বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে আওয়ামী লীগের ২২তম জাতীয় সম্মেলন উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী ও দলটির সভানেত্রী শেখ হাসিনা। আজ সকাল সাড়ে ১০টায় ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত এই সম্মেলনের উদ্বোধন করেন তিনি। এরপরই আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয় সম্মেলনের প্রথম অধিবেশন। এর আগে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে নিয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করেন প্রধানমন্ত্রী। এসময় বাজানো হয় জাতীয় সংগীত। এতে সমবেত কণ্ঠ দেন উপস্থিত ডেলিগেটরা।
এর আগে সকাল ৭টা থেকেই খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে যোগ দেন আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। সকাল সাড়ে ১০টায় সম্মেলনস্থলে উপস্থিত হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সহ দলটির সিনিয়র নেতারা উপস্থিত হয়েছেন।
সম্মেলন উপলক্ষে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে পদ্মা সেতুর ওপর নৌকার আদলে তৈরি ৮০ ফুট দৈর্ঘ্য ৪৪ ফুট প্রস্থের মঞ্চ তৈরি হয়েছে। মূল মঞ্চের উচ্চতা ৭ ফুট।
সাংস্কৃতিক পর্বের জন্য তৈরি করা হয়েছে আলাদা মঞ্চ। এ ছাড়াও পর্যাপ্ত এলইডি মনিটর থাকবে, যেখানে সম্মেলনের কার্যক্রম দেখানো হবে। গত ২৮শে অক্টোবর গণভবনে কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে ২২তম জাতীয় সম্মেলনের তারিখ চূড়ান্ত হয়। প্রায় সাড়ে আট হাজার কাউন্সিলর এবং তার দ্বিগুণ সমসংখ্যক ডেলিগেট ও অতিথি সম্মেলনে উপস্থিত হয়েছেন। মূল মঞ্চের পাশে পতাকা স্ট্যান্ড করা হয়েছে। সেখানে কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ সকল সাংগঠনিক ইউনিটের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকদের সঙ্গে নিয়ে জাতীয় সংগীতের তালে দলীয় ও জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। এ সময় শান্তির প্রতীক পায়রা ও বেলুন উড়িয়ে সম্মেলনের উদ্বোধন ঘোষণা করা হয়। এর পর আধঘণ্টা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করা হবে। এরপর শোক প্রস্তাব উত্থাপন করবেন দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া। সাধারণ সম্পাদকের প্রতিবেদন উপস্থাপন করবেন ওবায়দুল কাদের। স্বাগত বক্তব্য দেবেন অভ্যর্থনা কমিটির আহ্বায়ক শেখ ফজলুল করিম সেলিম। শেখ হাসিনার বক্তব্যের মধ্যদিয়ে সম্মেলনের প্রথম অধিবেশন শেষ হবে। পরে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন চত্বরে দ্বিতীয় অধিবেশনে দলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচন করা হবে। বিএনপি, জাতীয় পার্টিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতাদের আওয়ামী লীগের সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন দূতাবাস প্রধানকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তবে এবার বিদেশের কোনো রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি ও কূটনৈতিকদের আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। তিন স্তরের মঞ্চের প্রথম সারিতে দলীয় প্রধানের সঙ্গে বসবেন দলের সিনিয়র নেতারা। দ্বিতীয় ও তৃতীয় সারিতে বসবেন অন্যরা। দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ ও উপদেষ্টা পরিষদের নেতারাও মঞ্চে থাকবেন। ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক দলটি প্রতিষ্ঠার পর থেকে এখন পর্যন্ত ২১টি জাতীয় সম্মেলন আয়োজন করেছে। পাকিস্তান আমলে ৮টি আর স্বাধীন বাংলাদেশে ১৩টি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ ছাড়াও জাতীয় প্রয়োজনে দলটি বিভিন্ন সময়ে সাতটি বিশেষ সম্মেলন করেছে। সম্মেলনগুলো পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, বর্তমান সভাপতি শেখ হাসিনা সর্বাধিক ১০ম বারের মতো দলের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন। দলটির প্রতিষ্ঠাতাদের অন্যতম ও স্বাধীনতার স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু টানা চারবার দলটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। তার আগে, তিনি চারবার সাধারণ সম্পাদক এবং প্রতিষ্ঠার সময়ে দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন।