সাংস্কৃতিক মেলবন্ধনে বিশ্ববঙ্গ সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্মেলন কোলকানা ও স্বদেশের মৈত্রী সন্ধ্যা

বাংলাদেশ এবং ভারতের পশ্চিম বাংলার শিল্পী, বুদ্ধিজীবী ও সংস্কৃতি প্রেমীদের মেলবন্ধনে গত রবিবার চট্টগ্রাম শিল্পকলা একাডেমীর আর্ট গ্যালারীতে স্বদেশ আবৃত্তি সংগঠনের আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয় বাংলাদেশ- ভারত মৈত্রী সন্ধ্যা। স্বদেশ আবৃত্তি সংগঠনের সভাপতি মো. সেলিম ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মৈত্রী সন্ধ্যায় প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন এর নির্বাহী পরিচালক (যুগ্ন সচিব) ড. পীযুষ দত্ত। অনুষ্ঠানের কথামালা পর্বে প্রধান আলোচক ছিলেন কলকাতার বিশ্ববঙ্গ সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্মেলনের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ড. রাধাকান্ত সরকার। বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রথম আলোর বার্তা সম্পাদক, প্রখ্যাত কবি ও ছড়াকার ওমর কায়সার, সিনিয়র সাংবাদিক নাট্যজন প্রদীপ দেওয়ানজী, বীরমুক্তিযোদ্ধা মো. মফিজুর রহমান, সাংবাদিক দেব দুলাল ভৌমিক। এছাড়াও সম্মানিত অতিথি ছিলেন ইনার ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল এর চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইকবাল বাহার।
সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় আবৃত্তি করেন মেরিলিন এ্যানি, নুরসান জাহান পুষ্প, ফাইরোজ হোসেন সারা, জেবা ফারিয়া, ডিয়নদ্রি চাকমা। আমন্ত্রিত অতিথিদের মধ্যে আবৃত্তি করেন কবি ওমর কায়সার, কলকাতার কবি শীতল মহালদার, রাজিব আদক, শিব সংকর বকসী, শ্বাশতী পাল, কবরী মূখার্জী। এছাড়াও আবৃত্তি করেন কলকাতার ক্যামেলিয়া চক্রবর্তী নন্দী, অনিল কুমার বসু, শিখা বসু, শিঞ্জনী বোসু, শিব সঙ্কর বকসী, গোপা মহালদার, সুজাতা বকসী, বলাকা রাং, দেবীকা বন্ধোপাধ্যায়, স্বাগত সূর, রেখা সুর, দুলাল সুর, সুমাল্য মৈত্র ও সীমা দত্ত প্রমুখ।
একক সঙ্গীত পরিবেশন করেন কোলকাতার বিশ্ববঙ্গ সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্মেলন এর সাংস্কৃতিক সম্পাদক, সাংবাদিক ও সঙ্গীতজ্ঞ ড. শিবানী দাশ, রীনা দে, কৃষ্ণা বিশ্বাস, টুন্না মজুমদার, তনুশ্রী দাস, তাপশী ধর,
একক ও দলীয় নৃত্য পরিবেশন করেন কোলকাতার বিশিষ্ট নৃত্যশিল্পী ও প্রশিক্ষক কবিতা কর, অর্চিশা পরাশর, সুছন্দা টুডু ও রূপসা ভট্টাচার্য। কথামালা পর্বে বক্তারা বলেন, ভার্চুয়াল জগতের আগ্রাসনে আমরা বাংলা ও বাঙালীদের সাংষ্কৃতিক ঐতিহ্য, শিষ্টাচার, গুরুভক্তি এসব কিছু হারিয়ে ফেলতে শুরু করেছি। বই আর পরীক্ষায় প্রথম হওয়ার অসুস্থ প্রতিযোগিতায় শিশুরা শিরদাঁড়া দূর্বল করে ফেলছে। কোমলমতি শিশুদের এখন আর আদর্শলিপি, ধারাপাত পড়ানো হয় না। অথচ এসব পাঠ হতেই একসময়ে আমাদের সন্তানেরা আদব কায়দা, পিতা-মাতার প্রতি সম্মান বা শিক্ষাগুরুর যথাযথ সম্মান প্রদর্শন শিখতে পারতো। সাংস্কৃতিক আগ্রাসন ও পশ্চিমা বিশ্বের অন্ধ অনুকরণে এখন আমরা সেটি হারিয়ে ফেলেছি। তবে আশার কথা হলো, আমরা নিজেরাই এখন উপলব্ধি করতে পেরেছি আমাদের বর্তমান অস্তিত্ব সম্পর্কে। এপার ও অপার বাংলার সাংস্কৃতিক মেলবন্ধনের মাধ্যমে আমাদের সভ্যতা ও সংস্কৃতির বিনিময় সম্ভব। তাই এধরনের আয়োজনের গুরুত্ব অপরিসীম বলে উল্লেখ করেন বক্তারা।