রাউজান হাটাহাজরী দুই ইপজেলায় ডিম সংগ্রহের পরিমাণ ১০ হাজার কেজি
রাউজান প্রতিনিধি: প্রাকৃতিক মৎস প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদীতে মা মাছ ডিম ছাড়ার পর ডিম সংগ্রহকারী ডিম থেকে রেনু ফুটানোর কাজে ব্যস্ত সময় অতিবাহিত করছেন। গত ২৫ ্মে শনিবার সকাল থেকে বিকাাল পর্যন্ত সময়ে মা মাছ ডিমরে নমুনা ছাড়ে । নমুনা ডিম ছাড়ার পর থেকে ডিম সংগ্রহকারীরা হালদা নদীর বিভিন্ন স্পটে মা মাছ কবে ডিম ছাড়বে এই প্রতিক্ষায় ন্যেকা ও জাল নিয়ে বসে থাকে । গত ২৫ মে শনিবার দিবাগত রাত ৯টার সময় থেকে রাত ১২ টা পর্যন্ত সময়ে নদীতে হালদা নদীতে মাছ ডিম ছাড়তে শুরু করে । রাউজান হাটহাজারী উপজেলার হালদা পাড়ের বাসিন্দ্বারা ২শত ৩০টি নৌকা নিয়ে হালদা নদীতে ডিম সংগ্রহ করে । ডিম সংগ্রহকারীরা ডিম সংগ্রহ করার পর রাউজানের মোবারকখীল, পশ্চিম গহিরা, হাটাহাজারীর মাছুয়া ঘোনা, মদুনাঘাট, মার্দ্রাসা হ্যাচারী ও নদীর তীরে পুব থেকে খনন করা মাঠির কুয়ায় ডিম রেখে ডিম থেকে রেনু ফুটানোর কাজে ব্যস্ত সময় অতিবাহিত করছেন । গতকাল ২৬ মে রবিবার সকালে রাউজান উপজেলা নির্বাহী অফিসার জোনায়েদ কবির সোহাগ গহিরা মোবারকখীল হ্যাচারী ও পশ্চিম গহিরা হ্যাচারীতে ডিম থেকে রেনু ফুটানোর কাজ পরিদর্শন করেন । একই সাথে হাটহাজারীর গড়দুয়ারা এলাকায় নদীর তীরে মাটির কুয়ায় মা মাছের ডিম ফুটানোর কাজ পরিদর্শন করেন রাউজান উপহেজলা নির্বাহী অফিসার জোনায়েদ কবির সোহাগ। এসময়ে আরো উপস্থিত ছিলেন রাউজান পৌরসভার প্যানেল মেয়র বশির উদ্দিন খান, রাউজান পৌরসভার কাউন্সিলর আলমগীর আলী, রাউজান উপজেলা মৎস সম্প্রসারণ অফিসার আবদুল্ল্রাহ আল মামুন । রাউজান উপজেলা নির্বাহী অফিসার জেনায়েদ কবির সোহাগ বলেন গত ২৫ মে শনিবার থেকে রাত পর্যন্ত সময়ে হালদা নদীর বিভিন্ন স্পটে মা মাছের ডিম ছাড়ার কার্যক্রম পরিদর্শন করেছি ।ডিম সংগ্রহকারীদের যে কোন সহায়তা প্রয়োজন হলে উপজেলা প্রশাসন থেকে সহায়তা প্রদান করা হবে । হালদা নদীর ডিম থেকে রেনু ফুটানোর পর হালদা নদী থেকে উৎপাদিত রেনুর সাথে অন্য এলাকার মাছের রেনু মিশিয়ে বিক্রয় করলে তাদের কঠোর শাস্তি প্রদান করা হবে বলে রাউজান উপজেলা নির্বাহী অফিসার জোনায়েদ কবির সোহাগ । গত বৎসরের চেয়ে এবার হালদা নদীতে মা মাছের ডিম ছাড়া প্রসঙ্গে রাউজান উপজেলা নির্বাহী অফিসার জোনায়েদ কবির সোহাগ বলেন, হালদা নদী রক্ষা বাধ নির্মান প্রকল্পের জন্য পাথর, বালু লোহা সিমেন্ট, ইট নিয়ে বড় বড় যান্ত্রিক নৌযান চলাচল করার কারনে এবঃসর মা মাছের ডিম কম ছেড়েছে । রাউজান উপজেলা মৎস সম্প্রসারন অফিসার আবদুল্ল্রাহ আল মামুন বলেন বেসরকারী এনজিও সংস্থা আই, ডি, এফের কর্মীদের জরীপ মতে হালদা নদীতে এবার যে পরিমাণ ডিম সংগ্রহ করা হয়েছে তার পরিমাণ ৭ হাজার কেজি । রাউজান উপজেলা মৎস সম্প্রসারন অফিসের দেওয়া তথ্য সঠিক নয় দাবী করে হাটহাজজারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুহুল আমিন বলেন, আমি ডিম সংগ্রহকারীদের কাছ থেকে যে তথ্য নিয়েছি তাদের দেওয়া তথ্র অনুসারে হালদা নদীতে এবার ডিম সংগ্রহ করা হয়েছে ১০ হাজার কেজি । বেসরকারী এনজিও আইডি এফের কর্মীরা হ্যচারীতে ফুটানো ডিমের তালিকা তৈয়ারী করে মৎস অফিসকে দিয়েছে তা সঠিক নয় । গত শনিবার ও গতকাল রবিবার হালদা নদীতে মা মাছ ডিম ছাড়ার ফলে বেসরকারী কোন যান্ত্রিক নৌযান নদীতে চলাচল করেনি । তবে আই, ডি এফ এর কর্মী ও উপজেলা প্রশাসনের একাধিক য়ান্ত্রিক নৌযান নদীতে চলাচল করতে দেখা যায়। গত ২৫ মে শনিবার রাতে হালদা নদী থেকে শত শত ডিম সংগ্রহকারী নৌকা জাল নিয়ে হালদা নদীর অংকুরী, ঘোনা, পশ্চিম গহিরা, বিনাজুরী, কাগতিয়া, কাসেম নগর, আজিমের ঘাট, গোলজার পাড়া, মগদাই, নাপিতের ঘাট, পশ্চিম আবুর খীল, উরকিরচর, খলিফার ঘোনা, সার্কদা, মোকামী পাড়া, কচুখাইন ও হাটহাজারীর গড়দুয়ারা, , নায়া হাট, মার্দ্রাসা, দক্ষিন মার্দ্রাসা, আমতুয়া, রামদাশ হাট, মাছুয়া ঘোনা এলাকায় হালদা নদী থেকে ডিম সংগ্রহ করে । রাউজানের পশ্চিম গহিরা অংকুরী ঘোনা এলাকার ডিম সংগ্রহকারী বিতান বড়–য়া বলেন তার তিনটি নৗকা নিয়ে নাপিতের ঘাট এলাকায় নদী থেকে২৪ বালতি ডিম সংগ্রহ করে । ডিম সংগ্রহকারী বিতান বড়–য়া তার বাড়ীর পাশে হালদা নদীর তীরে মাটির কুয়ায় ডিম থেকে রেনু ফুটানোর কাজ করছে । হাটহাজারীর গড়দুয়ারা এলঅকার মহিউদ্দিন হালদা নদী থেকে তিনটি নৌকা নিয়ে ১৯ বালতি ডিম সংগ্রহ করে তার বাড়ীর পাশে মাটির কুয়ায় ডিম সংগ্র করছেন । রাউজানের পশ্চিম বিনাজুরী এলাকার ডিম সংগ্রহকারী দেবুজিৎ বড়–য়া হালদা নদী থেকে একটি নৌকা নিয়ে ৫ বালতি ডিম সংগ্রহ করছেন অ ডিম সংগ্রহকারী দেবুজিৎ বড়–য়া সহ ৬জন ডিম সংগ্রহকারী হালদা নদী থেকে ৫৪ বালতি ডিম সংগ্রহ করে গহিরা মোবারকখীল হ্যাচারীতে ডিম ফুটানোর কাজ করছেন বলে জানান ডিম সংগ্রহকারী দেবুজিৎ বড়–য়া । রাউজানের পশ্চিম গহিরা অংকুরীঘোনা এলাকার শ্যামল বড়–য়া সহ চার জন হালদা নদী থেকে ডিম সংগ্রহ করেছে ২২ বালতি তারা রাউজানের পশ্চিম গহিরা হ্যাচারীতে ডিম ফুটানোর কাঝ করছেন হালদা প্রকল্পের টাকা দিয়ে নির্মিত হ্যাচারীগুলোর মধ্যে পশ্চিম গহিরা হ্যাচারী, কাগতিয়া হ্যাচারী নির্মানের পর থেকে ডিম ফুটানোর কুয়াগুলো অধিকাংশ ফাটল ধরায় এই সব কুয়ায় ডিম সংগ্রহকারীরা ডিম ফুটাতে পারছেনা বলে জানান ডিম সংগ্রহকারীরা। রাউজানের মোবারক খীল, ও পশ্চিম গহিরা হ্যচারীতে হ্যচারীটি মেরামত করায় মোবারকখীল ও পশ্চিম গহিরা হ্যাচারীতে ডিম ফুটানোর কাজ করতে দেখা যায় । ডিম সংগ্রহকারীরা জানান হালদা নদীতে ডিম গত বৎসরের তুলনায় এবার মা মাছ ডিম ছেড়েছে গত বৎসরের তুলনায় কম । প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদীতে প্রতি বছরের চৈত্র মাস থেকে শ্রাবণ মাস পর্যন্ত সময়ে মা মাছ ডিম ছাড়ে। হালদা নদীর তীরবর্তী রাউজান হাটহাজারী এলাকার মৎস্যজীবি, জেলে, ডিম সংগ্রহকারীরা হালদা নদী থেকে মা মাছের ডিম সংগ্রহ করে। নদী থেকে সংগ্রহ করা ডিম নদীর তীরে মাটির কুয়ায় রেখে ও সরকার কর্তৃক নির্মিত হ্যাচারিতে ডিম থেকে রেনু উৎপাদন করে। হালদা নদীর মা মাছের ডিম থেকে উৎপাদিত রেনু দেশের বিভিন্ন এলাকায় মৎস্যজীবি, মৎস্য খামারীরা ক্রয় করে নিয়ে গিলে মাছ চাষ করে পাকা হ্যাচারী গুলো অকেজো হয়ে পড়ায় মাটির কুয়ায় ডিম ফুটানো হবে। হালদা নদীতে রুই, মৃগেল, কালিবাউশ মাছ ডিম ছাড়ে বেশি। হালদা নদীর মা মাছের ডিম থেকে উৎপাদিত রেনু মাছ চাষ করে মৎস্যজীবি ও মৎস্য খামারীরা লাভবান হয় বেশি। এক সময়ে হালদা নদীতে মা মাছ প্রচুর পরিমাণ ডিম ছাড়তো। হালদা নদীর কয়েকটি বাঁক কেটে ফেলে ও হালদা নদীর সাথে সংযুক্ত রাউজানের সোনাইর খাল, কাগতিয়া খাল, মগদাই খাল, হাটহাজারীর বোয়ালিয়া খাল সহ ১২টি খালের মূখে এরশাদ সরকারের শাসন আমলে পানি উন্নয়ন বোর্ড সুইস গেইট নির্মান করার পর থেকে হালদা নদীতে মাছের ডিম ছাড়ার পরিমাণ হৃাস পায়। অপরদিকে হালদা নদীর তীরে রাউজানের পশ্চিম বিনাজুরী, কাগতিয়া কাশেম নগর, আবুরখীল, কচুখাইন, হাটহাজারীর মেখল, নগরীর চাঁন্দগাও এলাকার মোহরায় কয়েকটি ইটের ভাটা গড়ে উঠেছে। ইটের ভাটায় ইট তৈরির কাজে হালদা নদীর তীরের ও জেগে উঠা চরের মাটি ব্যবহার করছে। জেগে উঠা চর ও তীরের মাটি কাটায় ব্যবহার ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন। জেগে উঠা চর ও তীর থেকে কাটা মাটি যান্ত্রিক নৌযান দিয়ে ইটের ভাটায় আনা হচ্ছে। ইটের ভাটা গুলোর জ্বালানি কাঠ ও ইট পরিবহন করছে হালদা নদী দিয়ে যান্ত্রিক নৌযান করায়। হালদা নদীর নাজির হাট থেকে কালুর ঘাট পর্যন্ত ৪৮ কিলোমিটার দৈঘ্য নদীতে চৈত্র থেকে শ্রাবণ মাস পর্যন্ত মা মাছ ডিম ছাড়ার মৌসুমে যান্ত্রিক নৌযান চলাচল করার কারনে হালদা নদীতে মা মাছের ডিম ছাড়ার পরিমাণ পুর্বের চেয়ে কমে যায়। হালদা নধীতে ২০টি ডলফিন সহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ মারা যায় ।