অনেক স্বনামধন্যের অর্থ পাচারের তথ্য আছে

অনেক স্বনামধন্যের অর্থ পাচারের তথ্য রয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বুধবার আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন। ভারত সফর নিয়ে করা সংবাদ সম্মেলনে দেশ থেকে অর্থপাচার নিয়ে অপর এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অর্থপাচারকারী এমন অনেকের তথ্য আছে সেটা আপনারা (সাংবাদিক) লিখবেন কিনা সন্দেহ। আমি সোজা কথা বলি, অনেক স্বনামধন্যের তথ্য আমার কাছে আছে। দুর্নীতি দমন কমিশন আর বাংলাদেশ ব্যাংকের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। সামনে তাদের নাম আসবে, তবে আপনারা ছাপাবেন কিনা আমি সেটা দেখবো। সিআইডি’র মাধ্যমে আমরাই তো অর্থপাচারের ঘটনা বের করেছি, সাংবাদিকরা তো উদ্ঘাটন করতে পারেননি। তিনি বলেন, দ্বিতীয় কথা হচ্ছে অর্থপাচারকারীর তথ্য নেয়া হচ্ছে। সুইস ব্যাংকে কিন্তু আমরা বহু আগে ডিমান্ড পাঠিয়েছিলাম। আমরা তালিকা চেয়েছিলাম।

কিন্তু তালিকা আসেই নাই। সবাই হাওয়ায় কথা বলে যায় কিন্তু কেউ সঠিক তথ্য দিয়ে বলে না। মানিলন্ডারিং বন্ধে যথেষ্ট উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। আর ডলার সংকট বাংলাদেশের একার না, বিশ্বব্যাপী। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর আমেরিকা স্যাংকশন দিলো, তাতে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে গেল। প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারপরও আমি বলবো, আমরা ১৯৯৬ সালের সরকার গঠনের পর রিজার্ভ কত ছিল? করোনার সময় কোনো খরচ ছিল না, তখন আমাদের রিজার্ভ বেড়েছে। এরপর যখন আমদানি শুরু হয়েছে তখন তো কিছু কমেছে। আরেকটা বিষয় হচ্ছে বাংলাদেশ যেখান থেকে ঋণ নেয় সবসময় ঠিক সময়ে শোধ করে। আমরা কোনোদিন খেলাপি হইনি। সেটা করতে যেয়েও রিজার্ভে একটু টান পড়ে। তিনি বলেন, ডলার নিয়ে কিছু একটা খেলা শুরু হয়েছিল, কিন্তু ভালোভাবে নজরদারি করা হয়েছে বলেই আজকে একটা স্থিতিশীল পরিস্থিতি আছে। কিন্তু সংকট তো আন্তর্জাতিক বিষয় থেকে এসেছে। এখন যেই সংকট দেখছেন হয়তো সামনের বছর আরও বেশি সংকট দেখা দিতে পারে। যুদ্ধ যদি বন্ধ না হয়, নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা না হয় আমার তো শঙ্কা সারা বিশ্বে দুর্ভিক্ষ দেখা দিবে, চরম অর্থনৈতিক অবস্থা সৃষ্টি হতে পারে। তাই সবাইকে বলবো সাশ্রয়ী হতে, সঞ্চয়ী হতে। আর এক ইঞ্চি জায়গাও যেন অনাবাদি না থাকে। আমাদের খাবার যেন আমরা নিজেই উৎপাদন করতে পারি।
আমরা তাদের কখনোই ছেড়ে দেই না
অপর এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সবাই যার যার ধর্ম যেন শান্তিপূর্ণভাবে পালন করতে পারে, সেই পরিবেশ আমরা বাংলাদেশে ভালোভাবে ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছি। কিছু কিছু ঘটনা ঘটে বা ঘটানো হয়, তারপরও যারা অপরাধী আমরা তাদের বিরুদ্ধে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেই। আমরা তাদের কখনোই ছেড়ে দেই না।
পাইপ লাইনে জ্বালানি আসবে বাংলাদেশে:
সংবাদ সম্মেলনে জ্বালানি সংকটের সমস্যার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারতের শিলিগুড়ি থেকে বাংলাদেশের দিনাজপুরের পার্বতীপুর পর্যন্ত ভারত-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ পাইপলাইনের মাধ্যমে ডিজেল আসবে। ফলে তেল পরিবহনের খরচ অনেকটা কমে যাবে। এ প্রকল্পের আওতায় ১৩১ দশমিক ৫৭ কিলোমিটার পাইপলাইন রয়েছে। এর মধ্যে বাংলাদেশ অংশে রয়েছে ১২৬ দশমিক ৫৭ এবং ভারত অংশে ৫ কিলোমিটার পাইপলাইন ভারত সরকারের অর্থায়নে নির্মাণ কাজ চলছে। তিনি বলেন, নুমালিগড় থেকে পাইপলাইনের মাধ্যমে ডিজেল নিয়ে আসছি। সেই লাইনটা কিন্তু ভারত নির্মাণ করে দিচ্ছে। দিনাজপুরের পার্বতীপুর ডিপোতে এই তেলটা থাকবে। উত্তরবঙ্গে আর সুদূর চট্টগ্রাম থেকে বাঘাবাড়ী হয়ে তেল যেতে হবে না। রিফাইন করা তেল ওখান থেকেই আসবে। অর্থনৈতিক কর্মচাঞ্চল্য আরও বাড়বে। উত্তর বঙ্গের মঙ্গা আমরা দূর করেছি। পাশাপাশি ভারত থেকে এলএনজি আমদানির ব্যাপারেও আলোচনা হয়েছে।