২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত ৩৯৫ রোগী হাসপাতালে ভর্তি, আরও একজনের মৃত্যু

দেশে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ৩৯৫ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। আগের দিন এই সংখ্যা ছিল ৩৮৯ জন। নতুন ডেঙ্গু রোগী নিয়ে সারা দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি থাকা রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৩১১ জনে। গত ১৫ দিনে ৪ হাজারের উপরে রোগী ভর্তি হয়েছেন। যা এবছরে সর্বোচ্চ। ২৪ ঘণ্টায় আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে এবছর ডেঙ্গু জ্বরে মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪০ জনে। এর মধ্যে কক্সবাজার জেলায় রয়েছেন ১৭ জন। আজ সারা দেশের পরিস্থিতি নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের নিয়মিত ডেঙ্গু বিষয়ক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ৩৯৫ জনের মধ্যে ঢাকার বাসিন্দা ২৯৪ জন এবং ঢাকার বাইরে ১০১ জন।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, নতুন ৩৯৫ জনসহ বর্তমানে দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে সর্বমোট ভর্তি থাকা ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৩১১ জনে। ঢাকার বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি আছেন ৯৭১ জন এবং ঢাকার বাইরে ৩৪০ জন। এতে আরও বলা হয়েছে, চলতি বছরের ১লা জানুয়ারি থেকে ১৫ই সেপ্টেম্বর পর্যন্ত হাসপাতালে সর্বমোট রোগী ভর্তি ছিলেন ১০ হাজার ২৩২ জন। তাদের মধ্যে সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়েছিলেন ৮ হাজার ৮৮১ জন। এই বছর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে ৪০ জনের মৃত্যু হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য মতে, চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ছিল ১২৩ জন, ফেব্রুয়ারিতে ২০ জন, মার্চে ২০ জন, এপ্রিলে ২৩ জন, মে মাসে ১৬৩ জন, জুনে ৭৩৭ জন, জুলাইতে ১ হাজার ৫৭১ জন এবং আগস্ট মাসে তা বেড়ে ৩ হাজার ৫২১ জনে দাঁড়িয়েছে। সেপ্টেম্বরের এই ১৫ দিনে আক্রান্ত হয়ে ৪ হাজার ৫১ জন রোগী বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন এবং মারা গেছেন ১৯ জন। ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন জুনে ১ জন, জুলাইতে ৯ জন এবং আগস্টে ১১ জন।

ডেঙ্গুর জীবাণু মানুষের শরীরে আসে এডিস মশার মাধ্যমে। বর্ষায় বাসাবাড়িতে পানি জমে এই মশার বংশবিস্তার বেশি ঘটে। ২০০০ সালে বাংলাদেশে প্রথম ডেঙ্গুর বড় ধরনের প্রকোপ দেখা দেয়। মশা নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে পরের বছরগুলোতে এর প্রকোপ খুব বেশি না হলেও ২০১৯ সালে তা ভয়াবহ আকারে ছড়িয়ে পড়ে। ওই বছর দেশে ডেঙ্গুতে দেড় শতাধিক মানুষের মৃত্যু এবং লক্ষাধিক মানুষ এতে আক্রান্ত হয়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার প্রাক-বর্ষা মৌসুমের মশা জরিপে গত বছরের তুলনায় এ বছর রাজধানীতে মশা বেশি দেখা গেছে। সেই পরিপ্রেক্ষিতে জনস্বাস্থ্যবিদ ও কীটতত্ত্ববিদদের একটি আশঙ্কা ছিল যে চলতি বছর আবার ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়তে পারে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিসংখ্যান বলছে, আক্রান্ত ব্যক্তিদের বেশির ভাগ রাজধানী ঢাকার।