরতি মেনে নিলে রাশিয়া সেই সুযোগে ইউক্রেনের আরও ভেতরে প্রবেশ করবে।
রাশিয়ার এই যুদ্ধবিরতি মেনে নেয়নি জার্মানি ও যুক্তরাষ্ট্রও। জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনালেনা বেয়ারবক বলেছেন, যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করতে হলে রাশিয়াকে ইউক্রেন থেকে সেনা ফিরিয়ে নিতে হবে। অপরদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলছেন, রাশিয়া যুদ্ধবিরতির নামে অক্সিজেন খুঁজছে। তবে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেফ তাইয়েফ এরদোগান রাশিয়ার সিদ্ধান্তকে সমর্থন করেছেন এবং তিনিও সার্বিকভাবে যুদ্ধবিরতির পরামর্শ দিয়েছেন।

এদিকে জো বাইডেনের ওই দাবির জবাব দিয়েছে রাশিয়াও। যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত রুশ রাষ্ট্রদূত আনাতলি আন্তোনভ বলেন, সর্বশেষ ইউক্রেনীয় বেঁচে থাকা পর্যন্ত তাদেরকে ব্যবহার করে যুদ্ধ চালিয়ে যেতে চায় ওয়াশিংটন। তারা ইউক্রেনীয় মানুষের ভবিষ্যৎ নিয়ে একদমই ভাবছে না। ডনেতস্ক অঞ্চলের প্রধান ডেনিস পুশিলিন জানিয়েছেন, যুদ্ধবিরতি বজায় থাকলেও তার সেনারা সতর্ক থাকবে। এই সুযোগে যাতে ইউক্রেন কোনো অঞ্চল দখলে নিতে না পারে তা ঠেকাতে সচেষ্ট থাকবে রুশ সেনারা।