‘ঋণ শোধের জন্য সাগরে যাবো’

দেশের মৎস্য সম্পদের সুরক্ষা ও মাছের বংশবিস্তারে মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে সাগরে ফিরেছেন জেলেরা।

নিষেধাজ্ঞা উঠে গেলে যাতে দ্রুত মাছ ধরতে সাগরে যেতে পারেন এ জন্য এক সপ্তাহ আগেই জেলেরা জাল-নৌকা ঠিকঠাক করে প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন।

শুক্রবার (২৮ অক্টোবর) সকালে ফিশারীঘাট এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, জেলেরা কেউ কিনারে মেরামত করা জাল টেনে ট্রলারে তুলছেন।

কেউবা ট্রলারগুলোর খন্দলে বরফ আর প্রয়োজনীয় বাজার-সদাই করে প্রস্তুতি নিচ্ছেন সাগরযাত্রার। তেল, ড্রাম, রশি ও সব ধরনের সামগ্রী বোঝাই করার পর পরখ করে নেওয়া হচ্ছে ফিশিং ট্রলার।

জেলেরা জানান, নিষেধাজ্ঞার ফলে তারা আর্থিক অভাব-অনটনের মধ্য দিয়ে পার করেছেন। অনেক জেলেই ঋণগ্রস্তও হয়ে পড়েছেন। সাগরে মাছ শিকারে গিয়ে ঋণমুক্ত হওয়ার চেষ্টা করতে হবে।

আরেক জেলে মনিরুল আলম বলেন, ‘ট্রলারে এসে মন ভালো হয়ে গেছে। ঋণ শোধের জন্য সাগরে যাবো। মাছ ধরবো আর অবতরণ কেন্দ্রে এসে বিক্রি করে ঋণ শোধ করবো’।

এদিকে নিষেধাজ্ঞা চলাকালে জেলেরা খাদ্য সহায়তা হিসেবে চাল পেলেও তা ছিল অপ্রতুল।

উত্তর চট্টলা উপকূলীয় জলদাস সমবায় কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক লিটন জলদাস বলেন, ‘উত্তর চট্টগ্রামে ৫ হাজার ৬০০ নিবন্ধিত জেলে রয়েছে। অনেক জেলে চাল পাননি। জেলেরা অভাবে পড়ে চড়া সুদে ঋণ নিচ্ছে। ’

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ফারহানা লাভলী বলেন, ‘চট্টগ্রামে নিবন্ধিত জেলের সংখ্যা ২৬ হাজার ৯৯২ জন। আমরা স্থানীয় ওয়ার্ড, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের দেওয়া তালিকা অনুযায়ী চাল দিয়েছি।

ইলিশ উৎপাদনে বাংলাদেশ বিশ্বে প্রথম। বাংলাদেশের এ জাতীয় মাছ ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্য হিসেবেও স্বীকৃতি পেয়েছে।

ওয়ার্ল্ড ফিশের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, বিশ্বের মোট ইলিশের ৮৫ শতাংশই উৎপাদন হয় এ দেশে। আর মৎস্য অধিদপ্তর বলছে, ২০২০-২১ অর্থবছরে দেশের বিভিন্ন নদী ও সাগর থেকে ৫ লাখ ৬৫ হাজার টন ইলিশ আহরণ করা হয়েছে।

এর আগের অর্থবছরে আহরণ করা হয়েছিল ৫ লাখ ৫০ হাজার টন। উৎপাদনের হিসাবে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলা রয়েছে যথাক্রমে চতুর্থ ও পঞ্চম অবস্থানে।