নেতাকর্মীদের থামিয়ে বিএনপির র‌্যালিকে এগিয়ে দিলেন নওফেল

মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে শুক্রবার (১৬ ডিসেম্বর) সকাল থেকে নগরে র‌্যালি নিয়ে বের করেছিলো বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন।

শুক্রবার সকালে নগরের কোতোয়ালির লাভ লেইন মোড়ে এমনই বের হওয়া দুটি পৃথক র‌্যালিতে মুখোমুখি হয়েছিলেন আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতাকর্মীরা।

এতে হঠাৎ পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। পাল্টাপাল্টি স্লোগান দিতে থাকেন দু’পক্ষের নেতাকর্মীরা।

নিরাপত্তায় নিয়োজিত পুলিশ সদস্যরা উভয়পক্ষকে সামলাতে চেষ্টা করছিলেন। আর তখনই ঘটে অভিনব এক ঘটনা।
শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল পুলিশের সঙ্গে দাঁড়িয়ে পড়ে নিজেদের র‌্যালির গতিরোধ করে। যাতে বিএনপির নেতাকর্মীদের নির্বিঘ্নে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ পায়। এতে কোনও হট্টগোল ছাড়াই বিএনপির র‌্যালিটিও তাদের গন্তব্যের দিকে এগিয়ে যায়। অবসান ঘটে উত্তপ্ত পরিস্থিতির।

জানা যায়, আওয়ামী লীগের বিপুল সংখ্যক নেতা-কর্মী নিয়ে মুক্তিযুদ্ধের বিজয়মেলা পরিষদের ব্যানারে নগরের এম এ আজিজ স্টেডিয়ামের সামনে থেকে বিজয় র‌্যালি বের হয়। এ র‌্যালির নেতৃত্ব দেন পরিষদের চেয়ারম্যান শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। র‌্যালিটির গন্তব্য ছিল বৌদ্ধমন্দির-লাভ লেইন-সিআরবির সামনে দিয়ে পুনরায় স্টেডিয়ামের সামনের বিজয়শিখা চত্বর পর্যন্ত।

অপরদিকে কাজীর দেউড়ির নাসিমন ভবনের নগর দলীয় কার্যালয় থেকে বিজয় র‌্যালি বের করে নগর বিএনপির নেতাকর্মীরা। নগর বিএনপির সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্করের নেতৃত্বে র‌্যালিটি যাত্রা ছিল মিউনিসিপ্যাল মডেল হাইস্কুলের অস্থায়ী শহিদ মিনারের অভিমুখে।

নগর বিএনপির দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা ইদ্রিস আলী জানান, র‌্যালি লাভ লেইন মোড়ের দিকে যাবার সময় মেট্রোপলিটন ক্লাবের সামনে পুলিশ আমাদের আটকে দেয়। ততক্ষণে আওয়ামী লীগের র‌্যালিটিও আমাদের কাছাকাছি এসে যায়। কিন্তু হঠাৎ দেখলাম আওয়ামী লীগের র‌্যালি থেমে গেছে, সামনে পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে রেখেছে। আর আমাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তখন আমরা র‌্যালি নিয়ে শহিদ মিনারে চলে যাই।

কোতোয়ালি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জাহিদুল কবীর জানান, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহোদয়ের নেতৃত্বে র‌্যালি যখন বৌদ্ধমন্দির থেকে লাভ লেইনের মোড়ে পৌঁছেছিল। একই সময়ে বিএনপির র‌্যালিটিও লাভ লেইন অতিক্রম করছিলো। দুই দলের নেতাকর্মীরা মুখোমুখি হয়ে গেলে যা হয়, আমরাও সতর্ক ছিলাম। শিক্ষা উপমন্ত্রী মহোদয় দাঁড়িয়ে উনাদের র‌্যালি থামিয়ে দেন। বিএনপিকে র‌্যালি নিয়ে এগিয়ে যাবার জন্য মাইকে আহ্বান জানান। তখনই বিএনপির নেতাকর্মীরা লাভ লেইন মোড় অতিক্রম করে। পরে উপমন্ত্রী নিজেদের র‌্যালি নিয়ে এগিয়ে যান।

এব্যাপারে চট্টগ্রাম-৯ আসনের সংসদ সদস্য ও শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, আমরা সবসময় সহাবস্থানের রাজনীতিতে বিশ্বাসী। চট্টগ্রামে কখনোই প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দলের কর্মসূচিতে আমরা হস্তক্ষেপ করেনি, বরং শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে সবসময় সহায়তা করেছি। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে আমাদের আহ্বান থাকবে জ্বালাও-পোড়াও, আগুনে পুড়িয়ে মানুষ হত্যার মতো ধ্বংসাত্মক রাজনীতি করে কেউ যাতে সহাবস্থানের পরিবেশটি নষ্ট না করেন।