শিমুলিয়া-বাংলাবাজার রুটে ফেরি চলাচল বন্ধ, ফেরত যাচ্ছে যানবাহন

বাংলাবাজার-শিমুলিয়া নৌরুটে স্রোতের তীব্রতার কারণে বুধবার (১৮ আগস্ট) দুপুর থেকে বন্ধ রয়েছে ফেরি চলাচল। এদিকে ঘাটে আটকে থাকা পন্যবাহী ট্রাক বিকল্প রুটে ফিরে গেছে। এছাড়াও বাংলাবাজার ঘাটে আসা অ্যাম্বুলেন্স, পিকআপ, ব্যক্তিগত গাড়ি ও মোটরসাইকেল যাত্রীরা ফিরে যাচ্ছে অন্যত্র। আজ সকালে বাংলাবাজার ঘাট ঘুরে দেখা গেছে এই চিত্র।

বিআইডব্লিউটিসি’র বাংলাবাজার ঘাট সূত্রে জানা গেছে, বাংলাবাজার ঘাট থেকে শিমুলিয়া যাওয়ার সময় পদ্মা সেতু অতিক্রম করতে গিয়ে প্রবল স্রোতের মুখে পরে ফেরিগুলো। দুর্ঘটনা এড়াতে অনির্দিষ্টকাল পর্যন্ত বন্ধ রাখা হয়েছে ফেরিগুলো। ঘাটের টার্মিনালে আটকে থাকা পন্যবাহী ট্রাক চালকদের পাটুরিয়া রুট ব্যবহারের নির্দেশ দেয়া হলে বুধবার রাতেই ট্রাকগুলো বাংলাবাজার ঘাট ত্যাগ করে। এছাড়া ঘাটে আসা অন্যান্য যানবাহনের চালকদের বিকল্প নৌরুট ব্যবহারের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।

এদিকে ফেরি বন্ধের বিষয়টি না জেনেই শুক্রবার সকালে বাংলাবাজার ঘাটে আসেন বিভিন্ন জেলার মোটরসাইকেল আরোহীরা।

ঘাটে এসে ফেরি বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েন তারা।
খুলনা থেকে আসা মো. তানভীর নামের এক মোটরসাইকেল আরোহী বলেন,’স্রোতের কারণে রাতে ফেরি বন্ধ থাকে এমনটা জানা ছিল। কিন্তু বুধবার দুপুর থেকে স্থায়ীভাবে বন্ধ রয়েছে বিষয়টা জানা ছিল না। ঘাটে এসে জেনেছি। এখন কি করবো বুঝতেছি না?’

তিনি আরো বলেন,’খুবই জরুরী কাজ ঢাকায়। মোটরসাইকেল কোথাও রেখে লঞ্চে পার হবো সেই সুযোগও নাই।’

মাদারীপুর থেকে আসা মোটরসাইকেল আরোহী মো.ইউসুফ বলেন, ‘সকালে ঘাটে এসে দেখি ফেরি বন্ধ। কবে চলবে তা নিশ্চিত না। এখন অন্য রুট দিয়ে যাওয়ার চিন্তা করছি।’

এদিকে বরিশাল থেকে আসা রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্সের চালক সোহেল বলেন, ফেরি বন্ধ জানা ছিল না। এখন রোগী নিয়ে আবার পাটুরিয়া ঘাটে যেতে হবে। অনেকেই ঘাটে এসেছিল। এখন ফিরে যাচ্ছে।’

বাংলাবাজার ঘাট সূত্রে জানা গেছে, ফেরি চলাচল বন্ধ থাকায় এই নৌরুট দিয়ে আসা যাত্রীদের দুর্ভোগ বেড়েছে। ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে অনেকেই ফেরিতে পার হতো। তারা বিপাকে পড়েছে। পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া রুটের দূরত্ব বেশি হওয়ায় দুর্ভোগে এই রুট ব্যবহারকারীরা।
এদিকে লঞ্চে যাত্রীদের চাপ কিছুটা বেড়েছে বলে লঞ্চঘাট সূত্রে জানা গেছে। তবে স্বাভাবিক সময়ের মতোই যাত্রীরা যাচ্ছে লঞ্চে। ফেরি বন্ধ থাকায় অতিরিক্ত কোন চাপ নেই লঞ্চে।

সরজিমনে সকালে বাংলাবাজার ফেরিঘাট ঘুরে জানা দেখা গেছে, প্রতিটি ঘাটেই নোঙর করে রাখা আছে ফেরিগুলো। পদ্মায় পানি বৃদ্ধি পেয়ে ঘাটের পন্টুনের পথ তলিয়ে গেছে। ফেরিতে উঠার পথে ইট দিয়ে স্বাভাবিক করা হচ্ছে। এছাড়া ঘাটের টার্মিনালে ফাঁকা রয়েছে। বুধবার রাত থেকেই পন্যবাহী ট্রাকগুলো বিকল্প রুট দিয়ে পার হবার জন্য বাংলাবাজার থেকে চলে যাচ্ছে। বৃহস্পতিবার সকালে ঘাটে আসা অ্যাম্বুলেন্স, ছোট ট্রাক, প্রাইভেটকার, মোটরসাইকেল ফিরে যাচ্ছে। ফেরি বন্ধ থাকায় বাংলাবাজার ফেরিঘাট এলাকা সুনসান অবস্থা বিরাজ করছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ফেরির এক চালক জানান, ‘বাংলাবাজার থেকে ছেড়ে যাওয়া ফেরি মূল পদ্মায় প্রবেশ করতে গেলে ডুবোচরের কারণে ঘূর্ণিস্রোতের কবলে পড়ে। এতে করে পদ্মাসেতুর পিলারে যেকোন সময় ধাক্কা লাগতে পারে। স্রোতের গতিপ্রকৃতি মুহূর্তেই পরিবর্তন হওয়ায় পদ্মাসেতু অতিক্রম করতে গিয়ে ঝুঁকির মধ্যে পরতে হয়। স্রোত না কমলে ফেরি বন্ধ রাখাই উত্তম।’

বিআইডব্লিউটিসি’র বাংলাবাজার ফেরিঘাটের ব্যবস্থাপক মো. সালাহউদ্দিন আহমেদ জানান,’বুধবার দুপুর থেকে বন্ধ রয়েছে ফেরি। আমরা ঘাটে আসা সকল যানবাহনকে বিকল্প নৌরুট ব্যবহারের জন্য বলে দিচ্ছি।’