ইউক্রেনকে রক্ষায় আধুনিক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার প্রতিশ্রুতি ন্যাটো দেশগুলোর

রাশিয়ার মিসাইল আক্রমণ থেকে ইউক্রেনকে বাঁচাতে আধুনিক আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ন্যাটো দেশগুলো। যুক্তরাষ্ট্র ও জার্মানির পর এবার নতুন করে ইউক্রেনকে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার আশ্বাস দিয়েছে কানাডা, বৃটেন, ফ্রান্স এবং নেদারল্যান্ডস। জার্মানির সবথেকে আধুনিকতম একটি সিস্টেম এরইমধ্যে ইউক্রেনে পৌঁছে গেছে। এ খবর দিয়েছে বিবিসি।

খবরে বলা হয়, গত ১০ই অক্টোবর রাশিয়ার ওই আক্রমণের পর ব্রাসেলসের ন্যাটো হেডকোয়ার্টারে বৈঠকে বসে ৫০টি দেশ। তারা এই সম্মেলনকে ‘ঐতিহাসিক’ বলে আখ্যায়িত করে। ইউক্রেন অভিযোগ করেছে, রাশিয়া সোমবার ও মঙ্গলবার শতাধিক মিসাইল হামলা চালিয়েছে। এছাড়া ছিল কয়েক ডজন ড্রোন হামলাও। এগুলো বিদ্যুৎকেন্দ্র এবং বেসামরিক স্থাপনায় আঘাত হেনেছে। প্রথম দিনের হামলায় কমপক্ষে ১৯ জন নিহত হয়েছে।

হামলার কারণে ইউক্রেনের এক ডজন শহর অন্ধকারে চলে যায়। পানি সরবরাহ পদ্ধতি অকেজো হয়ে যায় আরও কয়েকটি শহরে।

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন জানিয়েছেন, ক্রাইমিয়া সেতুতে ট্রাক বোমা হামলার জবাবেই এই মিসাইল আক্রমণ করা হয়েছে। ২০১৪ সালে ক্রাইমিয়া রাশিয়ার সঙ্গে অন্তর্ভুক্ত হলে এই সেতু তৈরির মাধ্যমে অঞ্চলটিকে রাশিয়ার মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে যুক্ত করা হয়। রাশিয়া বলেছে, তারা প্রয়োজনে এধরণের হামলা অব্যাহত রাখবে।
এমন অবস্থায় বৃটেন জানিয়েছে, তারা ইউক্রেনকে আকাশ প্রতিরক্ষা মিসাইল দেবে। এছাড়া যুদ্ধক্ষেত্র থেকে তথ্য পেতে আরও কয়েক শত ড্রোন দেবে। এছাড়া নতুন আরও ১৮টি হাওয়াইটজার দেয়ার ঘোষণাও দিয়েছে লন্ডন। এর আগে দেশটি ৬৪টি হাওয়াইটজার দিয়েছিল ইউক্রেনকে। নতুন সাহায্য সম্পর্কে বৃটিশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী বেন ওয়ালেস বলেন, রাশিয়া যেভাবে ইউক্রেনের বেসামরিক টার্গেটে হামলা চালাচ্ছে তাতে নতুন প্রতিরক্ষা সহযোগিতার বিকল্প নেই। আমাদের দেয়া নতুন অস্ত্রগুলো ইউক্রেনকে তাদের আকাশ প্রতিরক্ষায় সাহায্য করবে এবং তাদের সামগ্রিক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাও উন্নত করবে।

ব্রাসেলসের বৈঠকের পর বুধবার মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন বলেন, ইউক্রেনের জন্য কার্যকরি এমন সবকিছু আমরা করব। ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রন জানান, প্যারিসও কিয়েভকে আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দেবে। ইউক্রেনীয়দের ড্রোন আক্রমণ থেকে বাঁচানোই হবে এই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার কাজ। তবে তিনি জানাননি ঠিক কোন প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দেয়া দেয়া হবে। নেদারল্যান্ডসও জানিয়েছে তারা ১৪ মিলিয়ন ডলার মূল্যের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দেবে ইউক্রেনকে। ডাচ প্রতিরক্ষামন্ত্রী কাইসা ওলোঙ্গ্রেন বলেন, ইউক্রেনকে সাহায্য করার মাধ্যমেই রাশিয়ার আক্রমণ প্রতিহত করা সম্ভব।

কানাডা জানিয়েছে, তারা ৩৪ মিলিয়ন ডলারের সামরিক সহায়তা দেবে ইউক্রেনকে। এরমধ্যে আছে স্যাটেলাইট কমিউনিকেশন সিস্টেম এবং ড্রোন ক্যামেরা। বৃটেনও দ্রুত তাদের সাহায্য ইউক্রেনে পাঠিয়ে দেবে বলে আশা করা হচ্ছে। ইউক্রেন বুধবার জানিয়েছে, জার্মানি থেকে এরইমধ্যে আধুনিক আইআরআইএস-টি এসএলএম পেয়েছে। এই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ইউক্রেনকে ‘সন্ত্রাসের’ হাত থেকে রক্ষা করবে।