‘বড়দিনে’ বড় কিছুর অপেক্ষায় বাংলাদেশ!

ভারতের প্রয়োজন ১০০ রান। বাংলাদেশের প্রয়োজন ৬ উইকেট। চতুর্থ দিন সকালে যে দল তাদের লক্ষ্য পূরণ করবে তারাই পাবে জয়। তবে নিজ দেশের মাটিতে টাইগারদের এখন ‘বড়’ দিনে বড় জয়ের অপেক্ষা! তবে ম্যাচ বাঁচাতে ভারত নিজেদের উজাড় করে দেবে। বিশ্বের সেরা ব্যাটিং নির্ভর দল টাইগারদের বোলারদের জন্য কম চ্যালেঞ্জ নয়। তবে ঢাকা টেস্টের তৃতীয় দিন বিকালে সাকিব আল হাসান-তাইজুল ইসলামরা দারুণ সম্ভাবনা জাগিয়ে সেই চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেছে। আজ চতুর্থ দিন তাদের হাতেই নির্ভর করছে জয়-পরাজয়। গোটা সিরিজজুড়ে ব্যাটারদের ব্যর্থতার মাঝে দারুণ উজ্জ্বল টাইগার বোলাররা। মিরপুর শেরেবাংলাতেও তার ব্যতিক্রম নয়। টসে জিতে ব্যাট করতে নেমে মাত্র ২২৭ রানেই গুটিয়ে যায় টাইগাররা।

কিন্তু ভারতকেও বড় সংগ্রহ করতে দেয়নি বোলাররা। আটকে দিয়েছে ৩১৪ রানে। আরও আগেই তাদের আউট করা সম্ভব ছিল কিন্তু ফিল্ডারদের ব্যর্থতায় তা হয়নি। পরে জবাব দিতে নেমে ৮৭ রানের লিড টপকাতে গিয়ে হারায় ৪ উইকেট। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংসে আউট ২৩১ রানে। সেই সুবাদে ভারতের সামনে জয়ের লক্ষ্য ১৪৫ রানের। তবে মামুলি এই লক্ষ্য কঠিন করে তুলেছে ফের টাইগার বোলাররা। ৪৫ রান তুলতেই সফরকারীরা হারিয়েছে ৪ উইকেট। আজ সকালে গোটা বাংলাদেশ থাকবে অপেক্ষায় দারুণ এক রোমাঞ্চের! ১৪৫ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে তিনে নামা চেতেশ্বর পূজারা মেহেদী হাসান মিরাজের বলে স্টাম্পড হন দলকে ১২ রানে রেখে। অক্ষর প্যাটেলকে প্রমোশন দিয়ে চারে নামায় ভারত। তবে শুভমান গিলের সঙ্গে তার জুটি টেকেনি ১৭ রানের বেশি। ৩৫ বলে ৭ রান করে মেহেদী হাসান মিরাজের বলে স্টাম্পড হন গিল। ২৯ রানেই ৩ উইকেট হারিয়ে বসে ভারত। সেখান থেকে দলকে উদ্ধার করতে ব্যাটিংয়ে নামেন বিরাট কোহলি। তবে বেশিক্ষণ তাকে উইকেটে থাকতে দেননি মিরাজ। ২২ বল খেলে ১ রান করে মুমিনুল হককে ক্যাচ দেন ভারতের অন্যতম সেরা এই ব্যাটার। ৪ উইকেটে ৪৫ রান নিয়ে দিন শেষ করে ভারত। নাইটওয়াচম্যান জয়দেব উনাদকাটকে নিয়ে দিনের শেষ ১৯ বল কাটিয়ে দিলেন অক্ষর প্যাটেল। তবে তৃতীয়দিন শেষে সম্ভাবনায় একটু এগিয়েই থাকলো বাংলাদেশ। ২৩ ওভারে বাংলাদেশের রান ৪ উইকেটে ৪৫। ৮ বলে তিন রানে খেলছেন উনাদকাট। প্রমোশন পেয়ে চারে নেমে তিন চারে ৫৪ বলে ২৬ রান করেছেন অক্ষর। এর আগে শুভমান গিল, লোকেশ রাহুল, চেতেশ্বর পূজারা ও বিরাট কোহলি- কেউ যেতে পারেননি দুই অঙ্কে। রাহুলকে ফেরান অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। গিল, পূজারা ও কোহলির উইকেট নেন মিরাজ। তার হাত ধরেই অবিশ্বাস্য কিছু করার স্বপ্ন দেখছে বাংলাদেশ। গতকাল ৬ ওভারে বিনা উইকেটে ৭ রান নিয়ে ২য় দিনের খেলা শেষ করেছিল বাংলাদেশ দল। ৫ রান করে নাজমুল হোসেন শান্ত ও ২ রান করে জাকির হাসান অপরাজিত ছিলেন। ৩য় দিনে এসে আর কোনো রান যোগ করতে পারেননি শান্ত। রবিচন্দ্রন অশ্বিনের বলে এলবিডব্লিউ হন তিনি। প্রথম ইনিংসে দলের পক্ষে সর্বোচ্চ রান করা মুমিনুল হক করতে পারেননি ৫ রানের বেশি। ৯ বলে ৫ রান করে মোহাম্মদ সিরাজের বলে রিষভ পন্তকে ক্যাচ দেন মুমিনুল। অধিনায়ক সাকিব আল হাসান ১৩ ও মুশফিকুর রহীম ৯ রান করে সাজঘরে ফেরেন। লাঞ্চের আগেই ৪ উইকেট হারিয়ে বসে বাংলাদেশ। দারুণ খেলতে থাকা জাকির হাসান ফিফটি পার করেই ফেরেন সাজঘরে। ১৩৫ বলে ৫ চারে ৫১ রান করা জাকির ফেরেন উমেশ যাদবের শিকার হয়ে। সাতে নেমে রানের খাতাই খুলতে পারেননি মেহেদী হাসান মিরাজ। ১১৩ রানেই ৬ উইকেট হারিয়ে বসা বাংলাদেশ দলকে ভরসা দেন লিটন দাস। দলকে ২০০ পার করিয়ে ফেরেন ৭৩ রান করে। ৯৮ বলে ৭ চারে ইনিংস সাজান তিনি, বোল্ড হন মোহাম্মদ সিরাজের দারুণ এক ডেলিভারিতে। বাংলাদেশ শেষমেশ থামে ২৩১ রানে। সমান ৩১ রান করে করেন নুরুল হাসান সোহান ও তাসকিন আহমেদ। তাসকিন ছিলেন অপরাজিত। ভারতের পক্ষে ৩ উইকেট নেন অক্ষর প্যাটেল। ২টি করে উইকেট নেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন ও মোহাম্মদ সিরাজ। ১টি করে পান উমেশ যাদব ও রবিচন্দ্রন অশ্বিন। ১৪৫ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে শুরুতেই হোঁচট খায় ভারত। ইনিংসের ৩য় ওভারের ১ম বলে ভারতীয় অধিনায়ক লোকেশ রাহুলকে নুরুল হাসান সোহানের ক্যাচ বানিয়ে ফেরান সাকিব আল হাসান।