ফুসফুসের ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার সবচেয়ে বেশি কারণ হলো ধূমপান বা তামাক সেবন। পরিবেশের প্রভাব, বায়ুদূষণ, অজৈব পদার্থের ক্ষুদ্রকণা (যেমন অ্যাসবেসটস, নিকেল, ক্রোমিয়াম) এবং জৈবপদার্থ (যেমন বেনজিন, বেনজোপাইরিন) বাতাসের সঙ্গে ফুসফুসে প্রবেশ করে ফুসফুসের ক্যান্সার সৃষ্টি করতে পারে। ফুসফুসের ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীর আত্মীয়ের ক্যান্সার হওয়া বা জেনেটিক কারণেও রোগটির ঝুঁকিও অন্যদের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ। অনাকাঙ্ক্ষিত তেজস্ক্রিয়তাও ফুসফুসের ক্যান্সারের আরও একটি প্রধান কারণ বলে মনে করা হয়। অতিরিক্ত মদপান। এ ছাড়া দীর্ঘদিন ঠাণ্ডাজনিত কারণে বুকে সংক্রমণ হয়েও হতে পারে।
লক্ষণসমূহ
দীর্ঘমেয়াদি কাশি, কাশির সঙ্গে রক্তপাত, ধূমপায়ীদের কাশির নতুন ধরন, শ্বাসকষ্ট, দীর্ঘমেয়াদি জ্বর, ওজন হ্রাস, লসিকা গ্রন্থি ফুলে যাওয়া ইত্যাদি।
পরীক্ষাসমূহ
যদি সন্দেহ হয় ও উপসর্গসমূহ লক্ষ্য করা যায়, তাহলে চিকিৎসক বুকের এক্সরে, কফ পরীক্ষা করে প্রাথমিক অবস্থায় রোগ নির্ণয় করে থাকেন। তবে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ রোগীদের বুকের সিটি স্ক্যান, ব্রঙ্কোস্কোপি পরীক্ষার মাধ্যমে রোগ নির্ণয় করতে হবে।
প্রতিরোধ যেভাবে
বিড়ি, সিগারেট, তামাক ও মদ, দ্যোক্তা, জর্দা ইত্যাদি বর্জন করতে হবে। পরিবেশদূষণ, বায়ুদূষণ ও যানবাহনের কালো ধোঁয়া কমাতে হবে। ধোঁয়া ও ধুলাবালি থেকে বাঁচতে মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। যাদের কোনো লক্ষণ বা উপসর্গ নেই কিন্তু কমপক্ষে ৩০ বছর ধরে ধূমপান করছেন এবং বয়স ৫০ থেকে ৭০ বা ৮০ বছর, তাদের প্রাথমিক রোগ নির্ণয়ের জন্য বছরে একবার ‘কম-ডোজ কম্পিউটেড টমোগ্রাফি’ পরীক্ষার মাধ্যমে ফুসফুসের ক্যান্সার স্ক্রিনিং করে নেয়া দরকার।
যে কারণে আপনাকে সচেতন হতে হবে
বর্তমানে বাংলাদেশে ফুসফুসের ক্যান্সারে মৃত্যুহার বেড়েই চলেছে এবং এর প্রতিরোধ করা না গেলে তা মহামারির মতো বৃদ্ধি পেতে পারে।
মনে রাখবেন, প্রাথমিক পর্যায়ে প্রায়ই ফুসফুসের ক্যান্সার সহজে ধরা পড়ে না। আবার যখন উপসর্গ দেখা দেয়, তখন রোগ অনেক দূর গড়িয়ে গেছে। তাই প্রাথমিক পর্যায়ে রোগটি শনাক্ত করতে সবার সচেতনতা খুবই জরুরি।
লেখক: ক্যান্সার চিকিৎসক ও চিফ কনসালট্যান্ট, সরদার হোমিও হল, ৬১/সি, আসাদ এভিনিউ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭। যোগাযোগ: ০১৭৪৭৫০৫৯৫৫