শীতের মৌসুম চর্মরোগ বৃদ্ধির কারণ ও সমাধান

শীত এলেই কিছু চর্মরোগ নতুন করে আবির্ভূত হয়। যা গরমকালে খুব একটা দেখা যায় না। রোগীরা একটি অভিযোগ প্রায়ই করেন, তা হল- শীত এলে শরীর খুব চুলকায়। এক্ষেত্রে হাতের তালু দিয়ে ত্বক হালকাভাবে চুলকানো যেতে পারে। আবহাওয়া শুষ্ক থাকার কারণে মূলত এমন চুলকানি দেখা দেয়। এক্ষেত্রে আপনার ত্বকের ধরন বুঝে চিকিৎসক ময়েশ্চারাইজার প্রেসক্রাইব করে থাকেন। ময়েশ্চারাইজার পাওয়া না গেলে নারিকেল তেল ব্যবহার করলেও ত্বক ভালো থাকে। চুলকানির পরিমাণ মারাত্মক হলে গ্লিসারিনের সঙ্গে পানি মিশিয়ে ব্যবহার করলেও ভালো ফল পাওয়া যায়। মানব দেহের যতগুলো ভয়ঙ্কর প্রকৃতির রোগ আছে তার মধ্যে চর্মরোগ অন্যতম। তবে সব চর্মরোগই ভয়ঙ্কর প্রকৃতি নয়।

বিভিন্ন প্রকারের চর্ম রোগ আছে যেমন- একজিমা সহ ব্যাকটোরিয়া, ফাঙ্গাই, জান্তব পরাভুক এবং ভাইরাস দ্বারা সৃষ্টি চর্মরোগের মধ্যে গ্রামপজিটিভ কক্কাই ও ব্যাসিলিজনিত ফোঁড়া কার্বংকল বা ফারাংকল ইরিসিপেলাস, ইরিসিপেলয়েড, ইস্পে গো, নখকুনি, ইরিথ্রাসমা ইত্যাদি, চর্মে ফাঙ্গাল ইনফেকশন বলতে ছতাক বা উদ্ভিদ জাত পরাভুকের দ্বারা সংক্রমণ জনিত চর্মরোগ বুঝায়, আবার ডার্মাটো ফাইট জাতীয় কয়েক ধরনের ফ্রাংগাই দ্বারা চর্ম, নখ ও চুলের মধ্যে সংক্রমণ ঘটলে তাকে জার্মাটোফাইট ইনফেকশান বলে, এই গুলোর মধ্যে দাদ, হাজা, ফেভাস, ছুলি উল্লেখযোগ্য। আজ চর্মরোগ নিয়ে কলাম লিখেছেন বাংলাদেশর বিশিষ্ট গবেষক ও জাতীয় রোগী কল্যাণ সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা, ডা. এমএম মাজেদ তার কলামে লিখেন- চর্মরোগ এমন একটি সাধারণ ও প্রচলিত ব্যাধি যা মানুষের স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে, মানবদেহের ত্বকের উপরিভাগে ব্রণ, ফুসকুড়ি, অ্যালার্জি, একজিমা বা চুলকানি ইত্যাদি নানান ধরনের চর্মরোগে যেমন-চুলকানি, ফুসকুড়ি, দাদ, একজিমা, এলার্জি, লোমফোড়া, ঘা, আমবাত এইসব রোগ হরহামেশাই বিভিন্ন বয়সী নারী-পুরুষকে আক্রান্ত হতে দেখা যায়।
কখনো কখনো এটি দীর্ঘমেয়াদি আকার ধারণ করে। বছরের সবসময়ই এই রোগ হতে পারে। শীতকালে এই রোগ বেশি দেখা যায়। এ সময় শুষ্ক ত্বক ফেটে যায়, আক্রান্ত স্থান পুরু হয়ে ওঠে, চুলকানির সৃষ্টি হয় এবং ফুসকুড়ি হতে পারে। শরীরের যে কোনো স্থানেই চর্ম রোগ দেখা দিতে পারে। তবে হাত-পা মুখে বা পেটের ত্বকে এ রোগ বেশি দেখা যায়, চুলকাতে বেশ মজা লাগে। তবে চুলকিয়ে ঘা বানিয়ে ফেলার স্বভাব থাকলে এখুনি সাবধান হোন। কারণ ক্ষণিকের স্বস্তি আপনার সারা জীবনের অশান্তি হয়ে দাঁড়াতে পারে। অনেকেই কোনো একটি নির্দিষ্ট স্থান দীর্ঘ সময় ধরে চুলকান। সে ক্ষেত্রে জেনে রাখা ভালো, এই পরিস্থিতিতে একজিমা থেকে শুরু করে কিডনি ফেইলিওর, এমনকি ক্যান্সার পর্যন্ত হতে পারে! কোনো স্থানে খুব জোরে চুলকালে ত্বক নষ্ট হতে পারে। মিসৌরি, সেন্ট লুইসে ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি স্কুল অব মেডিসিনের অধ্যাপক জোউ ফেং চেন জানিয়েছেন, ‘কেউ কেউ আবার এত জোরে চুলকায়, যে চুলকানোর স্থান থেকে রক্তপাত হতে শুরুকরে।’

তবে কেন এমন হয়, সেটা জানার চেষ্টা করছেন জোউ। তার দল ইঁদুরের ওপর পরীক্ষা চালিয়ে কারণ খোঁজার চেষ্টা করছে। নিউরোট্রান্সমিটার সেরোটোনিন ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। খুব বেশি জোরে চুলকানোর ফলে যে ব্যথা হয়, তা-ও প্রশমিত করতে সাহায্য করে সেরোটোনিন। তাই জোউর টিম এখন জানার চেষ্টা করছে, সেরোটোনিন চুলকানোর প্রক্রিয়ায় সামিল কি না। জেনেটিক্যালি ইঞ্জিনিয়ারিং ইঁদুরের শরীরে ওই দলটি পরীক্ষা চালায়, যার শরীরে সেরোটোনিন সিক্রিত হয় না। সাধারণত কোনো ইঁদুরের শরীরে একটি রসায়ন ইনজেক্ট করলে, তার শরীর খুব চুলকায়। কিন্তু ইঞ্জিনিয়ারড ইঁদুরের ওপর এমন কোনো রসায়ন ইনজেক্ট করলে, তাদের মধ্যে চুলকানোর ইচ্ছা জাগ্রত হয় না।

আর একটি পরীক্ষায়, জেনেটিক্যালি স্বাভাবিক ইঁদুরের মস্তিষ্ক থেকে যাতে সেরোটোনিন সিক্রিত না হতে পারে, তার জন্য একটি ট্রিটমেন্ট দেওয়া হয়। সে ক্ষেত্রেও ওই ইঁদুরটি শরীরে আছড়ায় না বা চুলকায় না। ধারণা করা হচ্ছে, মস্তিষ্ক থেকে সেরোটোনিন ক্ষরণের পর তা যখন ইরিটেটেড স্পটে গিয়ে পৌঁছায়, তখনই ওই স্থান চুলকায়। অত্যাধিক চুলকানোর ফলে রক্তপাত হওয়ার আশঙ্কা থাকলেও, মানুষ কেন চুলকায় সে ব্যাপারে ব্যাখ্যা দেন জোউ। বলেন, দইরিটেটিং স্পটে স্ক্র্যাচ করলে, সেই ব্যথা চুলকানি থামায়। কিন্তু সেরোটোনিন ব্যথা নিয়ন্ত্রণ করে, তাই সে সময় চুলকানো কমানোর জন্য ব্যক্তি আরও জোরে স্ক্র্যাচ করে। মস্তিষ্ক ব্যথা নিয়ন্ত্রণ করতে চায়, তাই বেশি করে সেরোটোনিন রিলিজ করে। এখানেই শেষ নয়। কয়েক বছর আগে জোউ এবং তার দল আবিষ্কার করে যে, জিআরপিআর নামে এক মস্তিষ্ক কোষ ইচিং সেনসেইশান আরও শক্তিশালী করে দেয়। সম্প্রতি ইঁদুরের ওপর ওই দলটি যে পরীক্ষা চালায়, তাতে দেখা গেছে- ইচিং স্পটে সেরোটোনিন পৌঁছানোর সময় ধীরে ধীরে নিজের জাল বিস্তার করে। একই সঙ্গে ইচ-মডিউলেটটিং জিআরপিআর নিউরন এবং পেইন-মডিউলেটিং নিউরনগুলিকে সক্রিয় করে তোলে। অর্থাৎ আমরা যখনই কোনো স্থানে স্ক্র্যাচ করি, তখন মস্তিষ্ক যে অতিরিক্ত সেরোটোনিন রিলিজ করে, তা ইচিং সেনসেইশান আরও বাড়িয়ে দেয়। জোউ জানিয়েছেন, দীর্ঘকালীন চুলকানি নিয়ন্ত্রণের জন্য থেরাপি ডেভেলপ করা সম্ভব। সেক্ষেত্রে সেই রিসেপটরটি ব্লক করে দেওয়া হয়। যার মাধ্যমে সেরোটোনিন জিআরপিআর নিউরনগুলোকে সক্রিয় করে তোলে। তবে ফিলাডেলফিয়ায় টেম্পল বিশ্ববিদ্যালয়ের টেম্পল ইচ সেন্টারের ডিরেক্টর গিল ইয়োসিপোভিচ জানিয়েছেন, ‘ক্রনিক ইচের সমস্যাটি হলো, এক্ষেত্রে শুধু একটি রিসেপটর বা একটি পাথওয়ে থাকে না। তাই ইঁদুর মডেল থেকে থেরাপেটিক টার্গেটে যাওয়ার পথ অনেক দীর্ঘ।

> চর্মরোগের কারণ: চর্মরোগ অপরিষ্কার অপরিচ্ছন্নতার একটি অন্যতম প্রধান কারণ। কম-বেশি ভুগতে হয় সবাইকে। আর অনেক সময়ই কী করতে হবে সেটা না জানার কারণে দীর্ঘদিন এই সমস্যায় ভুগতে হয়। মাঝে মাঝে ত্বকে মাকড়সার জালের মতো কৈশিক নালী ফুটে ওঠতে দেখা যায়। বিশেষ করে পা, মুখের ত্বক ইত্যাদি সংবেদনশীল ত্বকে এই সমস্যা দেখা যায়। মূলত ত্বক শুষ্ক হয়ে গেলে স্পাইডার ভেইনস বা অ্যাজমাজনিত চর্মরোগ সমস্যা দেখা দেয়। তাই পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করা উচিত। এছাড়াও সবজি ওফল-মূলজাতীয় খাবার খেলে ত্বকের এ সমস্যা কমানো যায়। ত্বক ফেটে গেলে হোমিও ওষুধ পেট্রোলিয়াম সেবন করবেন। আর যদি ফেটে পানি বের হয় তবে হোমিও ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে পারেন।

যাদের লিভার বা যকৃতে সমস্যা থাকে তাদের ত্বকে এই ধরনের চর্মরোগ বেশি দেখা যায়। তাই ত্বকে যদি অতিরিক্ত স্পাইডার ভেইনসের সমস্যা হয় তাহলে দেরি না করে একজন অভিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত।
আমাদের মুখের ত্বকে অনেক তৈল গ্রন্থি রয়েছে। আর বয়ঃসন্ধির সময়ে ত্বকে তেলের পরিমাণ বেড়ে যায়। আর সেখান থেকে হয় ব্রণ। লোমকূপে তেল বেড়ে গেলে সেখানে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণের ফলে প্রদাহের
সৃষ্টি হয়। ত্বকে ছোট ছোট লালচে গোটা বা ব্রণ হয়। লোমকূপ বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে ত্বকে ব্রণ হতে পারে।
অনেকে ব্রণ হলে সেটি নিয়ে বেশি চাপাচাপি করে থাকেন। ফলে ত্বকে বা চর্মে প্রদাহের সৃষ্টি হয়। তাই ব্রণ হলে হাত না লাগানোই ভালো। তাছাড়া অতিরিক্ত সাবান ব্যবহার থেকেও বিরত থাকতে হবে। দিনে দুইবার ত্বক পরিষ্কারের জন্য হালকা ফেসওয়াশ ব্যবহার করা যেতে পারে।

চর্মরোগ ব্রণের সমস্যা কমাতে সঠিক খাদ্যাভ্যাসও প্রয়োজন। বাদাম ও শস্যজাতীয় খাবার, ফলমূল, মাছ, সবজি ইত্যাদি খাবার ত্বকের জন্য উপকারি। তাছাড়া ত্বক সুস্থ রাখতে প্রচুর পানি পান করাও জরুরি।
চুলকানিও এক ধরনের চর্মরোগ। একজিমার কারণেও ত্বক লাল হয়ে যায় এবং চুলকানি হয়। শরীরের বিভিন্ন সন্ধিস্থলে মূলত একজিমা বেশি হতে পারে। একজিমা শরীরের ভেতরে ও বাইরে, দুই কারণে হতে পারে। পোকার কামড়, হেয়ার ডাই ব্যবহার বা বিভিন্ন ধরনের প্রসাধনী ব্যবহারের কারণে একজিমা হতে পারে। আবার খুশকি বা এ ধরনের একজিমা হতে পারে অভ্যন্তরীণ কারণে।
শিশুদের ক্ষেত্রে জন্মগতভাবেই একজিমা হতে পারে। শিশুদের ক্ষেত্রে ত্বক শুষ্ক হয়ে গেলে জন্মের সময়ই একজিমা দেখা যায়। এতে করে বাচ্চাদের গাল লাল হয়ে যায় এবং ত্বকে ফুসকুড়ি দেখা দেয়। এদের গোসল করানোর সময় সাবান ব্যবহার করা উচিত নয়। আর তাদের ত্বকে আর্দ্রতা বজায় রাখতে প্রচুর পরিমাণে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে। অনেক সময় পোকার কামড় বা একজিমার প্রদাহ হলে জীবাণুনাশক তরল বা ক্রিম ব্যবহার করা হয়। তবে এটি করা উচিত নয়। বরং লাল হয়ে যাওয়া স্থানে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে।

ছত্রাকজনিত চর্মরোগে অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে বসবাসকারীরাই বেশি ভোগেন। তবে ইদানীং অনেককে ভুগতে দেখা যায়। শুকনো চুলকানিতে হোমিও ওষুধ আর্সেনিক আয়োড সেবন করে উপকার পাবেন। আর যদি আক্রান্ত স্থান হতে পানি বের হয় তবে ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে পারেন।

> চর্মরোগ বিভিন্ন রোগের সাথে অন্তর্ভুক্ত
আপনি জানেন, ত্বকের শুষ্কতায় চুলকানি অনুভূত হয়। এ কারণে যাদের ত্বকে চুলকানির প্রবণতা রয়েছে, তাদের শীতের দিনগুলোতে চুলকানি বেড়ে যায়। এছাড়া চুলকানি কিছু চর্মরোগের সাধারণ বৈশিষ্ট্য।
চুলকানি মারাত্মক রোগের লক্ষণ না হলেও হেলাফেলা করবেন না। কারণ এমন কিছু রোগ রয়েছে যেগুলোর অন্যতম উপসর্গ চুলকানি। এ নিয়ে দুই পর্বের প্রতিবেদনের আজ প্রথম পর্ব।

> কিডনি রোগ: শেষ পর্যায়ের কিডনি রোগ অথবা ক্রনিক রেনাল ফেইলিউরে ভুক্তভোগীদের শরীরে তীব্র চুলকানি অনুভূত হতে পারে। প্রকৃতপক্ষে ৪২ শতাংশ ডায়ালাইসিস রোগীর তীব্র মাত্রার চুলকানি হতে পারে। যদিও বিজ্ঞান এখনো আবিষ্কার করতে পারেনি কেন কিডনি রোগ চুলকানি সৃষ্টি করে। কিন্তু চিকিৎসকরা ধারণা করছেন- শরীরে বিষাক্ত পদার্থ জমার কারণে চুলকানি অনুভূত হয়।
কারণ কিডনি রক্তপ্রবাহ থেকে বর্র্জ্য অপসারণে তখন ব্যর্থ হয়।

> লিভারের রোগ: শরীরের সর্বত্র চুলকানি লিভারের রোগের নীরব লক্ষণ হতে পারে। যেখানে শেষ পর্যায়ের কিডনি রোগে অবিরত চুলকানি অনুভূত হয়, সেখানে এ ধরনের চুলকানি লিভার রোগের প্রাথমিক উপসর্গ। কিন্তু চিকিৎসকেরা ধারণা করেন মানসিক চাপ, ইনফেকশন, অ্যালার্জি সৃষ্টিকারী পদার্থ ও ওষুধ দ্বারা এটি উদ্দীপ্ত হতে পারে।

> মেরুদণ্ডের রোগ: পিঠের ওপরের অংশে মধ্যভাগে দীর্ঘস্থায়ী চুলকানি নার্ভ ম্যালফাংশন বা ত্রুটিপূর্ণ স্নায়ু কার্যক্রমের উপসর্গ হতে পারে। এ ধরনের চুলকানিকে নিউরোপ্যাথিক ইচ বলে, অর্থাৎ স্নায়ুতন্ত্রের রোগ সংক্রান্ত চুলকানি। চিকিৎসার পূর্বে চিকিৎসক প্রথম নিশ্চিত হবেন- চুলকানির উৎপত্তি মেরুদণ্ডের রোগ থেকে কিনা। গবেষণায় দেখা গেছে, মেরুদণ্ডের রোগ (বয়স বা ইনজুরি জনিত) স্নায়ু চাপে রাখে। ফলে ত্বকে চুলকানি অনুভব হতে পারে। নিউরোপ্যাথিক চুলকানি শরীরের একপাশ অথবা উভয়পাশে হতে পারে। চুলকিয়ে প্রশমিত করা না গেলে তা বড় সমস্যার লক্ষণ হতে পারে। একজিমার লোকেরা চুলকিয়ে ভালো অনুভূতি পায়, কিন্তু স্নায়ুর সমস্যা সংক্রান্ত চুলকানিতে চুলকিয়েও আরাম পাওয়া যায় না। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এ চুলকানি তীব্র হয়ে থাকে। কেউ কেউ বলেন, এ অনুভূতি পোকামাকড় হাঁটার মতো লক্ষণ প্রকাশ পায়,

> চর্মরোগের কিছু পরামর্শ
পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকা, নিয়মিত গোসল করা, আক্রান্ত স্থানকে ধুলাবালি ও জীবাণুমুক্ত রাখা, গরম ও ধুলোবালি এড়িয়ে, চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চললে এ রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। আবার কিছু চর্মরোগের কারণ খাবারের সঙ্গে সম্পর্কিত। সুতরাং চর্মরোগে আক্রান্ত হলে রোগীদের চিংড়ি, কাঁকড়া, খাশির মাংস, মুরগি, হাঁস এবং মরিচ, আদা, রসুন, রসুনের পাতা ও মদ সহ উত্তেজক খাবার অথবা তেলে ভাজা ও হজম করা কঠিন এমন খাবার নিয়ন্ত্রণ করা দরকার। তাছাড়া বেশ কয়েকটি চর্মরোগ মানসিকতার সঙ্গে সম্পর্কিত। তাই চর্মরোগীদের সবসময় আনন্দদায়ক মানসিকতা বজায় রাখা উচিত।

হোমিও সমাধান: রোগ নয় রোগীকে চিকিৎসা করা হয় এজন্য একজন অভিজ্ঞ চিকিৎসককে ডা. হ্যানেম্যানের নির্দেশিত হোমিওপ্যাথিক নিয়মনীতি অনুসারে চর্মরোগ সহ যে কোনো জটিল-কঠিন রোগের চিকিৎসা ব্যক্তি স্বাতন্ত্র্য ভিত্তিক লক্ষণ সমষ্টি নির্ভর ও ধাতুগতভাবে চিকিৎসা দিলে আল্লাহ্র রহমতে চিকিৎসা দেয়া সম্ভব। হোমিওপ্যাথি হলো সবচেয়ে জনপ্রিয় চিকিৎসা পদ্ধতি। সামগ্রিক উপসর্গের ভিত্তিতে ওষুধ নির্বাচনের মাধ্যমে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা করা হয়। এটিই একমাত্র চিকিৎসা পদ্ধতি যার মাধ্যমে রোগীর কষ্টের সমস্ত চিহ্ন এবং উপসর্গগুলো দূর করে সম্পূর্ণ স্বাস্থ্যের অবস্থা পুনরুদ্ধার করা যায়। বিবিসি নিউজের ২০১৬ তথ্য মতে, দেশের প্রায় ৪০ শতাংশ রোগী হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা গ্রহণ করে আরোগ্য লাভ করে, আবার ইদানীং অনেক নামধারি হোমিও চিকিৎসক বের হইছে, তারা চর্মরোগীদেরকে পেটেন্ট টনিক, মলম, ক্রিম, দিয়ে চিকিৎসা দিয়ে থাকে তাদেরকে ডা. হ্যানেমান শঙ্কর জাতের হোমিওপ্যাথ বলে থাকেন, রোগীদেরকে মনে রাখতে হবে চর্মরোগ কোনো সাধারণ রোগ না, তাই সঠিক চিকিৎসা পাইতে হইলে অভিজ্ঞ চিকিৎকের পরামর্শ নিন।