মৌলভীবাজারে কৃষক ও ক্ষেতমজুর সংগ্রাম পরিষদের স্মারকলিপি ও সমাবেশ

মৌলভীবাজার চৌমুহনায় কৃষক ও ক্ষেতমজুর সংগ্রাম পরিষদ মৌলভীবাজার জেলা শাখার উদ্যোগে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে কৃষিমন্ত্রী বরাবরে স্মারকলিপি প্রদানের পূর্বে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। গতকাল দুপুরে সমাজতান্ত্রিক ক্ষেতমজুর ও কৃষক ফ্রন্ট মৌলভীবাজার জেলা সমন্বয়ক এডভোকেট মঈনুর রহমান মগনুর সভাপতিত্বে এবং বিশ্বজিৎ নন্দীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জাসদ মৌলভীবাজার জেলা সভাপতি আ স ম সালেহ সোহেল, সিপিবি জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য ও বাংলাদেশ কৃষক সমিতি মৌলভীবাজার জেলা সাধারণ সম্পাদক জওহর লাল দত্ত, বাংলাদেশ কৃষক জোট জেলা সংগঠক হাসান আহমেদ রাজা, এটিএম আলমগীর, হাওর রক্ষা সংগ্রাম কমিটি মৌলভীবাজার সদর উপজেলা সভাপতি আলমগীর হোসেন প্রমুখ। সমাবেশে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের প্রায় শতকরা ৮০ ভাগ মানুষ প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে কৃষির উপর নির্ভরশীল। বাজারে সার, বীজ, ডিজেল, কীটনাশকসহ সকল কৃষি উপকরণের দাম বৃদ্ধি পেয়ে আকাশচুম্বী। বৃদ্ধি পেয়েছে কৃষি খরচ কিন্তু কৃষক ফসলের প্রকৃত দাম পাচ্ছে না। বিএডিসি’র নিয়ন্ত্রণের বাইরে গিয়ে লুটেরা বহুজাতিক কোম্পানির নিয়ন্ত্রণে সার, বীজ, কীটনাশকসহ সকল উপকরণ। মুনাফার লোভে দাম বাড়িয়ে বাজারে কৃষি উপকরণ বিক্রি করছে। আবার ভেজাল বীজ, সার, কীটনাশকে প্রতারিত হচ্ছে কৃষক। দেশের হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার হচ্ছে কিন্তু কৃষক কৃষিকাজের জন্য ঋণ নিতে গেলে পাচ্ছে না। বাজারে বৃদ্ধি পাচ্ছে চাল, ডাল, তেল, লবণসহ সকল নিত্যপণ্য।

কিন্তু কৃষক ও মেহনতী মানুষ তার যথাযথ হিস্যা পাচ্ছে না। প্রতিবছর জাতীয় বাজেটে সামরিক, প্রশাসন ও প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয় বরাদ্দ বৃদ্ধি পায়। আর উৎপাদনমুখী কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কর্মসংস্থান খাতে বছরে বছরে ব্যয় বরাদ্দ কমছে। সরকার হাজার হাজার কোটি টাকা পাচারকারীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে বরং পাঁচ থেকে পনেরো হাজার টাকা ঋণের জন্য কৃষকের নামে সার্টিফিকেট মামলা দায়ের হচ্ছে। দেশে কৃষক, ক্ষেতমজুর, শ্রমিকদের জন্য নেই রেশনিং ব্যবস্থা। বার্ষিক জাতীয় বাজেটে সিংহভাগ যোগান দেয় কৃষক-শ্রমিক সাধারণ মানুষ অথচ তাদের জীবন-জীবিকার সমস্যার সমাধান করা হচ্ছে না। এমন পরিস্থিতিতে কৃষক ও ক্ষেতমজুর সংগ্রাম পরিষদের ৬ দফা দাবি তুলে ধরে তা বাস্তবায়নের জোর দাবি জানাচ্ছে। দাবিগুলো সার, ডিজেল, কীটনাশকসহ সকল কৃষি উপকরণের দাম কমাতে হবে। প্রত্যেক ইউনিয়নে সরকারি ক্রয়কেন্দ্র খুলে সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে ধান ক্রয় করতে হবে। চাল, ডাল, তেলসহ সকল নিত্যপণ্যের দাম কমাতে হবে। আর্মি রেটে রেশনিং চালু করতে হবে। কৃষিখাতে ভর্তুকি বাড়াতে হবে। শস্য বীমা চালু করতে হবে।